মুজিববর্ষে উল্লেখযোগ্য কিছু আয়োজন
প্রকাশিত : ১১:০৯, ২৮ জানুয়ারি ২০২০
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০০তম জন্মবার্ষিকী ১৭ মার্চ। তাই ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত সময়কে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মুজিববর্ষ উদযাপনে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার নানা পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। বিশ্বের ১৯৫টি দেশে অনুষ্ঠানমালা আয়োজনের পাশাপাশি ঢাকার আয়োজনে যোগ দিবেন বিশ্বনেতারা।
মুজিববর্ষের নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু আয়োজন এখানে তুলে ধরা হলো-
বঙ্গবন্ধুকে ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি দেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তাই মুজিববর্ষ উদযাপনের মাধ্যমে তাঁকে ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ১৯৪৭ সালে কলকাতা থেকে ঢাকায় এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন বঙ্গবন্ধু। ১৯৪৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চতর্থ শ্রেণি কর্মচারীদের এক আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে আন্দোলন করার কারণে বঙ্গবন্ধুর ছাত্রত্ব বাতিল করে তখনকার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে বঙ্গবন্ধু ও আরও চারজনকে শর্ত সাপেক্ষে ছাত্রত্ব রাখার সুযোগ দেওয়া হলেও আজীবন আপসহীন সংগ্রামী বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া শর্ত মানেননি। ফলে তাঁকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর ৬১ বছর পর ২০১০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের এক বিশেষ সভায় সেই আদেশ প্রত্যাহার করে নেয়।
৪ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য মিড-ডে মিল
মুজিববর্ষে দেশের ১৬টি উপজেলার ২ হাজার ১৬৬ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ লাখ ১০ হাজার ২৩৮ শিক্ষার্থীর জন্য মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা করবে সরকার। এরই মধ্যে গত ৭ জানুয়ারি গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৩৩টি বিদ্যালয়ে রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন মিড-ডে মিল কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
‘মুজিব চত্বর’ হবে ময়মনসিংহে
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ময়মনসিংহ বন বিভাগ মুজিব চত্বর নির্মাণ করবে। সেখানে ১০০ প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করবে তারা। এ উপলক্ষে বন কার্যালয়ে এখন চলছে চারা উৎপাদনের কাজ। এছাড়া দেশকে সবুজায়ন করতে মুজিববর্ষে বিভিন্ন উপজেলায় বিনামূল্যে ২৫ হাজার করে গাছের চারা বিতরণ করা হবে। এই চারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি জায়গায় রোপণ করা হবে।
ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলো
মুজিববর্ষকে সামনে রেখে এগিয়ে চলছে বিদ্যুৎ বিভাগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, মুজিববর্ষের সময়কালের মধ্যে অর্থাৎ ২০২১ সালের ১৭ মার্চের মধ্যে সব উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে সারাদেশের ঘরে ঘরে আলো জ্বলবে। এ উপলক্ষে ৭টি নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ২৩টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আনা হয়েছে।
১ কোটি গাছের চারা বিতরণ হবে
মুজিববর্ষ উদযাপনে কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ৫ জুন সারাদেশের ৪৮২টি উপজেলায় একযোগে ১ কোটি গাছের চারা বিতরণ করা হবে। ফলদ, বনজ ও ঔষধিসহ নানা প্রকার গাছের চারা থাকবে। তবে দেশীয় ফলজ গাছকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
রাজশাহীর আম হবে রাসায়নিকমুক্ত
মুজিববর্ষে আমের মৌসুমে রাজশাহীর আম থাকবে শতভাগ রাসায়নিকমুক্ত। এ ব্যাপারে কঠোর নজরদারি করবে প্রশাসন। রাজশাহী জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, মুজিববর্ষে রাজশাহীর বিষমুক্ত আম হবে জাতির জন্য উপহার।
চবির শাটল ট্রেন হবে রঙিন
মুজিববর্ষে বছরব্যাপী নানা কর্মসূচি আয়োজন করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের অন্যতম প্রধান বাহন শাটল ট্রেনকে রঙে রঙিন করা হবে। এতে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন আলপনা, মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত আলপনা, দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার আলপনা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার, স্মৃতি ম্যুরাল, ভাস্কর্যসহ বিভিন্ন স্থাপনার চিত্রপট স্থান পাবে বলে সূত্রে জানা যায়।
ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন করবে ভারত
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সেই দুটির ম্যাচের একটি আয়োজন করতে চায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআিই)। গুজরাটের সদ্য নির্মিত সরদার প্যাটেল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি আয়োজনের ইচ্ছে প্রকাশ করে ইতোমধ্যে বিসিবির কাছে প্রস্তাব দিয়েছে বিসিসিআই।
এএইচ/
আরও পড়ুন