অন্যের বাড়িতে গিয়ে টেলিভিশন দেখতাম: আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
প্রকাশিত : ১৫:১৫, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১৬:০০, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ৭৯তম জন্মদিনের অনুষ্ঠান। জন্মদিনে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মী ও ভক্ত-অনুরাগীরা। তাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের হুবহু বক্তব্যের কিছু অংশ পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো।
আমার জীবন কেমন অস্বচ্ছল ছিল একটু বলি। আমার স্ত্রীকে একজন বলেছে যে আপনার হাসবেন্ডকে অমুক জায়গায় দেখলাম। তখন আমার স্ত্রী বলছে যে আপনি অন্য কাউকে দেখেছেন। আমার হাসবেন্ডকে দেখেন নাই। কেন দেখি নাই? উত্তরে স্ত্রী বলছে, অতদূর যেতে গেলে যে পরিমান টাকা দরকার, সে টাকা তাকে দেওয়া হয়নি।
তবে একেবারে অস্বচ্ছল জীবনে কিছু চাপকানিও আছে। আমার এক আত্মীয়া হঠাৎ একদিন জিজ্ঞেস করলেন যে এবার ঈদে বউকে কি দিলি? আমি উত্তরে গর্বের সঙ্গে বল্লাম যে একটা শাড়ী দিয়েছি। জিজ্ঞেস করলেন দাম কত? আমি বল্লাম ৩৫ টাকা। শুনে উনি বিমর্শ হয়ে গেলেন। মাত্র ৩৫ টাকার শাড়ী দিলি! আমি বল্লাম আরে বাবা আমার বেতন-ই তো মাত্র ৩০০ টাকা। ৩০ টাকা মানে তো ১৩ শতাংশ। তার ধারণা যে আমি যেন স্ত্রীর শাড়ী কেনার জন্যেই জন্মগ্রহণ করেছি। তখন তো আর বোনাস ছিল না। তখন ৩০ টাকার বেশি দামের শাড়ী কি না খেয়ে দেবো নাকী?
তারপরে করি টেলিভিশন। তখন সারাদেশ টেলিভিশনে আমার প্রগ্রামে আনন্দ পেয়ে গেছে। এতই আনন্দ পেয়ে গেছে যে, শেষ পর্যন্ত টেলিভিশনে জাতীয় পুরস্কার ছিল না। সেই জাতীয় পুরস্কার ইন্ট্রোডিউস করে আমাকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। জাতীয় পুরস্কার দেওয়ার পরও ৭ বছর পর্যন্ত আমার ঘরে টেলিভিশন ছিল না। আমি নিজে অন্যের বাড়ীতে গিয়ে টেলিভিশন দেখতাম। আমাদের কলোনীর মধ্যে বিরাট উচু স্থানে টেলিভিশন বসানো হতো। চারপাশের লোক দেখতো আর আমি পিছনে বসে বসে দেখতাম। টেলিভিশন না থাকার কারণে আমি যখন জাতীয় পুরস্কার পেলাম আমার দুই মেয়ে বুঝতে পারলো না, যে তাদের বাবা জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। এভাবেই যে কত রকম দু:খ দারিদ্র সৈহ্য করতে হয় মানুষকে।
অনুলেখক-রিজাউল করিম
আরকে//
** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।