ভাতাসহ চার বছর মেয়াদি কারিগরি প্রশিক্ষণ
প্রকাশিত : ১৫:০৪, ৫ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১২:২৮, ১৯ এপ্রিল ২০১৮
বৈশ্বিক শ্রম বাজারের প্রকৃতি ও চাহিদার কথা সামঞ্জস্য রেখে দেশের কারিগরি শিক্ষার সার্বিক মান উন্নয়নের লক্ষ্যে নানা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে সরকার। এর অংশ হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (স্টেপ) শীর্ষক এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করছে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর।
প্রতিষ্ঠানটি তিন ধরণের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণ ছয় মাস মেয়াদী, ডিপ্লোমা কোর্স চার বছর মেয়াদী এবং তিন দিনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও রয়েছে। যেটিকে অভিজ্ঞতা সনদও বলা হয়ে থাকে।
ডিপ্লোমা কোর্স-
কমপক্ষে এসএসসি পাশ করা যে কোন শিক্ষার্থী ভাতাসহ চার বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন- ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। ৯৩টি পলিটেকনিকে ১২টি বিষয়ে শিক্ষার্থীরা ডিপ্লোমা পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। প্রতিটি বিষয় ১২০ জন করে ভর্তির সুযোগ পাবেন। প্রতি বছরের শুরুতেই ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি নেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান-
সরকারের দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলের অংশ হিসেবে ও পেশাগত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের গুনগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। নির্বাচিত সরকারি-বেসরকারি ৯৩টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ইতোমধ্যে এক লাখ ১৬ হাজার ২৪৭ জন ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীকে মাসে ৮০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। নারী শিক্ষার্থী সবাই এ বৃত্তি পেয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগ: এ প্রকল্পে বাস্তবায়নের জন্য সরকারি ৪৯টি পলিকেটনিক শূন্য পদের বিপরীতে এক হাজার ১৭৩ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এদের দেশে-বিদেশে সাবজেকটিভ প্যাডাগোজি ফাউন্ডেশন ম্যানেজমেন্ট, প্রকিউরমেন্ট, এবং আর্থিক সহায়তায়সহ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে স্টেপের যোগাযোগ পরামর্শক মো. জিল্লুর রহমান একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, কারিগরি শিক্ষার মান বৃদ্ধি ও আর্থ-সামাজিকভাবে অনগ্রসর কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে এ ডিল্পোমা কোর্সের ব্যবস্থা করছে সরকার। এই প্রকল্পের অধীনে ৩৩টি পলিকেটনিকের মানোন্নয়নে প্রত্যেকে প্রতিষ্ঠানকেই সর্বোচ্চ সাত কোটি টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে। এমনকি ওয়ার্কশপ/ল্যাবরেটরির জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ও কম্পিউটার সরবারহ করা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, একদিকে যেমন বিনামূল্য শিক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে অন্য দিকে প্রতিটি শিক্ষার্থী প্রতি মাসে ৮০০ টাকা হারে বৃত্তি পাচ্ছে। এছাড়া ডিপ্লোমা শেষ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়।
যেসব বিষয়ের ডিপ্লোমা করা সুযোগ-
ইলেকট্রিক্যাল ইনস্টলেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স (কনস্ট্রাকশন), মোটরসাইকেল সার্ভিসিং, প্লাম্বিং,টেইলারিং অ্যান্ড ড্রেস মেকিং, ওয়েল্ডিং, ব্লক-বাটিক অ্যান্ড স্ক্রিন প্রিন্টিং, সুইং মেশিন অপারেশন, আইটি সাপোর্ট, সোলার ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেম, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং, গ্রাফিক ডিজাইন ও মোবাইল ফোন সার্ভিসিং বিষয়ে।
আবেদনের যোগ্যতা-
এসএসসি পাশ যে কোন শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারবেন। পরীক্ষার মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থী নির্বাচন করা হবে।
যেভাবে আবেদন-
আগ্রহী প্রার্থীদের সংশ্লিষ্ট আরপিএল অ্যাসেসমেন্ট কেন্দ্রগুলো থেকে বা প্রকল্পের ওয়েবসাইট (www.step-dte.gov.bd) থেকে নিবন্ধন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। নিবন্ধন ফরমে প্রার্থীর নাম, পিতা-মাতার নাম, স্থায়ী ঠিকানা, কর্মস্থলের ঠিকানা, পদবি, পছন্দের বিষয়, জন্ম তারিখ ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ করতে হবে। ফরমের সঙ্গে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র, পরীক্ষা পাসের সনদসহ লিখিত আবেদনপত্র প্রার্থীর নিকটস্থ বা পছন্দের কেন্দ্রের অধ্যক্ষ বরাবর জমা দিতে হবে।
বিস্তারিত জানতে-
স্টেপের ২০টি আরপিএল অ্যাসেসমেন্ট কেন্দ্রসহ বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করতে পারেন স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (স্টেপ), কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এফ-৪/বি, আগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকা, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা ১২০৭ এই ঠিকানায় অথবা ফোন করতে পারেন ০১৯৯২-০০৭১৩৭ এই নম্বরে। এ ছাড়া www.step-dte.gov.bd এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারেন।
এসএইচ/
আরও পড়ুন