ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

কুড়িগ্রামের সেই ডিসি প্রত্যাহার, ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:২৪, ১৫ মার্চ ২০২০ | আপডেট: ১৬:৪৮, ১৫ মার্চ ২০২০

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন

তীব্র সমালোচনার মুখে অবশেষে প্রত্যাহার করা হয়েছে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনকে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 

রোববার (১৫ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

এর আগে গত শুক্রবার (১৩ মার্চ) মধ্যরাতে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউন ও ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে তার ঘরের দরজা ভেঙ্গে ধরে নিয়ে আসা হয় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে। ওই সময়ই জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত তাকে এক বছরের কারাদণ্ডও দেয়। এই ঘটনায় দেশজুড়ে বইয়ে যায় সমালোচনার ঝড়। 

এদিকে, রোববার সকালে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে তাকে জামিন দেয়া হয়। একইসঙ্গে আরিফুল ইসলামকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের (মোবাইল কোর্ট) কারাদণ্ড প্রদানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে।

আরিফুল ইসলামের আইনজীবী অ্যাড. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘২৫ হাজার টাকা জামানত রেখে আরিফকে জামিন দেয়া হয়েছে। তবে মামলাটির আপিল চলমান।’ 

আরিফের বড় বোন রিমা আক্তার জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে জামিনের বিষয়টি তারা মেনে নিতে পারছেন না। তারা সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানের নি:শর্ত মুক্তি চান।

এদিকে, ভ্রাম্যমাণ আদালতের কারাদণ্ড প্রদানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে। আজ রোববার বাংলা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদের পক্ষে আইনজীবী ইশরাত হাসান জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করেন। 

ইশরাত হাসান বলেন, ‘আজ হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রশিদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি হতে পারে।’ 

তাদের সঙ্গে সাংবাদিকের পক্ষে লড়বেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এছাড়া রিটে ফৌজদারি কার্যবিধি, ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এর সংবিধানের ৩১, ৩২, ৩৫ এবং ৩৬ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

অপরদিকে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রংপুর বিভাগীয় কমিশনারকে এ ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার কে এম তারিকুল ইসলাম তদন্তের দায়িত্ব দেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানাকে।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবেদনটা আমাদের কাছে আসবে। সেটা যাচাই করে একটা সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। একটা পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করব।’

উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে আরিফুল ইসলামকে মাদকবিরোধী অভিযানের কথা বলে আটক এবং পরে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানের সময় মাদকসহ আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে আটক করা হয় বলে দাবি করেন অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা।

তবে আরিফুল ইসলামের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার বলেন, ‘মধ্যরাতে বাড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে আরিফকে পিটিয়ে এবং জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। কোনও মাদক পাওয়া যায়নি।’

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি