মুজিববর্ষের ১৭ মার্চের মূল অনুষ্ঠান স্থগিত
প্রকাশিত : ২৩:৩৩, ৮ মার্চ ২০২০ | আপডেট: ২৩:৫২, ৮ মার্চ ২০২০
করোনা ভাইরাসের কারণে মুজিববর্ষে বড় ধরনের কোনো জনসমাবেশ হবে না বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
আজ রোববার রাতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হবে, তবে বড় পরিসরে কোনো আয়োজন থাকছে না। আগামী ১৭ মার্চ পুনর্বিন্যাস ও সীমিত আকারের উদ্বোধন হবে।
তিনি আরও জানান, প্যারেড গ্রাউন্ডে বড় পরিসরে মুজিববর্ষের যে অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল সেটি স্থগিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত আগামীকাল (০৯ মার্চ) জানানো হবে।
এদিকে আজ রোববার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ৩ বাংলাদেশির পরিচয় পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘করোনায় আক্রান্ত ওই ৩ বাংলাদেশির মধ্যে দু’জন সম্প্রতি ইতালি থেকে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে একজন নারী ও দুইজন পুরুষ। এদের দুইজন একই পরিবারে সদস্য।’
তিনি জানান, ‘আক্রান্তদের কোয়ারেন্টাইনে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। করোনা প্রতিরোধে সবধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে, তাই আতঙ্কের কিছু নেই।’
আইইডিসিআরের পরিচালক জানান, ‘জ্বর ও কাশি নিয়ে এই তিন ব্যক্তি আইইডিসিআরে যোগাযোগ করে। এরপর গত ২৪ ঘণ্টায় তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় তারা পজিটিভ প্রমাণিত হন।’
সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আক্রান্তরাই কেবল মার্কস পড়বে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। এখন পর্যন্ত তিনজন আক্রান্ত হয়েছে। এতে করে সারা বাংলাদেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে এমন কিছু বলা যাবে না। স্কুল-কলেজ বন্ধ করার প্রয়োজন নেই। জনসমাগমের মধ্যে না যেতে পরামর্শ দেবো, বাসাতে থাকাই ভালো। তাদের শনাক্ত করা যায় এমন কিছু প্রশ্ন না করার আহ্বান জানান তিনি।’
করণীয় বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া ও কাশি শিষ্টাচার মেনে চলার বিকল্প নেই।’
আইইডিসিআর’র এই পরিচালক বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে যাবে এখনই তা ভাবছি না। তবে যদি হয় সেক্ষেত্রে ইউনিটগুলো হাসপাতাল করার প্রস্তুতি আমাদের আছে। সেগুলো ঢাকার বাইরে করার ব্যবস্থাও রয়েছে। এমনকি যদি একান্তই প্রয়োজন হয় তবে স্কুল কলেজ কমিউনিটি সেন্টারে হাসপাতাল দরকার হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এই রোগে আতঙ্কিত হয়ে সবাইকে মাস্ক না পরার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেককে মাস্ক পরে ঘুরতে হবে এমন না। আক্রান্ত রোগী ও রোগীকে যিনি সেবা দিবেন তারা মাস্ক পরবেন। তবে আবারও তিনি সম্ভব হলে জনসমাগমপূর্ণ এলাকা, গণপরিবহন ইত্যাদি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।’
এদিকে করোনা আক্রান্ত বাংলাদেশিরা গণমাধ্যমকে জানান, ‘বিমানবন্দরে তাদেরকে শনাক্ত করতে পারেনি থার্মাল মেশিন। তারাই হটলাইনে যোগাযোগ করে নিজেদের তথ্য দেন।’
অন্যদিকে চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৬০০ জনে পৌঁছেছে। শুধু চীনেই মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৯৭ জন। উৎপত্তিস্থল চীনের বাইরে ৫০৩ জন।
চীনের বাহিরে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ইতালিতে। ইউরোপের দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার।
আর ইসলামী প্রজাতন্ত্রের দেশ ইরানে এখন পর্যন্ত দুই সংসদ সদস্য ও এক রাষ্ট্রদূতসহ ১৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ছয় হাজারের কাছাকাছি।
পিছিয়ে নেই দক্ষিণ কোরিয়াও। এখন পর্যন্ত দেশটিতে ৫০ জন মারা গেছেন। আক্রান্তের দিক থেকে চীনের বাহিরে সবচেয়ে বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় হাজারের বেশি নাগরিক আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে সেখানে ৭ হাজারের বেশি মানুষ ভাইরাসটিতে ভুগছেন।
এসি
আরও পড়ুন