মুজিববর্ষের শপথ হোক শুদ্ধাচার-শিষ্টাচার
প্রকাশিত : ২০:০৬, ১৭ মার্চ ২০২০ | আপডেট: ২০:০৮, ১৭ মার্চ ২০২০
মুজিববর্ষের শপথ হোক শুদ্ধাচার-শিষ্টাচার
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশ এক অবিচ্ছেদ্য নাম। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। মানবদরদী ও অধিকার আদায়ে আপোষহীন এই মহাপুরুষের নেতৃত্বে অধিকারবঞ্চিত অসহায় বাঙালি জাতি স্বাধীনতা লাভ করে। আজ তাঁর জন্ম শতবর্ষ। অর্থাৎ বেঁচে থাকলে আজ তাঁর বয়স হতো ১০০ বছর।
বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বাধীন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। তিনি স্বপ্ন দেখতেন একদিন পূর্ববাংলা স্বাধীন হবে, বাঙালি জাতি অন্যতম শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে পৃথিবীর বুকে নিজস্ব একটি আসন তৈরি করবে। যেখানে থাকবে না ক্ষুধা-দারিদ্র্য, শোষণ, বঞ্চনা আর বৈষম্য। স্বাধীনতা অর্জন হলেও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রূপান্তরের আগেই স্বাধীনতা বিরোধীরা সপরিবারে তাঁকে হত্যা করে। কিন্তু দেশ আজ বঙ্গবন্ধুর সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে তাঁরই কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরেই। অন্য এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আজ বিশ্ব মানচিত্রে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। তিনি বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করতে ভিশন ২০২১ এবং ভিশন ২০৪১ ঘোষণা করেছেন।
একসময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারেরা বাংলাদেশকে বলেছিলেন তলাবিহীন ঝুড়ি। আজ তাদের মুখেই প্রশংসার ফুলঝুড়ি। এই সেদিনও বাজেট তৈরির সময়ে বিদেশি সাহায্যের জন্য নির্ভর করতে হতো। আর এখন বাজেট তৈরি হচ্ছে নিজেদের অর্থে। পদ্মা সেতুর ন্যায় বড় বড় প্রকল্প হচ্ছে সম্পূর্ণ নিজেদের টাকায়। বলা যায়, উন্নয়ন অগ্রগতির মহাসড়কে। নিজেদের অর্থ ব্যয়ে একপ্রকার অর্থনৈতিক বিপ্লব হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের যে হিড়িক পড়েছে, তার প্রতিফলন চোখের সামনেই দৃশ্যমান হবে।
বীরের জাতি বাঙালী। পলিমাটি সমৃদ্ধ উর্বর এদেশ। বলা হয়, এ মাটিতে একটা বীজ পড়লেই গাছ হয়ে ওঠে। সম্পদে সমৃদ্ধ এই বাংলাকে ইংরেজরা লুট করেছে দুইশ’ বছর। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর পাকিস্তান স্বাধীনতার নামে নতুনভাবে শুরু করে বাঙালি শোষণ। বঙ্গবন্ধু প্রথমেই বুঝতে পারেন, বাঙালিরা কখনো পাকিস্তানিদের শাসনে নিরাপদ নয়। বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস বিদ্রোহ নতুন কিছু নয়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, শোষণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে বাঙালি সব সময় এগিয়ে। অনেক সময় কোনও একজন ব্যক্তির মধ্য দিয়ে সে জাতির অতীতই শুধু নয়, কথা বলে ওঠে সেই জাতির অগ্রগতির নিশানা। বঙ্গবন্ধু সে রকমই একজন মানুষ ছিলেন। তিনি স্বচ্ছ মনের মানুষ, সৎ নেতা ছিলেন। দেশ ও মানুষকে তিনি হৃদয়ে ধারণ করে একজন আত্মত্যাগী নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হন। ছাত্রজীবন থেকে যে শিক্ষা ও দীক্ষা তাঁর জীবনকে আলোকিত করে তোলে, তার শিখা চিরন্তন করে রেখে গেছেন তিনি। তাঁর জীবনের বিভিন্ন ঘটনায় আমরা দেখে নানামুখী গুণে সমৃদ্ধ একজন মানুষ।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বের কাছে এখন বাংলাদেশ পরীক্ষিত উদাহরণ। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল মানুষের জীবনেও পড়ছে। এ সময়ে আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে দ্রুত বদলে যাওয়ার উত্তাপ লেগেছে। জীবন যাত্রার মান বাড়ার ফলে আমরা নিজেদের অনেক ঐতিহ্য আভিজাত্যও হারিয়ে ফেলছি। পারিবারিক শিক্ষা-দীক্ষা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানুষ বানানোর পরিবর্তে শুধু সনদ অর্জনই অন্যতম বিষয় হয়ে উঠেছে।
আজ যদি সমাজের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো দেখি, তাহলে একটু অবাক হতে হয়। অনিয়ম দুর্নীতি, অনৈতিক কাজ আমাদের তরুণদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে। দেশে মসজিদ, মন্দির বেড়েছে। সেন্ট্রাল এয়ারকন্ডিশন মসিজদে জায়গা হয় না। কিন্তু মানুষের গুণগত মান কী বেড়েছে বা অপরাধ-অপকর্ম কী কমেছে? এর অর্থ হচ্ছে সমাজে নীতি নৈতিকতা চর্চা বাড়ছে না বা হারিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ প্রতিযোগিতা করে যেন তেনভাবে টাকা আয় করবো। তারপর নামাজ পড়ে, হজ করলে আল্লাহ মাপ করে দিবেন এটাই আমাদের বিশ্বাস। কিন্তু প্রকৃত অর্থে ধর্মের ফলিত রূপ হচ্ছে শুদ্ধাচার, আর অধর্মের ফলিত রূপ হচ্ছে দূরাচার। মানুষের আচারই বলে দিবে সে ধার্মিক না অধার্মিক। আসলে ধার্মিক যেমন দূরাচারী হতে পারে না, তেমনি দূরাচারীও কখনও ধার্মিক বলে গণ্য হতে পারে না। একইভাবে যেন তেনভাবে টাকা আয় করে বিদেশে পাচারকারীও কখনও দেশপ্রেমিক হতে পারে না।
বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শের অন্যতম প্রধান উপাদান ছিল মানবতা। ১৯৭২ সালের ৮ অক্টোবরে পিজি হাসপাতালে তিনি তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, ‘আপনাদের মানবতাবোধ থাকা দরকার, মনুষ্যত্ব থাকা দরকার, সততা থাকা দরকার- না হলে কোনো জাতি কোনও দিন বড় হতে পারে না।’ তাঁর সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু ছিল মানবতাবাদ ও সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। ১৯৭২ সালের আগস্ট মাসে ছাত্রলীগের সম্মেলনে স্পষ্টভাবে তিনি রাজনৈতিক দিক-দর্শন দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘যতদিন এ দেশের দুঃখী মানুষ পেট ভরে খেতে না পারে, যতদিন অত্যাচার ও অবিচারের হাত থেকে তারা না বাঁচবে, যতদিন না শোষণমুক্ত সমাজ হবে, ততদিন সত্যিকারের স্বাধীনতা আসতে পারে না।
বঙ্গবন্ধুর চরিত্রের একটি অন্যতম বিরাটত্ব তাঁর উষ্ণ হৃদয়ের ভালোবাসা থেকে কেউই বাদ যায়নি। ব্যক্তিগত জীবনে সরল সহজ সুস্থ চিন্তা ও পূর্ণ সততার অধিকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষের কাছে আসার সম্মোহনী ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। স্মরণশক্তি ছিল অসাধারণ।
আমরা যদি বঙ্গবন্ধুর জীবন দেখি, তাহলে পরিষ্কার হয়ে যাবে সত্যিকারের দেশপ্রেম কাকে বলে। সততা, নৈতিকতা, শুদ্ধাচার, দেশপ্রেম সকল দিক থেকে বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিরল দৃষ্টান্ত। তিনি সোনার বাংলাদেশ বানাতে চেয়েছিলেন, ঘাতকেরা সেটা করতে দেয়নি। আজ তাঁর মেয়ে যোগ্য উত্তরসূরী, সমৃদ্ধ অন্য এক সোনার বাংলাদেশ গড়ছেন। এখন দরকার সোনার মানুষ, সৎ মানুষ। আর না হলে এক অভিশপ্ত দেশে পরিণত হবো আমরা।
এখানে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের লেখা থেকে উদ্ধৃতি- ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মের শতবর্ষের শুভক্ষণে আমরা তাঁর উত্তরাধিকার নিয়ে ভাবব। তাঁর চিন্তা-আদর্শ-কাজের পুনঃপ্রয়োগ ও চর্চা হতে পারে ওই উত্তরাধিকারের একটি ভিত্তি। তিনি তাঁর আত্মজীবনীর একটি অংশ লিখে যেতে পেরেছিলেন এবং এর নাম দেয়া হয়েছে অসমাপ্ত আত্মজীবনী। তাঁর অনেক কাজও অসমাপ্ত রয়ে গেছে। দেশে এখন বৈষম্য প্রকট, দুর্নীতি সর্বগ্রাসী। বিচার ও নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে মানুষের সংশয়, শিক্ষার বিস্তার ঘটেছে, কিন্তু মানে উন্নতি নেই। মত প্রকাশের পথে অনেক বাধা। এগুলো বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিপরীত। বঙ্গবন্ধুর যারা উত্তরাধিকারী হবেন, তাদের এ সবের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। শেষ পর্যন্ত আমাদের ভরসার জায়গাটা সেই তারুণ্য। আমি এই তারুণ্যকে প্রতিদিন সামনে থেকে দেখি, এর সংস্পর্শে এসে উজ্জীবিত হই। আমার বিশ্বাস এই তরুণরাই বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত উত্তরাধিকারী হবে। হচ্ছেও। বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার ধারণ ও বাস্তবায়ন কথায় নয়, কাজে হবে। কাজটা কঠিন, কিন্তু করতে হবে। আমি আরও নিশ্চিত, এ ক্ষেত্রেও এ তরুণদের সাফল্য বাংলাদেশকে প্রতিবছর বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার আরও কাছে নিয়ে যাবে।’
তাই আজ আমাদের নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর সমৃদ্ধ জীবন সম্পর্কে জানতে হবে। কীভাবে তিনি বেড়ে উঠেছিলেন, তাঁর স্বপ্ন, চিন্তা, কাজ সবকিছু বিস্তারিতভাবে জানাতে হবে। একসঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহ্য, পারিবারিক-সামাজিক বন্ধন সবকিছুই। অর্থাৎ আমরা এক মহান জাতি ছিলাম, আমাদের এক মহান ইতিহাস ছিল, একজন মহান নেতা আমাদেরকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন।
আমরা যদি বঙ্গবন্ধুর ছাত্র জীবন দেখি, রাজনীতি জীবন দেখি, রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দেখি তাহলে পরিপূর্ণ একজন শুদ্ধাচার ভালো মানুষের চিত্র ষ্পষ্ট হয়ে উঠবে। জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু শুদ্ধাচার তুলে ধরতে হবে বেশি করে। আমাদের জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজের গতি বাড়ানোর পাশাপাশি সেবার মান উন্নয়নে সরকার এ নীতির আওতায় বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছে। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যারা উত্তম সেবা দেন, তাদের প্রতিবছর একবার শুদ্ধাচার পুরস্কার দেয়া হয়। এতে কতটুকু শুদ্ধাচার বাস্তবায়ন হবে সে বিতর্কে আজ যাবো না। তবে ছোট ছোট স্কুলছাত্রদের যদি এই চর্চায় আনা যায় তাহলে ছোটকাল থেকেই তারা রপ্ত করতে সক্ষম হবে।
আমার ভাবনা জন্ম শতবার্ষিকীর অন্যতম উদ্যোগ হওয়া দরকার ‘বঙ্গবন্ধুকে জানো, বাংলাদেশকে জানো’ ক্যাম্পেইন। বছরব্যাপী দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। বঙ্গবন্ধুর শিষ্টাচার, শুদ্ধাচার, নীতি-নৈতিকতা ও বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশেষ লেকচার চালু করা যেতে পারে।
বিভিন্ন সময়ে লেখা বঙ্গবন্ধুর চিঠিগুলো মন দিয়ে পড়লে মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন এক অনন্যসাধারণ ব্যক্তিত্বের অবয়ব ফুটে উঠে। তাঁর রাজনৈতিক চিঠিতে দেশ ও জনগণের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা আর গভীর দেশপ্রেমের পরিচয় পাওয়া যায়।
আজকে এখানে জাপানের শিক্ষা ব্যবস্থায় নীতি নৈতিকতার শিক্ষা বিষয়ে কয়েকটি কথা বলেই শেষ করবো। শিল্পোন্নত ও অর্থনীতিতে বিশ্বের ২য় বৃহত্তম জাপানের শিক্ষা ব্যবস্থায় পরীক্ষা পদ্ধতিতে নেই চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত। এ সময়ে তারা শুধু শিষ্টাচার ও নৈতিকার শিক্ষা দিয়ে থাকে। জাপানের অপরাধ শতকরায় শূন্য। জাপানিদের এমন সুন্দর সমাজব্যবস্থার ভিত্তি হলো নৈতিকতা। যা দেশটির প্রতি নাগরিক স্কুল জীবনেই পেয়ে থাকে।
তাদের শেখানো হয় সামাজিকতা, ন্যায়-অন্যায়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি। সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট দিনে তারা সকলে মিলে শ্রেণি কক্ষ পরিষ্কার করে, টয়লেট, স্কুল প্রাঙ্গণের বাগান পরিষ্কার করে থাকে। তাদের স্কুলগুলোতে কোনও পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয় না। স্কুলগুলোর কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ার জন্য স্কুল প্রাঙ্গণে মিলনমেলার আয়োজন করে থাকে।
দিনের শুরুতে প্রধান শিক্ষক সবার আগে স্কুলে আসেন। তিনি স্কুল ফটকে দাঁড়িয়ে সব ছাত্র-ছাত্রীকে অভ্যর্থনা জানান। এতে শিক্ষার্থীরা সৌজন্যবোধ শিক্ষা পায়। ক্লাস শুরু হওয়ার ইঙ্গিতস্বরূপ এক ধরনের বিশেষ মিউজিক বেজে ওঠে। তখন সব ছাত্র-ছাত্রী দলবেঁধে ওয়াশরুমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে শ্রেণিকক্ষে ফিরে আসে।
জাপানের স্কুলগুলোতে একটি শিশু ভর্তি হওয়ার পর প্রথম তিন থেকে চার বছর পর্যন্ত তাকে তার কোনও গুণ বা দোষ দিয়ে বিচার করা হয় না, কিংবা কোনও মানদণ্ডের ভিত্তিতে তাকে ভালো বা খারাপের অংশে ফেলা হয় না। এই সময়ে তাকে ভালো-খারাপের ভেদাভেদ শেখানো হয়। কার সাথে কেমন ব্যবহার করা উচিত, কিভাবে কথা বলা উচিত সেগুলো সুন্দর করে শেখানোর দায়িত্বের সিংহভাগ স্কুলগুলোই গ্রহণ করে। তাছাড়া নিত্যদিনের কাজগুলো, যেমন জামাকাপড় পরা, নিজ হাতে খাওয়া, নিজের জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখা বা পরিপাটি থাকার শিক্ষাগুলো স্কুল থেকেই শেখে শিশুরা।
নীতি নৈতিকতাবান শুদ্ধাচারী মানুষই ভালো মানুষ। যা কিছু ভালো, যা কিছু কল্যাণকর তা-ই শুদ্ধ। যা কিছু মন্দ, যা কিছু অকল্যাণকর তাই অশুদ্ধ। যা কিছু সত্য, সুন্দর ও শুভ তা-ই শুদ্ধ। যা কিছু অসত্য, পঙ্কিল ও অশুভ তা-ই অশুদ্ধ। যা কিছু ন্যায় ও মানবিক তা-ই শুদ্ধ। যা কিছু অন্যায়, জুলুম ও অমানবিক তা-ই অশুদ্ধ। যা শুদ্ধ ও কল্যাণকর তা-ই ধর্ম আর অশুদ্ধ ও অকল্যাণকর তা-ই অধর্ম।
লেখক- সাংবাদিক
এনএস/
** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।