‘আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন’
প্রকাশিত : ১০:৩৮, ২৬ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১০:২৯, ৪ এপ্রিল ২০১৮
১৯৭১-এর ছাব্বিশে মার্চ ছিল শুক্রবার। পঁচিশে মার্চ বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমি আর মনি ভাই রওয়ানা দেই সেগুন বাগিচার দিকে। রোকেয়া হলের সামনে দিয়ে যখন যাই তখন সংগ্রামী জনতা রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়েছে। সেগুন বাগিচায় একটা প্রেসে স্বাধীনতার ঘোষণা সংবলিত লিফলেট ছিল। সেই লিফলেট নিয়ে যাব ফকিরাপুলে মনি ভাইয়ের বাসায়। প্রেস পর্যন্ত গেলাম, লিফলেট নিলাম। রাস্তায় ব্যারিকেড থাকার কারণে গাড়ি রেখে অগত্যা হেঁটেই রওয়ানা দিলাম। রাত ১২টায় মুহুর্মুহু গোলাবর্ষণের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী পূর্বপরিকল্পিত ‘অপারেশন সার্চলাইট’ অনুযায়ী শুরু করেছে ইতিহাসের পৈশাচিকতম গণহত্যা। বঙ্গবন্ধু ঘোষিত শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত বাঙালির জাতীয় আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের লড়াইকে সশস্ত্রপন্থায় নিশ্চিহ্ন করতেই এই হীন চক্রান্ত। চারদিকে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ ছাপিয়ে তখন আমার কানে কেবলই বাজছে বিদায় বেলায় বঙ্গবন্ধুর সেই নির্দেশ, ‘তোমাদেরকে যে দায়িত্ব আমি দিয়েছি, সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন কর। আমার জন্য ভেবো না। আমি যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছি, আমার স্বপ্নের সেই বাংলাদেশ স্বাধীন হবেই হবে। ওরা অত্যাচার করবে, নির্যাতন করবে। কিন্তু আমার বাংলাদেশের মানুষকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না।’ বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী বাংলার মানুষকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। মাত্র নয় মাসের মধ্যে ৩০ লক্ষাধিক প্রাণ আর ৪ লক্ষাধিক মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা অর্জন করি প্রিয় মাতৃভূমির সুমহান স্বাধীনতা।
মার্চের ২৬ তারিখ প্রথম প্রহরেই সারাদেশসহ ঢাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়। এ অবস্থার মধ্যে রাতেই খবর পেলাম বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইয়াহিয়া খান তার ভাষণে সারা দেশে রাজনৈতিক তত্পরতা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধুকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘সপ্তাহ খানেক আগেই আমার উচিত ছিল শেখ মুজিবুর রহমান ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা...। ...কেননা কয়েকটি শর্ত দিয়ে সে আমাকে ট্র্যাপে ফেলতে চেয়েছিল। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সে আক্রমণ করেছে—এই অপরাধ বিনা শাস্তিতে যেতে দেওয়া হবে না।’ ২৭ মার্চ যখন দু ঘণ্টার জন্য কারফিউ প্রত্যাহার করা হয় তখন আমি আর মনি ভাই জহিরুল ইসলাম সাহেবের বাসায় যাই। সেখান থেকে আমাদের ব্যাগ নিয়ে এ ইউ আহমেদের একটা ভক্সওয়াগন গাড়িতে চেপে গুলিস্তান দিয়ে নবাবপুর রোড ধরে সদরঘাট গিয়ে কেরানিগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা করি। যাওয়ার সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে দফায় দফায় প্রচারিত এম এ হান্নান সাহেবের ভাষণ শুনলাম, ‘কে বলে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে? তিনি আমাদের মধ্যেই আছেন।’ এরপর কেরানিগঞ্জে বোরহানউদ্দীন গগনের বাড়িতে আমরা আশ্রয় নেই। ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, এএইচএম কামারুজ্জামান, মনি ভাই, সিরাজ ভাই, রাজ্জাক ভাই, আমি, আসম আব্দুর রব, শাজাহান সিরাজ আমরা অনেকেই তখন সেই বাড়িতে। সকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে হান্নান সাহেব এবং আমাদের অন্য নেতারা বিরামহীনভাবে ঘোষণা দিতে থাকেন যে, ‘বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে প্রিয় মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করতে আমাদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।’ এরপর সন্ধ্যায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে জিয়াউর রহমানের কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচারিত হয়।
টানা ২৪ দিন ধরে চলা সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন আর বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক কৌশলের কাছে পরাস্ত হয়ে অবশেষে গণহত্যার দিকে এগিয়ে যায় পাকিস্তানি সামরিক জান্তা জেনারেল ইয়াহিয়া এবং চক্রান্তকারী পিপলস পার্টি প্রধান জুলফিকার আলী ভুুট্টো। ২৫ মার্চ জিরো আওয়ারে গণহত্যা শুরুর পরপরই ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে বলেন, ‘আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন!’ ‘অপারেশন সার্চলাইট’ অনুযায়ী রাত ১২টায় পাকিস্তানি সামরিক কর্তৃপক্ষ ঢাকার চারটি স্থানকে টার্গেট করে—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, তত্কালীন ইপিআর সদর দফতর, রাজারবাগ পুলিশ লাইন এবং ধানমন্ডি ৩২ নং স্থিত বঙ্গবন্ধুর বাসভবন। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী গণহত্যাযজ্ঞ শুরু করে অখণ্ড পাকিস্তানের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেয়।
স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক বাহিনী প্রধান লে. জেনারেল নিয়াজীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মেজর সিদ্দিক সালিক তার ‘উইটনেস টু সারেন্ডার’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘যখন প্রথম গুলিটি বর্ষিত হলো, ঠিক সেই মুহূর্তে পাকিস্তান রেডিও’র সরকারি তরঙ্গের কাছাকাছি একটি তরঙ্গ থেকে ক্ষীণস্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্ঠস্বর ভেসে এল। ওই কণ্ঠের বাণী মনে হলো পূর্বেই রেকর্ড করে রাখা হয়েছিল। তাতে শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তানকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।’ স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কে তিনি আরো লিখেছেন, ‘ঘোষণায় বলা হয়, ‘এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা। আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। বাংলাদেশের মানুষ যে যেখানে আছেন, আপনাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর মোকাবিলা করার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলাদেশের মাটি থেকে উত্খাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে’। বিগত ২৪ বছরের জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম আর ’৭১-এর ২ মার্চে শুরু হওয়া ২৪ দিনের নিয়মতান্ত্রিক অসহযোগ আন্দোলনের চূড়ান্তপর্বে বঙ্গবন্ধুকে কোনরূপ আপস-মীমাংসায় আনতে অক্ষম হয়ে অবশেষে ২৫ মার্চ কাল রাতে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী চরম নিষ্ঠুরতায় বাঙালি হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। নির্মম এ হত্যাকাণ্ড শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই সংখ্যাগরিষ্ঠের ম্যান্ডেট প্রাপ্ত বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত শেষ বার্তায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য এরকম একটি চূড়ান্ত ঘোষণা দেওয়ার উত্তুঙ্গ অবস্থায় পৌঁছতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে দীর্ঘ ২৪টি বছর নিজকে, দলকে এবং বাঙালি জাতিকে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচির ভিত্তিতে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে লক্ষ্য স্থির করে, ধাপে ধাপে আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনা করে, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে শাসকগোষ্ঠীর সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে, জেল-জুলুম-হুলিয়া, ফাঁসির মঞ্চকে উপেক্ষা করে মৃত্যুঞ্জয়ী শক্তি নিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়েছে। একদিনে হয় নাই। বহু বছর ধরে, অগণিত মানুষের আত্মদানের মধ্য দিয়ে সমগ্র বাঙালি জাতি প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু মুজিবের স্বাধীনতার ঘোষণাকে শিরোধার্য জ্ঞান করেছে। বঙ্গবন্ধু ঘোষিত এই ঘোষণাটিই ’৭১-এর এপ্রিল মাসের ১০ তারিখে মুজিবনগরে প্রতিষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ গণপরিষদ’ কর্তৃক গৃহীত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ৬নং প্যারায় অনুমোদিত হয়ে সাংবিধানিক বৈধতা অর্জন করেছে।
স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পরিস্থিতির শুরুটা হয়েছিল মূলত ৬ দফা দেওয়ার মধ্য দিয়েই। ৬ দফাই ছিল স্বাধীনতার বীজমন্ত্র। বঙ্গবন্ধু নিজেই বলতেন, ‘সাঁকো দিলাম, স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতায় উন্নীত হওয়ার জন্য।’ পাকিস্তানিরা গণহত্যা চালানোর আগ পর্যন্ত কোনোরকম উগ্রতাকে অতি বিপ্লবীপনাকে আমরা প্রশ্রয় দেইনি। নিয়মতন্ত্রের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম পরিচালনা করেছেন। বিচ্ছিন্নতাবাদের অভিযোগে আমাদের কখনোই অভিযুক্ত করা যায়নি, আমরা আমাদের মুক্তি সংগ্রামের ন্যায্যতা প্রমাণ করে মুক্তিসংগ্রামী হিসেবেই এগিয়ে গেছি। নিয়মতান্ত্রিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু ’৭০-এর নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন।
’৭১-এর মার্চের ১ তারিখে দুপুর ১টা ৫ মিনিটে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এক বেতার ভাষণে ৩ মার্চ তারিখে ঢাকায় আহূত জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। জাতীয় পরিষদ স্থগিত ঘোষণার মধ্য দিয়ে ভুট্টো এবং জেনারেলদের মধ্যকার ঐকমত্য জনসাধারণে প্রকাশিত হলো। এরকম একটি ষড়যন্ত্র হতে পারে এব্যাপারে বঙ্গবন্ধু পূর্বেই আমাদের ধারণা দিয়েছিলেন এবং তাঁর অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার করে পার্লামেন্টারী পার্টির সভায় ৬ দফাভিত্তিক শাসনতন্ত্রের খসড়া প্রণয়নের কাজ চলছিল। জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণায় বিক্ষুব্ধ মানুষ হোটেল পূর্বাণীর সামনে এসে সমবেত হয়ে শ্লোগানে শ্লোগানে চারদিক প্রকম্পিত করে তোলে। বঙ্গবন্ধু হোটেলের সামনে এসে সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘অধিবেশন বন্ধ করার ঘোষণায় সারা দেশের জনগণ ক্ষুব্ধ। আমি মর্মাহত। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া তার ওয়াদা ভঙ্গ করেছেন। আমি সংগ্রাম করে এ পর্যন্ত এসেছি। সংগ্রাম করেই মুক্তি আনব। আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকুন।’ বিকাল ৩টায় ছাত্রলীগের উদ্যোগে পল্টন ময়দানে প্রতিবাদ সভা হবে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে পল্টন ময়দানের স্বতঃস্ফূর্ত জনসভায় যোগদান করি। পল্টন ময়দান তখন জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। সেখানে বক্তৃতায় বলি, ‘আর ৬ দফা ও ১১ দফা নয়। এবার বাংলার মানুষ ১ দফার সংগ্রাম শুরু করবে। আর এই ১ দফা হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আজ আমরাও শপথ নিলাম-বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ সুশৃঙ্খল সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।’ ’৭০-এর নির্বাচন না হলে, নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে কিছুই হতো না, কিছুই সম্ভব ছিল না। বঙ্গবন্ধু মুজিব নির্বাচনে অংশগ্রহণের দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
বাঙালির ইতিহাসের পরমাকাঙ্ক্ষিত দিন সাতই মার্চ। বাংলাদেশের সার্বিক মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে দুর্গম প্রস্তুর পথের প্রান্তে অতুলনীয় স্মৃতিফলক এই দিনটি। সংগ্রামী বাংলা সেদিন ছিল অগ্নিগর্ভ, দুর্বিনীত। বঙ্গবন্ধু যখন বক্তৃতা শুরু করলেন জনসমুদ্র যেন প্রশান্ত এক গাম্ভীর্য নিয়ে পিনপতন নিস্তব্ধতার মধ্যে ডুবে গেল। এত কোলাহল, এত মুহুর্মুহু গর্জন নিমেষেই উধাও। সাতই মার্চের রেসকোর্স বাংলার মানুষকে শুনিয়েছে স্বাধীনতার অমোঘমন্ত্র। নেতার বক্তৃতার শেষাংশ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বস্তুত এটাই ছিল বীর বাঙালির জন্য স্বাধীনতার ঘোষণা।
আজ সেই ঐতিহাসিক ভাষণ জাতিসংঘের ইউনেস্কো ঘোষিত ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল’ হিসেবে বিশ্বসভায় স্বীকৃত। দেশকে স্বাধীন করে জাতির পিতা তাঁর জীবনের প্রথম লক্ষ্য পূরণ করেছেন। কিন্তু তাঁর দ্বিতীয় লক্ষ্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন, যা তিনি সমাপ্ত করে যেতে পারেননি। সেই লক্ষ্য পূরণ হতে চলেছে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। ১৯৯৬-এ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশকে তিনি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। ২০০৯-এ রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব লাভ করে আজ আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশকে তিনি উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। যে বাংলাদেশকে নিয়ে একদিন হেনরী কিসিঞ্জারসহ পৃথিবীর অনেক অর্থনীতিবিদ হাস্যাষ্পদ মন্তব্য করে বলেছিল, ‘বাংলাদেশ হবে তলাবিহীন ঝুড়ি, বাংলাদেশ হবে দরিদ্র দেশের মডেল।’ আজ তাদের সেই বক্তব্য ভুল প্রমাণিত হয়েছে। যে বাংলাদেশ ’৭৫-এ ছিল স্বল্পোন্নত, আজ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছি। ইতোমধ্যে জাতিসংঘ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা যে প্রথম ধাপ অতিক্রম করেছি তার স্বীকৃতির সনদপত্র দিয়েছে। সুতরাং, এই বছরে স্বাধীনতা দিবসের আনন্দঘন ক্ষণে গভীরভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে মনে পড়ে। তাঁর সেই স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলায় রূপান্তরিত হয়ে তাঁরই পরমারাধ্য স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে চলেছে।
লেখক :আওয়ামী লীগ নেতা, সংসদ সদস্য, বাণিজ্য মন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
tofailahmed69@gmail.com
** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।