ভারত থেকে নভেম্বর-ডিসেম্বরে ৪৪৫ জন এসেছে: বিজিবি প্রধান
প্রকাশিত : ১৭:১৩, ২ জানুয়ারি ২০২০
গত বছর ভারত থেকে অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসা হাজার খানেক নাগরিককে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধন আইন বিল পাশ হওয়ার পর শুধু মাত্র নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে এসেছেন ৪৪৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
আজ বৃহস্পতিবার বিজিবি’র সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাহিনীটির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম।
ফেরত আসা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক উল্লেখ করে সাফিনুল ইসলাম বলেন, ‘যারা বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিলেন তারাই ফিরে আসছেন। তবে এদের সঙ্গে ভারতের নাগরিকপঞ্জি বা নাগরিকত্ব আইনের কোনো সম্পর্ক নেই।’
গত ২৫-৩০ ডিসেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের বিজিবি ও ভারতের বিএসএফ’র (বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স) মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের বিষয় নিয়েই এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে বক্তব্য রাখেন মেজর জেনারেল সাফিনুল।
বিজিবি প্রধান বলেন, ‘কোনো অনুপ্রবেশকারীকে ঢুকতে দেওয়া হয়না, আমরা দিই না। গত এক বছরে তিনজন পাচারকারীসহ প্রায় এক হাজার জনকে আটক করা হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে খোঁজ-খবর নিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিশ্চিত হওয়ার পর তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তারা সবাই বাংলাদেশি এবং অধিকাংশই ভারতে কাজের সন্ধানে গিয়েছিলেন।’ তবে ঐ বৈঠকে এনআরসি নিয়ে কোন আলোচনা হয়নি বলে বিজিবি সূত্রে জানা যায়।
গত বছরের অগাস্টে প্রতিবেশী ভারতের আসামের এনআরসি বা জাতীয় নাগরিক পঞ্জি চূড়ান্তভাবে প্রকাশ হয়। এতে শুধু আসামরই ১৯ লাখ বাসিন্দাকে অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি। যারা বাদ পড়েছেন তারা বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে দেশটিতে বসবাস করছেন বলে তাদের ভারতে থেকে বের করে দেওয়া হবে বলে সংবাদ প্রকাশ করে আসছে ভারতীয় গণমাধ্যম। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করার সময় আটক হচ্ছেন মানুষ এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এনআরসি নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ার পর থেকে ভারত সরকার ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন (সিএএ) (নাগরিকত্ব সংশোধন বিল (ক্যাব) নামে পরিচিত) করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ সুগম করে। এমন বিলে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে পরে আইনে রূপান্তরিত হওয়ার পর দেশ জুড়ে বিক্ষোভ চলছে। মাত্র এক মাসেই প্রায় অর্ধ শতাধিকেরও বেশি প্রাণ হারিয়েছেন বিক্ষোভ করতে গিয়ে। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডিসেম্বরে ভারত সফর বাতিল করেছেন। তবে ভারত সরকার এনআরসি ও সিএএ নিয়ে বলছে, এতে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছুই নেই।
এমএস/এসি
আরও পড়ুন