ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

করোনার মধ্যে ডেঙ্গুর উৎকণ্ঠা

এম এস দোহা

প্রকাশিত : ১৬:১৯, ২৭ এপ্রিল ২০২০ | আপডেট: ১৬:৩৮, ২৭ এপ্রিল ২০২০

এডিস মশা

এডিস মশা

চলমান করোনা আতঙ্কে দেশবাসী। চিকিৎসা সংকট এখনো কাটেনি। এ অবস্থায় আবার ডেঙ্গু নিয়ে শুরু হয়েছে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা। মশক বাহিনীর এ তৎপরতা রুখতে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে বেশি আতংঙ্কে আছেন নিম্ন আয়ের কর্মজীবি মানুষ। ঘরে বসে থাকায় একদিকে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট, অন্যদিকে করোনা-ডেঙ্গুর ভয়াবহতা। সবমিলে আতঙ্ক-উৎকণ্ঠায় দীন কাটছে তাদের।  

করোনা ভাইরাস একেবারেই নতুন। তাই এর প্রতিরোধ বা চিকিৎসা এখনো তেমন দৃশ্যমান হয়নি। তবে ডেঙ্গু নিয়ে আমাদের অবহেলাই অন্যতম কারণ। প্রথমত আমরা আমাদের চারপাশ পরিস্কার রাখলে মশার বিস্তার কমানো যায়। আবার সিটি কর্পোরেশনগুলো যথাসময়ে ঔষধ ছিটালেও মশার বিস্তার কমে। কিন্তু প্রয়োজনীয় বাজেট থাকার পরও কেন জানি আমাদের মেয়র বা কমিশনারগণ এ ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। 

উল্লেখ্য গত বছর ডেংঙ্গুর ভয়াবহরূপ দেখে দেশবাসী। যাতে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লক্ষ ১ হাজার ৩৪৫ জন। মৃত্যু ১৭৯ জনের। এ নিয়ে হয়েছে নানা নাটক। মশার অকার্যকর ঔষধ ক্রয়, মেয়র ও কাউন্সিলরদের সুখ নিদ্রা, আর এর সাথে মন্ত্রণালয়ের আমলাতান্ত্রিক বেড়াজালতো নতুন কিছু না। অনেক সুন্দর আদেশ উপদেশও শুনেছেন দেশবাসী। দক্ষিণ সিটির মেয়র বলেছিলেন, উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মশক বাহিনী তার এলাকায় বেড়াতে এসে তাণ্ডব চালিয়েছে। আবার কেউ কেউ বলেছেন লম্বা পায়জামা পাঞ্জাবী পরে মশকবাহিনীর মোকাবেলা করতে। আরো কত কি! অতচ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রোগ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আইইডিইসিআর তিন মাস পূর্বে এ ব্যাপারে সচেতন করেছিল। পরবর্তীতে জানা যায়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের র্শীষ কর্মকর্তা এই প্রতিষ্ঠানটির সতর্কতা গ্রহণতো দূরে থাকলো, তাদের চিনেন-ই-না।

করোনা সম্পর্কিত বিভিন্ন সাংবাদিক সম্মেলনে ইতোমধ্যে আইইডিসিআর এবং বিশেষজ্ঞরা আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর ভয়বহতা নিয়ে উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছেন। গত ৩ মাসে ২৭৩ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন অথচ ২০১৯ সালে এ তিন মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ৭১ জন। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি বছরে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব গত বছরের তুলনায় ৪ গুণ বেশি। গত ৩ ও ৭ এপ্রিল স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নিজেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মশার উপদ্রব বৃদ্ধিতে। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে এর কোন প্রভাব পড়েছে বলে মনে হয় না। পাড়া মহল্লায় এ নিয়ে কাউন্সিলরদের নেই কোন তৎপরতা। উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম মাঝে মাঝে কিছু টিভি ক্যামেরা নিয়ে মশক নিধনের কিছু কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেন। ব্যাস! আর দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনের এ নিয়ে তেমন তৎপরতা দৃশ্যমান হয়নি। তাই মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সমন্বয় সভা ও তৃণমূল পর্যায়ে মশকনিধন কর্মসূচিতে তার সম্পৃক্ততা নাই বললেই চলে।

লেখক- এম এস দোহা

অবশ্য সাইদ খোকনকে মনোনয়ন বঞ্চিত করে ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপসকে মেয়র নির্বাচন করায় তিনি কিছুটা অসন্তুষ্ট। সুতারাং এখন যা করার তাপসই করবেন। অবশ্য নির্বাচনী প্রচারনায় এ ধরনের জোরালো হুংঙ্কার ছিল তাপসের কন্ঠে। হয়তো চেয়ারে বসলে চেষ্টার ত্রুটি করতেন না। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার দুই মাসের মাথায়ও আইনগত জটিলতার কারণে চেয়ারে বসতে পারছেন না তাপস। কারণ সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের মেয়াদ-ই নাকি আগামী মে পর্যন্ত। তাই কর্মতৎপরতা দেখানোর জন্য ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপসকে অন্তত: আরো একমাস অপেক্ষা করতে হবে। অতচ চলমান করোনা সংকটে প্রশাসনিক স্থবিরতার সুযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করতে এই একমাস সময়ই যথেষ্ট।

উল্লেখ্য, সিটি কর্পোরেশনসহ তৃণমূল পর্যায়ে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থপনার তদারকীর দায়িত্বে রয়েছেন মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম। এক্ষেত্রে তার আন্তরিকতা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের বিষয়টি ইতিবাচক। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটছে দু’একটি সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদের কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে। তারা মাঝে মাঝে মন্ত্রীর চেয়ে নিজেদেরকে মহাশক্তিধর ভাবেন। প্রটোকলে মন্ত্রীর সমান মর্যাদা, হাফ শায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রধান নিবার্হীসহ অফুরান্ত সুযোগ-সুবিধা তাদের। তাই অনেক সময় মন্ত্রণালয়ের ডাকে সাড়া না দিয়ে তারা বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখান। যা সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তাবায়নের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।

ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের অনেক কাউন্সিলর নিজেদেরকে এমপি, মন্ত্রীর চেয়ে অনেক ক্ষমতাশালী মনে করেন। এলাকায় অঘোষিত সম্রাট তারা। চাঁদাবাজী, ফুটপাত দখল, বাড়ি দখল, টেন্ডারবাজী, মাদক সিন্ডিকেটসহ ক্যাসিনো কাণ্ডের মাধ্যমে অঢেল টাকা, সম্পদ, বিত্ত ও বৈভবের মালিক তারা। রাজকীয় কায়দায় জীবন যাপন তাদের। তাই নালা-নর্দমায় নোংরা পরিবেশে মশা মারা তাদের জন্য অনেকটা অস্বাভাবিক। বর্তমান করোনা আক্রান্তদের পাশে, লাশ দাফনের দায়িত্ব পালনে তাদেরকে পাওয়া যায় না। গরীব-দুঃখী নোংরা মানুষদের হাতের সাথে হাত মিলানো, তাদের পাশে দাঁড়ানোটা কাউন্সিলরদের জন্য বড্ড বেমানান। অধিকাংশ কাউন্সিলরের এই দৃষ্টিভঙ্গি ও তাদের জবাবদিহীতা না থাকার করণে জনগণের এই দূর্ভোগ। আবার দেশের বিভিন্ন স্থানে ইউপি মেম্বারদের চলমান চাল কেলেংকারীতে সরকার বিভ্রান্ত। তৃণমূল পর্যায়ে জনগণকে সেবা দিতে হলে সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যানদের কর্মকাণ্ড তদারকী ও পর্যবেক্ষণের বিকল্প নেই।

মূলত, ডেঙ্গু একটি প্রাচীন রোগ। এই রোগের প্রথম উল্লেখ পাওয়া গেছে চীনের চিকিৎসা সংক্রান্ত নথিপত্রে। সেখান থেকে জানা যায়, চীনে এই রোগটি ৯৯২ খৃষ্টাব্দে শনাক্ত করা হয়েছিল। কোন কোন গবেষক অবশ্য দাবি করেন, চীনে জিন রাজতন্ত্রের সময়কার (২৬৫-৪২০ খৃষ্টপূর্ব) নথিপত্রে এই রোগের উল্লেখ পাওয়া যায়। সেখানে অবশ্য একে উড়ন্ত পোকামাকড়ের কারণে 'বিষাক্ত পানির' রোগ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। তবে এই দাবি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

এই জ্বরকে শনাক্ত এবং ডেঙ্গু জ্বর বলে নামকরণ করা হয় ১৭৭৯ সালে। এরপরের বছর প্রায় একই সময়ে এশিয়া, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকায় ব্যাপকভাবে দেখা যায়। শরীরে ব্যথার কারণে তখন একে 'হাড়ভাঙ্গা জ্বর' বলেও ডাকা হতো। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মহামারী আকারে প্রথম ডেঙ্গু শনাক্ত হয় ১৯৫০ সালের দিকে ফিলিপিন্স এবং থাইল্যান্ডে। ১৯৭০ সালের আগে মাত্র নয়টি দেশে ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে একশোটির বেশি দেশে ডেঙ্গু জ্বর হতে দেখা যায়। বিশ শতকের শেষ ২৫ বছরে এই রোগটির ব্যাপকভাবে বিস্তার ঘটে।

এদিকে, বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গু জ্বর শনাক্ত হয় ২০০০ সালে। প্রথমে অবশ্য এই জ্বরটি ঢাকায় একসঙ্গে অনেকের হয়েছিল বলে এর নাম হয়ে যায় 'ঢাকা ফিভার'। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এটি ডেঙ্গু জ্বর বলে শনাক্ত করেন। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন একজন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্যে বলা হয়, বর্তমানে একজন ডেঙ্গু রোগী রাজধানীর বাইরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৯২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এদের মধ্যে ২৯১ জন চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছেড়েছেন। গত বছর দেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এ সময় ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে ১ লাখ ১ হাজার ৩৭ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের সাবেক পরিচালক ও আইসিডিডিআর,বির পরামর্শক ডা. মাহমুদুর রহমান বলছেন, 'সে সময় রোগটি ঢাকার বাসিন্দাদের মধ্যেই দেখা যেতো। কিন্তু মাত্র কয়েকমাস রোগটি থাকতো আর এবারের মতো এতো ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়েনি বলে আলোচনা ততোটা হতো না।' পরবর্তীতে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় রোগটির বিস্তার ঘটতে দেখা যায়।

চলমান করোনার প্রাদুর্ভাবে সরকারি ছুটি ঘোষণার পর থেকে বন্ধ রয়েছে রাজধানীর বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান। নির্মাণাধীন ভবন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সেসব স্থানে মশার ওষুধ ছিটাতে পারছেন না সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। তাছাড়া করোনার কারণে মশার ওষুধ ছিটানোর কাজও চলছে ঢিমেতালে। ফলে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস থেকে এডিস ও কিউলেক্স মশা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এব বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার জানান, বৃষ্টি হওয়ার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও নির্মাণাধীন ভবনের পাত্রে পানি জমে আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু মশার লার্ভা জন্ম নেবে। বন্ধ থাকার পরও সিটি করপোরেশন যেসব জায়গায় যেতে পারবে, সেখানে যাওয়া উচিত। নির্মাণাধীন ভবনের লিফটের গর্ত, বাস টার্মিনালগুলোতে পড়ে থাকা টায়ারে পানি জমে পরবর্তী সময়ে এডিস মশার জন্ম নেবে। এসব স্থানে সিটি করপোরেশনের কাজ করতে হবে। গত বছর প্রথমবারের মতো আমাদের গ্রামগুলোতেও আমরা ডেঙ্গু রোগী দেখেছি। তাই এ বছর প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়্যারম্যান ও ওয়ার্ড মেম্বার নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ নিতে হবে।

এদিকে, সরকার ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মশার আবাসস্থল বিনষ্টকরণ কার্যক্রম তদারকিতে উপ-সচিব ও নিম্ন পদের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধ সেল’ গঠন করছে। গত ২৬ এপ্রিল এ সেল গঠনের জন্য কর্মকর্তাদের নামের তালিকা চেয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

চিঠিতে বলা হয়, ‘গত ২১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়কের সভাপতিত্বে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং সংস্থার সঙ্গে এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মশার আবাসস্থল বিনষ্টকরণ কার্যক্রম মনিটরিং করতে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির সমন্বয়ে গত বছরের ন্যায় দুই সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণে ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধ সেল’ গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।’ -এ কার্যক্রমে সার্বিক সমন্বয়র জন্য সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তাদের নাম পাঠানোর বিষয়ে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

মশক নিধনে ও ডেঙ্গু মোকাবেলায় করনীয়-
১. মশার উৎপত্তিস্থল যেমন- শহরের খাল, নালা, দুই বাড়ির মধ্যবর্তী অপরিচ্ছনন্ন স্থান, কাঁচা বাজার, সরকারি অফিস ও আবাসিক স্থাপনা জরুরি ভিত্তিতে পরিচ্ছন্ন করতে হবে।

২. এডিস মশার বিস্তাররোধে অফিস ছুটিকালীন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের টয়লেটের কমোড অবশ্যই বন্ধ রাখতে হবে।

৩. নির্মাণাধীন ভবন এবং যেসব সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা নিজ উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখবে না বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার অভাবে লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া যাবে সেসব ব্যক্তি ও স্থাপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে আইন অনুযায়ী বার বার জরিমানা করতে হবে।

৪. প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। প্রয়োজনে প্রতি ওয়ার্ডে সাব-কমিটি গঠন করে তাতে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ২০ জন গণ্যমান্য ব্যক্তিকে অর্ন্তভূক্ত করে সামাজিক স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করতে হবে।

৫. মশকনিধন এবং পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতের স্বার্থে মন্ত্রণালয়, সব সিটি করপোরেশন, ঢাকা ওয়াসা সম্মিলিতভাবে কাজ করবে। সিটি করপোরেশনগুলো আগামী সাত দিনের মধ্যে নিজস্ব কর্মপরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে দাখিল করবে।

৬. সম্ভাব্য ডেঙ্গু মোকাবেলায় সম্মিলিত উদ্যোগ হিসেবে এলজিআরডি মন্ত্রীর নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থার দায়িত্বশীল প্রতিনিধিগণের সমন্বয়ে একটি জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হবে। ডেঙ্গু   মোকাবেলায় প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের করণীয় নির্ধারণ করে মন্ত্রীর স্বাক্ষরে একটি আধা-সরকারিপত্র পাঠানো হবে।

৭. কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একাধিক উদ্যোক্তা ও আমদানীকারককে কীটনাশক আমদানীর সুযোগ দিলে তা বাজারে সহজলভ্য হবে। এর ফলে মানুষ নিজ উদ্যোগে হস্তচালিত মেশিন দিয়ে নিজের আঙ্গিনার মশক নিধন করতে পারবে।

৮. সম্মিলিত উদ্যোগের অংশ হিসেবে দুই সিটি করপোরেশন, ক্যান্টনমেন্ট এলাকা এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ একযোগে মশক নিধন অভিযান শুরু করবেন। স্থানীয় সরকার বিভাগ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সময়সীমা নির্ধারণ করে দেবে।

৯. ঢাকার খাল ও নালাগুলো একযোগে পরিচ্ছন্ন করার স্বার্থে এবং স্থাপনাগুলো পরিচ্ছন্ন করতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, গণপূর্ত বিভাগ, রাজউক এবং জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দিতে হবে।

১০. বর্তমানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে দীর্ঘমেয়াদী ছুটির কারণে জনসাধারণ ও যানবাহনের চাপ কম আছে। এই সময় পুরো ঢাকা শহরকে শতভাগ পরিস্কার করার সুযোগ সিটি করপোরেশনকে নিতে হবে।

১১. স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের চলমান পরিচ্ছন্নতা অভিযান সরেজমিন পরিদর্শন করবেন।

লেখক- কলামিস্ট, ব্যবসায়ী।

এনএস/


** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।
Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি