বিশ্বব্যাপী মুজিববর্ষ
প্রকাশিত : ১৭:৪৫, ১২ জানুয়ারি ২০২০ | আপডেট: ১৪:৩৬, ২৪ জানুয়ারি ২০২০
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠান ব্যাপক আয়োজনের মাধ্যমে উদযাপন করা হবে। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে বহুল প্রতিক্ষীত মুজিববর্ষ উদযাপনের ক্ষণগণনা। বছরব্যাপী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কার্যক্রম শুরু হবে আগামী ১৭ মার্চ থেকে। ওই দিনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন।
গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে লোগো উন্মোচন করে দেশব্যাপী মুজিববর্ষের ক্ষণগণনার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। মুজিব বছর চলতি বছরের ১ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত পালিত হবে। ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন।
করাচির জেল থেকে থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি লন্ডন থেকে দিল্লি হয়ে দেশে ফিরেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন বিকালে তেজগাঁওয়ের পুরনো বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধু নামার পর পূর্ণতা পেয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ঐতিহাসিক স্থানে সেই সময়টিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার রূপকারের জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা শুরু হলো।
বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাপীও উদযাপিত হবে মুজিববর্ষ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিদেশে বাংলাদেশের সব মিশনে শুক্রবার থেকে মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জানান, মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশের ৭৭ টি মিশনে ২৬১ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মগুলোকে সবার দৃষ্টিগোচর করা হবে।
জাতিসংঘ: জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রবাব ফাতিমা ঘোষণা করেছিলেন, জাতিসংঘে বছরব্যাপী কর্মসূচির মধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন করা হবে। তিনি জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপন করার পাশাপাশি মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে ‘মুজিব বর্ষ’ গণনা উদ্বোধনের সময় এ ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বিবৃতি পাঠ করা হয়। পরে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন শেষে মিশনে প্রদর্শিত একটি কাউন্টডাউন ঘড়ি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রদূত রবাব।
ওয়াশিংটন: বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, জাতির পিতার ‘স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস’ উদযাপনের সাথে শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসিতে মুজিব বর্ষের ক্ষণগণনা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বাংলাদেশের জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের জন্য বাতাসে একশো রঙিন বেলুন প্রকাশের মাধ্যমে কাউন্টডাউন ঘোষণা করেন।
এর আগে রাষ্ট্রদূতসহ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ডেনমার্ক: বাংলাদেশী রাজনৈতিক, শিল্পী, ডেনমার্কের বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী সংস্থা এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কাউন্টডাইন শুরু করে। জাতির পিতার জন্মশতবর্ষের কাউন্টডাউন অনুষ্ঠান শুরুর জন্য একটি কেক কাটা হয়। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
ভিয়েতনাম: মিশন চত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ। দেশটিতে প্রবাসী বাংলাদেশীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিদেহী আত্মার শান্তির ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। মিশনে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বার্তা পড়ে শুনানো হয়।
অস্ট্রেলিয়া: রাজধানী ক্যানবেরায় জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী গণনার জন্য একটি ঘড়ি উদ্বোধন করা হয়। ঘড়িটি হাই কমিশনের ওয়েবপৃষ্ঠার হোম পেইজে রাখা হয়েছে যা ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শূন্য সময়ে গণনা বন্ধ করবে। বাংলাদেশ হাই কমিশনে ইতোমধ্যে গত আগস্টে একটি বঙ্গবন্ধু কর্নার খোলা হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
টোকিও এবং সিওল: টোকিও এবং সিওলে বাংলাদেশ মিশনগুলিও মুজিব বর্ষ গণনা শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পৃথক বার্তা পাঠ করে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
একটি জাতির গঠনে বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ নেতৃত্বের গুণাবলীর পাশাপাশি তাঁর আদর্শ ও বাংলাদেশের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আজীবন সংগ্রামের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ে বক্তারা আলোচনা করেন।
জাপান: বাংলাদেশ মিশনের চার্জ ডি অ্যাফায়ার্স ডা. শাহিদা আক্তার বলেছেন, টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাস জাপানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো জাপানেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। তিনি উদযাপনটিকে সফল করতে স্থানীয় বাংলাদেশী প্রবাসীদের প্রতি সহযোগিতার আহবান জানান।
দক্ষিণ কোরিয়ার সিওলে বাংলাদেশ মিশনেও বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের তাৎপর্য এবং দূতাবাসে কর্মকর্তারা এবং বাংলাদেশী প্রবাসীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
নেদারল্যান্ডস: হেগের দূতাবাস চত্বরে ঐতিহাসিক মুহূর্তটিও যথাযথ মর্যাদায় পালন হয়েছে। দূতাবাসের কর্মকর্তারা ছাড়াও আলোচনা অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক প্রবাসীরা অংশ নেন।
এসময় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং একটি প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। আলোচনা অধিবেশনে হল্যান্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দও অংশ গ্রহণ করেন।
এমএস/এসি
আরও পড়ুন