মুজিববর্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠান দেশে-বিদেশে একসঙ্গে প্রচার হবে
প্রকাশিত : ১২:৩৯, ১১ মার্চ ২০২০
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী জানিয়েছেন, মুজিববর্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠান দেশে-বিদেশে একসঙ্গে প্রচার করা হবে। করোনা ভাইরাসের কারণে জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে জনসমাগম পরিহার করতে জাতীয় প্যারেডগ্রাউন্ডে মুজিববর্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠান হচ্ছে না। এর পরিবর্তে ইলেকট্রনিক ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মুজিববর্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠান করা হবে।
পুনর্বিন্যাস করা এ অনুষ্ঠান কীভাবে হবে সে সম্পর্কে গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান তিনি। রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে তিনি সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন- বাংলাদেশে একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি বিশেষ উদ্বোধন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
সেটি সব টেলিভিশনের মাধ্যমে ও সোশ্যাল মিডিয়াগুলোকে ব্যবহার করে সম্প্রচারিত হবে এবং একইসঙ্গে সারা পৃথিবীতে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানের জন্য দেড় থেকে দুই ঘণ্টার টেলিভিশন অনুষ্ঠান হবে জানিয়ে কামাল চৌধুরী বলেন, জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের উদ্বোধন অনুষ্ঠানটির যেভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল, সেটিকে মোটামুটি একটি অবস্থায় রেখে চিন্তা করা হয়েছে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেড় থেকে দুই ঘণ্টার একটি টিভি প্রোগ্রাম তৈরি করা হবে। সেটি পরবর্তী সময়ে সারা বাংলাদেশ এবং সারা পৃথিবীতে সম্প্রচার করা হবে।
তিনি বলেন, এই প্রোগ্রামের মধ্যে আমাদের জাতীয়সঙ্গীত রয়েছে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাণী দেবেন। প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন এবং প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা সেখানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে আগামী ১৭ মার্চ থেকে এক বছর 'মুজিববর্ষ' ঘোষণা করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বছরজুড়ে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে মুজিববর্ষ উদ্বোধনের মূল অনুষ্ঠান ঠিক হয়েছিল, সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। তবে বিশ্বের প্রায় একশ' দেশে প্রাণঘাতী নভেল করোনা ভাইরাস আক্রমণ করায় ওই আয়োজনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। মূল ওই অনুষ্ঠান স্থগিত করে এখন ১৭ মার্চ জনসমাগম এড়িয়ে এই কর্মসূচি সাজানো হয়েছে।
কামাল চৌধুরী জানান, রাত ৮টায় বঙ্গবন্ধুর জন্মক্ষণ। সেই জন্মক্ষণে আতশবাজি ও আনন্দ আয়োজনমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে উদযাপন করা হবে। সেই আলোকে কর্মসূচি কোন সময়ে শুরু হবে সেটি ঠিক করা হবে। তবে রাতে হবে। নির্দিষ্ট সময়এখনও ঠিক হয়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে কামাল চৌধুরী বলেন, ‘এটা রেকর্ডেডও হতে পারে, আবার কিছু অংশ লাইভও হতে পারে। এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের টেকনিক্যাল টিম আছে, অ্যাটকো ও বাংলাদেশ টেলিভিশন আছে, তারা কাজ করছে। সাংস্কৃতিক উপকমিটিসহ যারা সংশ্নিষ্ট আছেন, তারা কাজ করছেন।’
কামাল চৌধুরী জানান, জাতীয় শিশু দিবসে এই আয়োজনে শতশিশুর কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত ও শিশুদের কণ্ঠে অন্য সঙ্গীত পরিবেশনা থাকবে। একশ' দেশীয় শিল্পীর যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশনার পাশাপাশি মুজিববর্ষের জন্য থিম সং বা উৎসব সঙ্গীত পরিবেশিত হবে।
উদ্বোধনী আয়োজনের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম, অবদান ও ত্যাগের মহিমা নিয়ে ‘চিত্রপটের দৃশ্যকাব্যে বঙ্গবন্ধু’ নামে থিয়েট্রিক্যাল কোরিওগ্রাফির আয়োজন থাকবে বলেও জানান কামাল চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘জীবন-কর্ম নিয়ে থিয়েট্রিক্যাল কোরিওগ্রাফির মতো থাকবে। এটা একটি সাংস্কৃতিক কর্মসূচি আকারে তৈরি করা হয়েছে। সেটি শিল্পকলা একাডেমি পরিবেশন করবে। এ আয়োজনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিখ্যাত ব্রিটিশ কোরিওগ্রাফার আকরাম খানের একটি দল পারফর্ম করার কথা। তাদের রিহার্সাল চলছে এখন। আকরাম খানের যে পারফরম্যান্স, সেটিও এখানে পরিবেশন করা হবে।’
সবার জন্য উপভোগ্য আয়োজনের পরিকল্পনা জাতীয় কমিটি করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবকিছু মিলিয়ে উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি যাতে সবাই উপভোগ করতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা হবে।’
সব ইলেকট্রনিক মিডিয়া আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট সময়ে এটা সবাই প্রচার করবেন। এর বাইরে সোশ্যাল মিডিয়া তো আছেই।’
কামাল চৌধুরী বলেন, ‘ওইদিন ধানমন্ডি ও টুঙ্গিপাড়ার পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত আকারে করা হবে। এ মুহূর্তের স্বাস্থ্যঝুঁকি মাথায় রেখে আমরা বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালা তৈরি করেছি। ১৭ মার্চ সেসব অনুষ্ঠান এবং সারা বাংলাদেশে অনুষ্ঠানগুলো হবে। তবে সবকিছুতেই ব্যাপক জনসমাগম পরিহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যান্য কর্মসূচি চলবে সীমিত আকারে।’
আরও পড়ুন