প্রধানমন্ত্রীর অনুদান চায় সঙ্গীত শিল্পীরা
প্রকাশিত : ২২:০৭, ৮ মে ২০২০
অদৃশ্য অভিন্ন শত্রু কোভিড -১৯ করোনা ভাইরাস দ্বারা সারাবিশ্ব আক্রান্ত,যা বৈশ্বিক মহামারিতে রূপ নিয়েছে। এর মরন ছোবল বাংলাদেশেও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এই মহামারি থেকে বাচার জন্য সরকার দেশজুড়ে লকডাউনের ঘোষণা করেছেন। যার ফলে অর্থনীতির চাকা থমকে গেছে। ফলশ্রুতিতে আমাদের প্রিয় সঙ্গীতাঙ্গন হয়েছে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে অসংখ্য যন্ত্রশিল্পী,কণ্ঠশিল্পী,গীতিকার ও সংশ্লিষ্ট সবাই।
এই মানুষগুলো জীবনভর সকলের আনন্দের খোরাক যুগিয়েছে এবং ভূমিকা রেখেছে দেশ স্বাধীনের যুদ্ধ জয়েও। যেমন মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি,মোরা একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি। এই গানটি ছিল তৎকালীন সময়ে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার যুদ্ধে যাবার অনুপ্রেরণা। সারা বিশ্বের বিস্ময় আমাদের বাংলাদেশকে তুলে ধরতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও কর্মসংস্থান যেমন ভূমিকা রেখেছে তেমনি সঙ্গীতাঙ্গনের ভুমিকাও কোন অংশে কম নয়। উদাহরণ স্বরূপ বলতে গেলে একটি দেশের জাতীয় সঙ্গীত দ্বারা সে দেশের নাম তুলে ধরা হয়। আর সেই সঙ্গীতটিই গীতিকার,সুরকার,যন্ত্রশিল্পী এবং কণ্ঠশিল্পী দ্বারা পুর্ণতা পায়। এই সঙ্গীতাঙ্গনকে বাঁচানো রাষ্ট্রের দায়িত্বের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে। সেই সুবাদে গণতন্ত্রের মানসকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের কাছে এই অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরতে সেভ দ্যা বাংলাদেশ মিউজিক ইন্ড্রাস্টি(SBMI)এর আজ শুক্রবার এই সংবাদ সম্মেলন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী হাসান(আর্ক),কণ্ঠশিল্পী আলম আরা মিনু,জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত সঙ্গীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ,জিঙ্গেল কিং ও সঙ্গীত পরিচালক রিপন খান,কণ্ঠশিল্পী মিলন মাহমুদ,সেভ দ্যা বাংলাদেশ মিউজিক ইন্ড্রাস্টির আহবায়ক ও সঙ্গীতার কর্নধার সেলিম খান,সদস্য সচিব আতিক ডালিম,প্রচার সম্পাদক ও সমন্নয়ক ফারহাতুল জান্নাত এবং বিভিন্ন সুরকার,গীতিকার,যন্ত্রশিল্পী,সাউন্ড ও লাইটের মালিক ও টেকনিশিয়ানবৃন্দরা।
এসবিএমআই এর উপদেষ্টা ও জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা হাসান বলেন, “শিল্পীরা সম্মানিত তাই তারা রাস্তায় নেমে তাদের অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করতে পারছে না।কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা মুখ বুজেও সহ্য করতে পারছে না।আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আকুল আবেদন যে সঙ্গীতাঙ্গনকে বাঁচাতে আর্থিক অনুদান দিয়ে আপনি একজন রাষ্ট্রনায়কের পাশাপাশি একজন মমতাময়ী মায়ের মতোও ভূমিকা রাখুন।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত সঙ্গীত পরিচালক ও এসবিএমআই এর উপদেষ্টা ফরিদ আহমেদ বলেন যে আজ সঙ্গীতাঙ্গনকে বাঁচাতে এগিয়ে না আসলে কাল সঙ্গীতকে পেশা নিতে ভয় পাবে আগামী প্রজন্ম।তাতে কাল গহ্বরে হারিয়ে যাবে বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গীত ধারা।
এই প্রসঙ্গে সঙ্গীত পরিচালক ও এসবিএমআই এর উপদেষ্টা রিপন খান বলেন সুর মিশে আছে বাংলা মা ও তার মাটির সাথে।সুন্দর আগামীর লক্ষ্যে সঙ্গীতের স্বপক্ষে আমরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
কণ্ঠ শিল্পী ও এসবিএমআই এর উপদেষ্টা মিলন মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি কণ্ঠ শিল্পী,সুরকার ও কলাকুশলীদের দুর্যোগ অবস্থায় পাশে থেকে পুর্বে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা আমরা কখনোই ভুলব না।আমরা আশা করি জাতীয় দুর্যোগ এই সময়ে আপনি এসবিএমআই কে নিরাশ করবেন না।
কণ্ঠ শিল্পী আলম আরা মিনু বলেন, যে সঙ্গীত শিল্পীরা সঙ্গীতের বাইরে তেমন কিছুই করে না দেশের দুর্যোগের সেই অসহায় শিল্পীদের,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনার মাতৃস্নেহের ছায়াতলে যদি আশ্রয় না দেন তবে বিপর্যস্থ শিল্পীরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?
এসবিএমআই এর আহবায়ক ও সঙ্গীতার কর্নাধার সেলিম খান বলেন, রাষ্ট্রের ও সঙ্গীতাঙ্গনের এই দুর্দিনে সেভ দ্যা বাংলাদেশ মিউজিক ইন্ড্রাস্ট্রি (SBMI) সংগঠনটি সঙ্গীত সংশ্লিষ্ট সকলকে সাথে নিয়ে তাকিয়ে আছে আপনার দিকে।অন্যান্য শ্রেণি পেশার পাশাপাশি সঙ্গীতাঙ্গনকে অনুদানের আওতাভুক্ত করে অসহায় মানুষগুলিকে সম্মানসহ দুবেলা দুমুঠো খাবার খাওয়ার সুযোগ করে দিন।
কণ্ঠ শিল্পী ও এসবিএমআই এর সদস্য সচিব আতিক ডালিম বলেন, সঙ্গীত শিল্পী তৈরি করা যায় না,সঙ্গীত শিল্পী জন্মায়। বৈষয়িক এই মহামারির সময়ে সঙ্গীতাঙ্গনকে বাঁচাতে রাষ্ট্রনায়ক,মাদার অফ হিউমিনিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনার স্নেহাশীষ একান্ত কাম্য।
ভিনদেশি রোহিঙ্গাদের দুর্যোগ মুহুর্তে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বের দরবারে যে নজির আপনি সৃষ্টি করেছেন, নিজ দেশের সঙ্গীতাঙ্গনের এই অসহায় মানুষগুলোকে অন্তত আগামী ৬ মাসের জন্য অনুদানের আওতায় এনে আপনি মানবিকতার আরেকটি নজির স্থাপন করুন। আজ আমাদের সবার একটাই দাবি সঙ্গীত সংশ্লিষ্ট অসহায় মানুষগুলোর কথা চিন্তা করে আমাদের সসম্মানে বাঁচতে দিন।
আরকে/
আরও পড়ুন