এমন জন্মদিন চাই না!
প্রকাশিত : ১৪:১৯, ১৩ এপ্রিল ২০২১
মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছিলাম গত বছর ১০-২৯ মে। এখন অবশ্য মৃত্যুকে পরোয়া করি না। তবে ভয় পাই সামান্য, যদি আবার করোনাক্রান্ত হই! তাহলে কি হবে? মরে যাবো তাতে কোনও আফসোস নেই। থেকে যাবে সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার কিছু বেদনা। মা-বাবা, শ্বশুড়-শাশুড়ী, কত বন্ধু-স্বজন, আপনজন, প্রিয়জন, স্ত্রী-পুত্র, কন্যা ইত্যাদি।
করোনাভীতি আমার পিছু ছাড়ছে না। আজ রিক্সায় ওঠামাত্রই রিক্সাচালক পর পর দুটি হাঁচি দিল। মাস্কবিহীন হাঁচি! মুহূর্তেই নেমে গেলাম রিক্সা থেকে। উঠলাম আরেকটায়। এটাই হয়তো মৃত্যুর তাড়া! মৃত্যু মানুষকে তাড়া করছে প্রতি মুহূর্তে। আজরাঈল হয়তো নাসিকাতেই বসে আছে সারাক্ষণ। এরই মধ্যে কেটে যাচ্ছে সময়। খাচ্ছি, ঘুমাচ্ছি, দৌড়াচ্ছি। কিন্তু থামছি না। মৃত্যু ছাড়া কেউই থামাতেও পারবে না। বাস্তবে করোনা আমাদের থামাতে পারে নি। শুধু জীবন যাপনের ধরনটা পাল্টে দিয়েছে মাত্র।
আজ ১২ এপ্রিল। এটাই আমার জন্মদিন। স্যারদের দেয়া হোক আর মায়ের দেয়া হোক, আমার জন্মদিন কিন্তু একটাই। তবে জন্মসাল দুইটা! কাগজপত্র (এনআইডি) বলছে, জন্মসাল ১৯৮৪। আর বাস্তবতা বলছে, জন্মসাল ১৯৮০। এটা নিয়ে নানা বিপত্তিও আছে। আমার ছোট ভাইকে এনআইডিতে দেখানো হয়েছে আমার থেকে দুই বছরের বড়। এটা হাস্যকরও বটে।
যাক গে, বিষয় সেটা না। আসল বিষয় হলো- বয়স হচ্ছে একটা সংখ্যা মাত্র। পৃথিবীটা খুবই সংক্ষিপ্ত। মানুষের জীবনটা আরও ছোট্ট। বাস্তবে আমার বয়স এখন ৪১। গড় আয়ু অনুযায়ী হয়তো বাঁচবো আরও ৩০ বছর। আর যদি করোনার মতো মহামারী বার বার আসতে থাকে। তাহলে তো বেঁচে থেকেও লাশ হয়ে থাকতে হবে। যেমন- এখন প্রতিটি মানুষ যেন মৃত্যু আতঙ্কিত লাশ।
যাই হোক, ক্ষুদ্র এই মানুষটির জন্মদিনে অসংখ্য মানুষ, স্বজন, বন্ধু, সহকর্মী, প্রিয়জন দেশ-বিদেশ থেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সবার শুভেচ্ছার জবাবও হয়তো দিতে পারিনি। অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই আপনাদের ভালবাসার। আল্লাহ সবাইকে নিরাপদ রাখুন। কেটে যাক করোনার ভয়াবহতা। পৃথিবী ফিরে পাক তার আসল চেহারা। মঙ্গল হোক সবার।
আজকের এই দিনে আবারও বলি- এমন জন্মদিন চাই না কখনোই! শান্ত হোক পৃথিবী! কেটে যাক করোনাভীতি।
এনএস/
** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।