ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

সুবর্ণজয়ন্তী, ভারতের রাষ্ট্রপতির আগমন, কিছু প্রসঙ্গকথা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:৫৮, ২০ ডিসেম্বর ২০২১ | আপডেট: ১৫:১২, ২০ ডিসেম্বর ২০২১

বাঙালি জাতির মুক্তি আন্দোলনের মহানায়ক, ইতিহাসের রাখালরাজা, বিশ্বের লাঞ্ছিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষের মহান নেতা, বাংলা ও বাঙালির হাজার বছরের আরাধ্য পুরুষ, বাঙালির নিরন্তর প্রেরণার চিরন্তন উৎস, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী বাংলাদেশের এক গৌরবান্বিত অধ্যায়।

স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের স্বর্ণপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মের শতবর্ষ উদযাপনের সাক্ষী হওয়া একটি অনবদ্য ব্যাপার। আমরা যারা স্বাধীনতা পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশের সন্তান তাদের জন্য মুক্তিযুদ্ধের অনুভূতি পাওয়ার বিকল্প হল স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ইত্যাদি দিবস উদযাপনের আবেশে জড়ানো। বাংলাদেশের স্বর্ণপুরুষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন প্রচ্ছন্নভাবে আমাদেরকে সেই আবেশ এরই অনুভূতি দিয়েছে। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষ্যে আয়োজিত সুবর্ণজয়ন্তী দু’টির যোগসূত্র ২০২১ সালকে করেছে স্মরণীয় এবং আমাদের বাংলাদেশীদের করেছে মহিমান্বিত।    

আমাদের সরকার কর্তৃক ঘোষিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী হলো ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর এই নয়মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছরপূর্তি পালনের জন্য একটি বার্ষিক পরিকল্পনা। সরকার ২৬ মার্চ ২০২১ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের ঘোষণা দেয়। যা অতি ধুমধাম এবং বর্ণাঢ্য আয়োজনের ভিতর দিয়ে সমাপ্তির পথে। 

প্রসঙ্গক্রমেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের প্রেক্ষাপট জানা জরুরি। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের সেই ভয়াল রাতে পাকিস্তানের বর্বর সেনাবাহিনী রাজধানী ঢাকাসহ সমগ্র বাংলাদেশে গণহত্যা চালায়।

সেই রাতে এই গণহত্যায় শুধুমাত্র ঢাকাতেই ৬ থেকে ৭ হাজার সাধারণ মানুষ প্রাণ হারায়। বাংলাদেশে এই দিনটি জাতীয় গণহত্যা দিবস নামে পরিচিত। সেই দিন রাত ১২টার পর (২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করায় ১৯৭২ সাল থেকেই বাংলাদেশ ২৬শে মার্চকে ‘স্বাধীনতা দিবস’ হিসাবে পালন করে আসছে। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করে। এই দিনটি ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশ বিজয় দিবস হিসাবে পালন করছে। ২০২১ সালে স্বাধীনতার ঘোষণা ও মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের ৫০ বছর পূর্ণ হয়। তাই স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০২১ সালকে ‘সুবর্ণজয়ন্তী’ হিসাবে পালন করা হয়। 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারের মধ্যে ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে সামনে রেখে ‘রূপকল্প ২০২১’ ঘোষণা করে, যেখানে ২০২১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল, ডিজিটাল ও আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।

একুশ শতকের ২০২১ সালে সুবর্ণজয়ন্তীর সঙ্গে বাংলাদেশের স্বর্ণপুরুষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘মুজিব বর্ষ’ও পালিত হয়। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানগণ বছরজুড়ে উদযাপিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ২০২১ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত চলমান মুজিব বর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সম্মিলিত অনুষ্ঠান 'মুজিব চিরন্তন'-এ যোগ দিতে ১৭ মার্চ বাংলাদেশে আসেন মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ; ১৯ মার্চ বাংলাদেশ সফর করেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপাকসে; ২২ মার্চ বাংলাদেশ সফর করেন নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী; ২৪শে মার্চ বাংলাদেশ সফর করেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ড. লোটে শেরিং এবং স্বাধীনতা দিবসের দিন ২৬ মার্চ বাংলাদেশ সফর করেন আমাদের সোনালি বন্ধু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান, বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ এবং বৈশ্বিক নেতারা অভিনন্দন বার্তা পাঠান এবং বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বর্ষ জুড়ে চলা কর্মকাণ্ডের সমাপ্তি হয় বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী পালনের মাধ্যমে। কেননা, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্থান সেনাবাহিনী ভারত-বাংলাদেশ যৌথবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করে। যার ৫০ বছর পূর্ণ হয় ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে। এই দিনকে সামনে রেখে ব্যপক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। এই কর্মসূচীর অংশ হিসাবে ১৫ ডিসেম্বর তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা আসেন বাংলাদেশের পরম বন্ধু ভারতের ১৪তম রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ। ১৫ ডিসেম্বর তিনি জাতীয় স্মৃতিসৌধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে গিয়ে বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে উপস্থিত থেকে রাম নাথ কোবিন্দ বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, রাশিয়া ও মেক্সিকোর সেনাবাহিনীর এক সামরিক কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করেন। 

এবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী দুটি উৎসব বিজয় দিবস উদযাপনে নতুন মাত্রা যোগ করে। গত বৃহস্পতিবার ১৬ই ডিসেম্বর দেশি-বিদেশি অতিথিদের অংশগ্রহণে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজন করা হয়েছিল ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ শিরোনামের বিশেষ অনুষ্ঠানমালার। অনুষ্ঠানের সম্মানীয় অতিথির বক্তব্য দেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ। অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের হাতে বিশেষ শ্রদ্ধা স্মারক ‘মুজিব চিরন্তন’ তুলে দেয়া হয়। 

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানের সমাপনী অংশে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ আশ্বস্ত করেন যে  মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সমর্থন থাকবে আজীবন। গত  ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশে প্রবাসী ভারতীয় এবং ঢাকায় ‘ভারতীয় বন্ধুদের’ জন্য আয়োজিত সোনারগাঁও হোটেলে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রামনাথ কোবিন্দ বলেন, “বাংলাদেশে আমাদের বন্ধুদের আমি আবারও আশ্বস্ত করছি, ভারত আপনাদের অসাধারণ আন্তরিকতা এবং বন্ধুত্বকে মূল্যায়ন করে। আমরা ঘনিষ্ঠভাবে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই। উন্নয়নের মধ্য দিয়ে যৌথ সমৃদ্ধি অর্জন এবং আমাদের জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে চাই।”

তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে আরও বলেন, “বাংলাদেশের যে মৌলিক চেতনা, একটি প্রগতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক, গণতান্ত্রিক ও সম্প্রীতির সমাজ গড়ে তোলা, সেই মূল্যবোধকে এগিয়ে নেয়া– তার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু তনয়া। আমি মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেছি, ভারত এমন একটি বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে যাবে, যে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে।”

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তির এই বছরে ঢাকায় আসতে পেরে নিজের আনন্দ ও উল্লাসের কথা অকপটে স্বীকার করেন ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান। তিনি তৃপ্তির স্বরে বলেন, বাংলাদেশের মানুষের উষ্ণ ভালোবাসা এবং আতিথেয়তা তার হৃদয় ছুঁয়েছে। 
কোভিড-১৯ মহামারি শুরুর পর এটাই ছিল রাম নাথ কোবিন্দের প্রথম বিদেশ সফর। আর বাংলাদেশে এই সফর হলো এমন এক বছর, যখন ভারত যৌথভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার এবং তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে। স্বৈরশাসকের হাত থেকে দেশকে স্বাধীন করার জন্য এ দেশের মানুষ যে বিপুল ত্যাগ স্বীকার করেছে, সেজন্য শ্রদ্ধা জানান ভারতের রাষ্ট্রপতি। ভয়ঙ্কর প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে থাকার, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অদম্য সাহসের জন্য বাংলাদেশের মানুষকে অভিনন্দনও জানান তিনি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করা বাংলাদেশি ও ভারতীয় শহীদদের স্মৃতির প্রতিও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাম নাথ কোবিন্দ।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কোবিন্দ বলেন, “বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ ঢাকায় যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের জনগণ যে নৃশংসতা ও গণহত্যার মুখোমুখি হয়েছিল এবং নৃশংস পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত ছিল সেইসব স্মৃতি ছিল খুবই নির্মম এবং লোমহর্ষক। আজ যেমন আপনাদের দেশ এই অঞ্চলে প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের মডেলে পরিণত হয়েছে, তেমনি বিশ্ববাসীর কাছে প্রমাণিত হয়েছে যে, বাংলাদেশের জনগণের লড়াই ন্যায্য ছিল। এ লড়াই ছিল মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য এবং বাংলাদেশের অভ্যুদয় ছিল প্রকৃতপক্ষে পেশিশক্তিকে পরাজিত করে অধিকারের জয়।”

রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ বলেন, “ভারতীয়দের হৃদয়ে বাংলাদেশের জন্য ‘একটি সবিশেষ স্থান’ রয়েছে। দুই দেশের মানুষে মানুষে রয়েছে বহু পুরনো আত্মীয়তা, রয়েছে ভাষা আর সংস্কৃতির প্রাচীন বন্ধন। মুক্তিযুদ্ধের পর, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বড় ধরনের আর্থ-সামাজিক রূপান্তরের মধ্যদিয়ে গেছে। ভারতও এই সময়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। আমাদের দুই দেশের জনগণের মধ্যে যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক যোগসূত্র তৈরি হয়েছে, তাও প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের এই যৌথ গল্পে ভূমিকা রেখেছে।”

রামনাথ কোবিন্দ বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিপথ যে পরস্পর সংযুক্ত, সম্পদ ও অভিজ্ঞতার বিনিময়ই যে টেকসই উন্নয়নের মূলমন্ত্র, দুই দেশের নেতৃত্বই তা জানে। 

ভারতের রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যের শেষাংশে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক জোরদার করার সম্ভাব্য বেশকিছু ক্ষেত্রের অবতারণা করেন। 

তিনি বলেন, “পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও জোরদার করার বিরাট সম্ভাবনা দেখছি আমি। এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন এবং প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য আঞ্চলিক যোগাযোগ ও সমন্বয়ের গুরুত্বের বিষয়ে ভারত সচেতন। এই চেতনার আলোকে, একটি শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ হয়ে ওঠার যাত্রায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিয়ে যেতে, বৃহত্তর সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় অংশীদার হতে ভারত অঙ্গীকারাবদ্ধ।“

তিনি দুই দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে, বিশেষ করে বাংলাদেশ এবং ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক যোগাযোগকে নতুন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগটি কাজে লাগানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন। 

ভারত ও বাংলাদেশ- দুই দেশই যে মোট জনসংখ্যায় তরুণ কর্মীবাহিনীর সংখ্যাধিক্যের সুবিধা ভোগ করছে, সে কথা তুলে ধরে এর  সুফল কাজে লাগাতে আরও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ। 

তিনি বলেন, “এই অনন্য বছরে, মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তী, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং আমাদের বন্ধুত্বের ৫০তম বার্ষিকী এবং সেইসঙ্গে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন করার সময়ে, আসুন আমরা আমাদের জাতির স্থপতিদের স্বপ্ন পূরণের জন্য নিজেদেরকে পুনরায় উৎসর্গ করি।”
তিনি জোরালভাবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন , ১৯৭১ সালে রক্ত ও আত্মত্যাগের মধ্যদিয়ে তৈরি হওয়া বাংলাদেশ এবং ভারতের বন্ধন ভবিষ্যতেও দুই দেশকে একই বন্ধনে গেঁথে রাখবে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, মুজিব শতবর্ষ এবং বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের ৫০-তম বর্ষে আমাদের সকলের আকাঙ্ক্ষাও ভারতের রাষ্ট্রপতির আকাঙ্ক্ষার ন্যায় সুখি, সমৃদ্ধ এবং উন্নত সোনার বাংলাদেশ গড়া যেখানে আমাদের প্রতিবেশি পরম বন্ধু ভারতের সহযোগিতা এবং সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক একান্তভাবে কাম্য।    

লেখক: রাহুল চন্দ্র সাহা, প্রভাষক, আইইআর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।


** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।
Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি