ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪

কুসংস্কার নয়, বাস্তব ঘটনা...

শিরীন ফাতিমা

প্রকাশিত : ১৯:৪৭, ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ | আপডেট: ১৯:৫০, ১ সেপ্টেম্বর ২০২০

ব্রহ্মপুত্র নদের উপর তখন হওয়া সেই নতুন ব্রীজে আমরা (লেখক) তিনজন।

ব্রহ্মপুত্র নদের উপর তখন হওয়া সেই নতুন ব্রীজে আমরা (লেখক) তিনজন।

সংস্কারের পাশাপাশি প্রতিটি সমাজেই কুসংস্কারও বিদ্যমান। যদিও সব সংস্কারই কিন্তু ‘কু’ নয়। কোন না কোন কারণে এগুলো চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। ব্যক্তিগতভাবে আমি কোন কুসংস্কারে বিশ্বাস করিনা। আমি মনে করি, প্রতিটা ঘটনার পেছনে কোন না কোন যুক্তি বা কারণ আছে। তারপরও আমার-ই জীবনে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যার ব্যাখ্যা আমি পাইনি আজও। তারই একটা শেয়ার করছি আজ।

৯৫-এর শেষের দিকের ঘটনা। খুব সম্ভবত- নভেম্বরে। আমি আমার দ্বিতীয় সন্তানকে কনসিভ করি। তখন আমরা ময়মনসিংহ সেনানিবাসে থাকি, স্বামীর (প্রায়াত) পোস্টিংসূত্রে। আমার মায়ের নানা উপদেশবাণী তখন আর কানে তুলতাম না। কেননা, একবার তো মা হয়েছি, সব-ই তো জানা। ডিসেম্বরের ৭ তারিখে আমাদের বিবাহ বার্ষিকীতে আমরা ব্রহ্মপুত্র নদের উপর তখন নতুন ব্রীজ হয়েছে- সেটা দেখতে গেলাম বিকেলে। তারপর ব্রীজ পার হয়ে নদীর ওপারে কতগুলো ছাপড়া দোকান ছিল চায়ের, সেখানে চা খেতে গেলাম (যদিও চা কেউ খায় না, পান করে)। 

তখন মাগরিবের আজান দিচ্ছিল। আমি আবার রাস্তার পাশের খাবার খুব পছন্দ করি। তো ডালপুরি আর চা খেয়ে বাসায় ফিরেছি। সব ঠিকঠাক। রাতে ঘুমিয়েছি। ফজরের আজানেরও আগে হায়াত (স্বামী) উঠে তৈরী হচ্ছিল পিটি’তে যাবে বলে। ওয়াশরুমে পানি পড়ার আওয়াজে আমার ঘুম ভাঙলো। মায়িশা, মানে আমার মেয়ে, ছোট তখন, আমার পাশেই শুয়ে ছিল। আমি আধো ঘুমে ছিলাম, কানে শব্দ আসছিল হায়াতের কাশির, পানি পড়ার। তখন ফজরের আজান হলো, বাসার কাছেই মসজিদ, ভোর বেলা, চারদিক নিস্তব্ধ, তাই আজানের আওয়াজটা বেশ জোরেই শোনা যাচ্ছিল। 

আমি আজানের শব্দ শুনে আধো ঘুমেই ভাবলাম, যাক আজান পড়ে গেছে- এখন আর কোন ভয় নাই। কেন ভাবলাম জানিনা, কারণ আমি তো ভয় পাচ্ছিলাম না। এটা জাস্ট ভেবেছি, ওমনি আমার এত ভয় লাগতে শুরু করলো- কি বলবো! অপার্থিব একটা ভয়! কালো অন্ধকার একটা ভয়! আমি লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে ওয়াশরুমের দরজায় ধাক্কা দিতে লাগলাম, হায়াত বেরিয়ে এলো। মুখে শেভিং ফোম লাগানো। 

আমি ওকে জড়িয়ে ধরলাম, আমি থরথর করে কাঁপছিলাম, আমি শুধু বললাম, ‘আমার ভয় করছে’। ও (হায়াত) জিজ্ঞেস করলো, ‘কিসের ভয়’? আমি বললাম, ‘জানি না’। ও আর পিটি’তে গেল না সেদিন। আমি আর শুতেও পারলাম না। আমি কিছুই দেখিনি, কিছুই শুনিনি। শুধু একটা শীতল ভয়ের স্রোত আমার শরীর দিয়ে বয়ে গেল। পরদিন আমার স্পটিং শুরু হয়, ডাক্তার বেড রেস্ট দেন। পুরো প্রেগনেন্সি পিরিয়ড আমি বেড রেস্টেই থাকি। পাঁচ মাসের সময় আমি হসপিটালাইজড হই, আড়াই মাস থাকি হসপিটালে। 

Then I lost my baby... it was a 7 and half months pregnancy, I am not relating the two incidents, but I got scared that night and I still don’t know the reason.

লেখক- শিক্ষক, স্কলাস্টিকা স্কুল, ঢাকা।

এনএস/


** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।
Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি