ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪

১ কোটি নতুন ভোটারের জন্য সার্ভার কিনছে ইসি 

আসিফ শওকত কল্লোল

প্রকাশিত : ২৩:৩৯, ৫ জানুয়ারি ২০২০

চলতি  ২০১৯-২০২০ অর্থবছর ৫০ টি নতুন সার্ভার কিনতে নির্বাচন কমিশনের অনুকূলে কয়েকটি খাতে বরাদ্দ দেয়া ১৭ কোটি ৬৫ লাখ ৯০ টাকা ছাড় করেছে অর্থ বিভাগ । দেশে ১ কোটি নতুন ভোটার হওয়ার কারণে পুরাতন সার্ভারে আপলেড করা যাচ্ছে না। এজন্য দ্রুত নির্বাচন কমিশনকে নতুন সার্ভার কেনার জন্য আজ রবিবার অর্থ বিভাগ এ অর্থ ছাড় করেছে। এ অবস্থায় নতুন সার্ভার দ্রুত কিনতে না পারলে এন আইডি সংশোধন কার্ষক্রম, যা ১১৯ টি সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যে সেবা প্রদান করে তা ব্যহত হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন ।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, বর্তমানে ভোটার তালিকা আইন মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য রয়েছে ।কম্পিউটার ডেটাবেইজে সংরক্ষিত বিদ্যমান সকল ভোটার তালিকা প্রতি বছর ২ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে নির্ধারিত পদ্ধতিতে হালনাগাদ করে তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এবার আইন অনুযায়ী তা প্রকাশ করতে পারবে কি না তা নিয়ে সন্দিহান স্বয়ং কমিশন। 

ইসি ২০১৮ সালের জানুয়ারী  মাসে হালনাগাদ শেষে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছিল। এতে মোট ভোটার ১০ কোটি ৪১ লাখ ৪২ হাজার ৩৮১ জন।এবার ৪৩ লাখের বেশি নতুন ভোটার এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসি।

এদিকে  একমাস আগে  অযৌক্তিকভাবে অন্য খাতের অর্থ দিয়ে সার্ভার কেনার প্রস্তাবটি নাকচ করে দিয়েছিল অর্থ বিভাগ । কিন্তু উর্ধতণ মহলের চাপে পড়ে অর্থ বিভাগ এ অর্থ ছাড় করতে বাধ্য হয়েছে অর্থ বিভাগ । এক মাসের মধ্যেই আবার প্রস্তাবটি অনুমোদন  দিয়েছে অর্থ বিভাগ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

নির্বাচন কমিশন বলছে , নতুন সার্ভার কিনতে পরবর্তী প্রকল্পের রাখা হলে নতুন প্রকল্প অনুমোদন এবং ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে  সার্ভার পেতে প্রায় ৮ মাস  প্রয়োজন হতে পারে । ততদিনে এনআইড সার্ভিস সঠিকভাবে চালু  রাখার জন্য ড্যাটা সেন্টারের জন্য কমপক্ষে ৩৮ টি সার্ভার  এবং ২০ টি টিবি  স্টোরেজ সরকারের কোষাগার থেকে ক্রয় করতে হবে । এতে খরচ হবে২২ কোটি টাকা ।  

ভোটার ডাটাবেজ দ্বৈত ভোটার শনাক্তকরণের জন্য বিগত ২০১০ সালে অ্যান্ডারু ফাইল সিস্টেম (এএফএস) সিস্টেমের জন্য ৫০ টি সার্ভার ক্রয়  করা  হয়েছিল । ইতিমধ্যে উক্ত সার্ভারগলোর কর্মক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে এবং প্রতিনিয়ত  সমস্যা দেখা দিচ্ছে । উক্ত সার্ভারগুলোর  খুচরা যন্ত্রাংশ মাকেটে পাওয়া দুস্কর হচ্ছে , বিধাং সার্ভারগুলো  সচল  রাখা সম্ভব হচ্ছে না । ্এদিকে প্রতিনিয়ত নতুন ভোটারদের ১০ আঙ্গুলের ছাপ  ও আইরিশের প্রতিচ্ছবি সংগ্রহ করা হচ্ছে । ভোটার ডাটাবেইজের নির্ভুলতা ও ইন্ট্রিগ্রিটি রাখার জন্য ডাটা সেন্টারে  সিস্টেম  সঠিকভাবে চালু করা সম্ভব  হচ্ছে না । এই একটি  মাত্র সিস্টম  দিয়ে নতুন ভোটাদের আঙ্গুলের ছাপ যাচাই ও টেলকো অপারেটরদের  আঙুলের ছাপ  যাচাই  সেবা কোনভাবে পরিচালিত হচ্ছে  । ফলে ভোটারকে আইডি কার্ড দেয়া খুব বেশি সময় লেগে যাচ্ছে । ফলে  জনগণ ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে । এছাড়া  এই সিস্টেমের  যে  কোন সমস্যা হলে সারা দেশে সিম রেজিষ্ট্রেশনসহ সকল ধরনের ফিঙ্গার  ভেরিফিকেশন কার্ষক্রম বন্ধ  হয়েছে । ফলে পার্টনারদের  সার্ভিস  প্রদানের বিভিন্ন দিকে সমস্যা দেখা দিচ্ছে । বর্তমানে প্রায়  ১ কোটি  নতুন ভোটার অন্তর্ভূক্ত হবার প্রক্রিয়া চলছে । ফলে একটি মাত্র সার্ভার দিয়ে এতো ভোটার সঠিক সময়ে  আঙ্গুলের ছাপ যাচাই কার্ষক্রম ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে  । এ কারণে সঠিক সময়ে ভোটার তালিকা প্রস্তুত ও প্রকাশ করা সম্ভব নাও হতে পারে ।  এছাড়া গতবছর  নভেম্বর মাসে প্রবাসীদের এনআইডি নিবন্ধন  কার্ষক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে ।  অ্যান্ডারু ফাইল সিস্টেম (এএফএস) সিস্টেমের সঠিকভাবে কাজে না করলে  উক্ত কার্ষক্রম ব্যহত হবে । সঠিক সময়ে ভোটার তালিকা প্রস্তুত , সময়মত জনগণকে  এনআইডি প্রদান , ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই কার্ষক্রম সঠিকভাবে প্রদান  ও দ্বৈত ভোটার বিহীন ভোটার তালিকা প্রস্তুত , সময়মত জনগণকে এনআইডি   প্রদান , ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই  কার্ষক্রম সঠিকভাবে প্রদান ও  দ্বৈত ভোটার বিহীন ভোটার তালিকা প্রস্তুতের জন্য ড্যাটা সেন্টারের এর ৫০ ডিজাস্টার রিকাভারি সিস্টেম এর জন্য ৫০টি নতুন সার্ভার ক্রয় করা প্রয়োজন । 

গত মাসে অর্থ মন্ত্রণালয় বলছিল, একটা প্রতিষ্ঠান সবদিক বিবেচনায় নিয়ে তারাই অর্থবছরের শুরুতে বিভিন্ন খাতে অর্থ বরাদ্দের আবেদন করে। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগ বরাদ্দ মঞ্জুর করে এবং সে অনুযায়ী বাজেট প্রস্তুত হয়। তবে বিশেষ কোনো কারণে অন্য কোনো খাতে বেশি বরাদ্দের প্রয়োজন দেখা দিলে বরাদ্দ দেয়া অর্থ পুনঃউপযোজন (এক খাতের বরাদ্দ অর্থ অন্য খাতে ব্যবহার) করা হয়।

তবে সেটা অবশ্যই যৌক্তিক হতে হবে। কিন্তু এবার ইসি কয়েকটি খাতে বরাদ্দের পুরো অর্থই অন্য খাতে খরচের জন্য আবেদন করেছে। যেটা যৌক্তিক  মনে করছিল না অর্থ বিভাগ।

এছাড়া উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়সমূহের উন্নয়নে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ক্রয়বাবদ বরাদ্দ সাত কোটি টাকা থেকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জন্য এক কোটি ২০ লাখ টাকার বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ক্রয় করতে চায় কমিশন। এভাবে কায়েকটি খাতে বরাদ্দ ১৭ কোটি ৬৫ লাখ ৯০ লাখ টাকা অন্য খাতে বরাদ্দ চেয়ে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পুনঃউপযোজনের জন্য চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন।

উল্লেখ্য, গত বছর ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে প্রশিক্ষণের নামে অর্থ লুটের অভিযোগ ওঠে। বিগত দুটি নির্বাচনে প্রশিক্ষণ বাবদ ১২৩ কোটি টাকা নামমাত্র খরচ করা হয়। বিশেষ বক্তব্য, কোর্স উপদেষ্টা, কোর্স পরিচালক ও কোর্স সুপারভাইজার নামে ভাইচার প্রস্তুুত করে মোটা অংকের টাকা উত্তোলনের অভিযোগ ওঠে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (ইটিআই) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ করে দুর্নীতি দমন কমিশন । 

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি