ছোট্ট সোনামনিদের সঙ্গে খেলায় মাতলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিত : ১৮:২৮, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১৯:২১, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯
শিশুদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মমতার প্রকাশ বিভিন্ন সময় দেখা গেছে। এবার আবারও দেখা গেলো মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রীর শিশুদের প্রতি ভালোবাসার বহি:প্রকাশ।
২০২০ শিক্ষাবর্ষের জন্য বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন শেষে শিশুদের নিয়ে খেলায় মেতে ওঠেন তিনি।
মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে বই উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। এরপর তিনি গণভবনের মাঠে সোনামনিদের সঙ্গে দোল খেলা সহ বিভিন্ন খেলায় মেতে ওঠেন।
তিনি শিশুদের সঙ্গে দোলনা খেলেন। ছোট্ট বাচ্চাদের দোলনায় উঠিয়ে নিজ হাতে দোলনায় ধাক্কা দেন। শিশুরাও তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন। প্রতিবন্ধী শিশুরাও তার সঙ্গে খেলাধুলায় অংশ নেন।
এরআগে বই বিতরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে চাই। আর সেটাকে আমরা পর্যায়ক্রমে করে দিচ্ছি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে পুরনো বই হাতে দেওয়া হত। বই কেনার ক্ষমতা ছিল না বাবা-মায়ের। এখন আর সেটা না। এখন সবার জন্য নতুন বই। আসলে নতুন বই হাতে পেলে তো ভালোও লাগে। নতুন বইয়ের ঘ্রাণটা শুনলে ভালো লাগে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশটাকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। কাজেই স্বাধীন দেশটাকে আমরা উন্নত করে গড়ে তুলতে চাই। এজন্য সবথেকে বেশি দরকার হচ্ছে, যারা ভবিষ্যৎ নাগরিক, তারা যেন শিক্ষায়-দীক্ষায় সব ধরণের প্রশিক্ষণে উন্নত হয়। আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিকরা যেন আগামী দিনে সুন্দর একটা সমাজ পায়।
সরকার প্রধান বলেন, একটা আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। সে আদর্শটা হচ্ছে, এমন একটি সমাজ গড়ে তোলা যে সমাজে কোনও বৈষম্য থাকবে না; দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ হবে; উন্নত সমাজ হবে, সমৃদ্ধশালী হবে এবং বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্ব মর্যাদা পাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষকদের বেতন বাড়িয়ে দিয়েছি। এর পাশাপাশি স্বাধীনতার পর একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ যখন জাতির পিতা গড়ে তোলেন, তখনই তিনি বিনামূল্য বই দেওয়া শুরু করেন। কাজেই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আবার আমরা বিনামূল্য বই বিতরণ শুরু করেছি।
তিনি বলেন, বৃত্তি প্রদানে আমরা গুরুত্ব দিই। আমরা একেবারে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি দিচ্ছি। কারণ অনেক সময় অনেক বাবা-মা ছেলে-মেয়েদের পড়াতে পারে না। তাই তাদের ওপর যেন চাপ না পড়ে সেজন্য বিনা পয়সায় বই এবং বৃত্তি দিচ্ছি। সেই সঙ্গে সঙ্গে আমরা স্কুলে টিফিনের ব্যবস্থা, সেটা প্রত্যেকটা স্কুল-কলেজ যেন নিজে করতে পারে সেভাবে আমরা উৎসাহ দিচ্ছি এবং সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ সাহায্য আমরা করে যাচ্ছি।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, যেহেতু জাতির পিতা মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করে দিয়েছিলেন কাজেই আমরা সেটা অব্যাহত রেখেছি। আমাদের দেশে এখন ছেলে-মেয়ে সবাই স্কুলে যায়; সবাই উৎসাহিত। আর আমরা আরেকটা ব্যবস্থা নিচ্ছি। সেটা হলো, আমরা খেলাধুলার দিকে নজর দিচ্ছি। এজন্য আমরা প্রত্যেকটা উপজেলায় একটা করে মিনি স্টেডিয়াম করে দিচ্ছি। যাতে আমাদের প্রত্যেক স্কুলের ছেলে-মেয়েরা সেখানে খেলাধুলা করতে পারে।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা আরও বলেন, আজকে একটা বছর শেষ। আগামীকাল ইংরেজি নববর্ষ। সবাইকে আমি আগামীকালের জন্য ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
এর আগে একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তর করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
এরপর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
একই সঙ্গে এ সময় নিজ নিজ বোর্ডের ফলাফল প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন দেশের বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানেরা।
এসি
আরও পড়ুন