আজকেই বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত হন শেখ মুজিব
প্রকাশিত : ১০:৫১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান; সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী। দেশের মানুষের অধিকার আদায় ও স্বাধীনতা অর্জনে যিনি জীবনের প্রায় ১৪ টি বছর কাটিয়েছেন কারাগারে। শাসকগোষ্ঠির কোনো দমন পীড়ন তাকে দমাতে পারেনি এতটুকু। মহান এ মানুষটিকে ১৯৬৯ সালের আজকের দিনে দেয়া হয় বঙ্গবন্ধু উপাধি। সেই কারণে এই দিনটি বাঙালি জাতির জন্যে এক গুরুত্বপূর্ণ দিন।
১৯৬৮ সাল; প্রাদেশিক স্বায়ত্ত্বশাসনের পক্ষে শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ দফা তৎকালীন পাকিস্তানি সামরিক শাসক আইয়ুব খানের গলায় কাঁটার মতো বিঁধে। আর ঠিক সে সময় শেখ মুজিব ব্যস্ত জনমত গড়তে; নিরন্তর ঘুরছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
এদিকে, শেখ মুজিবুর রহমানকে দমাতে না পেরে পাকিস্তানি শাসকরা মিথ্যা দেশদ্রোহীর তকমা লাগিয়ে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা করে। গ্রেফতার হন মুজিব। কিন্তু তাতেও এতটুকু বিচলিত দেখা যায়নি মহান এই নেতাকে। নেতাকে মুক্ত করতে উত্তাল সারাদেশ। জনতার সেই আন্দোলনে নত স্বীকার করে পাকিস্তান। ৬৯’র ২২ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পান বাঙালীর প্রাণের নেতা শেখ মুজিব।
পর দিনই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১০ লাখ মানুষের বিশাল জনসভায় কৃতজ্ঞ জাতি প্রিয় নেতা শেখ মুজিবকে দেয় ’বঙ্গবন্ধু’ উপাধি। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই বাঙালী অর্জন করে স্বাধীনতা, মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে আছেন জাতির জনক।
১৯৬৮-৬৯ মেয়াদে ডিইউসিএসইউ’র ভিপি’র দায়িত্ব পালন করা তোফায়েল আহমেদ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ঐতিহাসিক ১১-দফা আন্দোলনের ভিত্তিতে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা ২২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তান জেল থেকে মুক্ত করি। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ২৩ ফেব্রুয়ারি জাতির পক্ষে কৃতজ্ঞতা স্বরূপ শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি প্রদান করে।’
আওয়ামী লীগের প্রবীণ এ নেতা সেদিনের কথা স্মরণ করে বলেন, ডিইউসিএসইউ’র ভিপি হিসেবে আমি সমাবেশে সভাপতিত্ব করি। আমি বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশ্যে ভাষণ দেই। তখন আমি বলি, আমরা মহান এই নেতাকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দিচ্ছি যে নেতা তাঁর যৌবনের পুরোটা সময় পাকিস্তানি জেলে কাটিয়েছেন এবং হাসিমুখে মৃত্যুকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত ছিলেন।
এরপর থেকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এই বাঙালি ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে পরিচিত হয়ে আসছেন। ‘বঙ্গবন্ধু’ বাংলায় যার অর্থ জনগণের বন্ধু।
তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, আমি গর্বের সঙ্গে বলছি আমরা আমাদের দুটি স্লোগানকেই বাস্তবায়িত করতে পেরেছি। একটি বঙ্গবন্ধুকে কারামুক্ত এবং অন্যটি মাতৃভূমি বাংলাদেশকে স্বাধীন করা। ২২ ফেব্রুয়ারি আমরা আমাদের প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করি যিনি একইসঙ্গে জাতির জনকে পরিণত হন। অন্যদিকে ১৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা দেশকে স্বাধীন করি।
আরও পড়ুন