জুলাই গণহত্যার বিচার ও রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের দাবি ছাত্রশিবিরের

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির জুলাই গণহত্যার বিচার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি এবং ফ্যাসিস্ট আমলে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ সকল রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

গতকাল বুধবার (২২ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, “২০০৮ সালে ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদের রাজত্ব কায়েম করে। জনগণের সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নিরস্ত্র মানুষের ওপর বর্বর গণহত্যা চালানো হয়। ছাত্রজনতার বীরত্বগাঁথা সংগ্রামে প্রায় দুই সহস্রাধিক শহীদ এবং অগণিত আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের রক্তের ওপর ভিত্তি করে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। তবে গণহত্যার বিচার সম্পন্নকরণে আমরা অন্তবর্তী সরকারের উদাসীনতা লক্ষ্য করছি। অপরাধীদের বিপুল অর্থের বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া এবং পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে।”

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ দেশপ্রেমিক আলেম ও রাজনীতিবিদদের হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এটিএম আজহারুল ইসলামকে ২০১২ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় এবং ভিত্তিহীন সাক্ষ্যের ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এই মামলায় একজন সাক্ষী ৭ কিলোমিটার দূর থেকে ঘটনাদর্শী দাবি করে, অপরজন নিজেকে ক্লাসমেট বললেও ডকুমেন্ট অনুযায়ী তিনি ভিকটিম কলেজ ছাড়ার দুই বছর পর ভর্তি হন, যা প্রমাণ করে মামলাটি মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

নেতৃবৃন্দ বলেন, “বিগত ১৬ বছর ধরে ছাত্রশিবির ছিল ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্মম নিপীড়নের লক্ষ্যবস্তু। হাজার হাজার মিথ্যা মামলা দিয়ে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছে। ঘরোয়া প্রোগ্রাম, মসজিদ, এমনকি নামাজরত অবস্থায়ও তুলে নিয়ে গুম-হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলে ১০১ জন শহীদ, সহস্রাধিক পঙ্গু এবং অসংখ্য নেতাকর্মী গুম হয়েছে। বর্তমানে ৭ জন ভাই গুম অবস্থায় রয়েছে এবং প্রায় ১১ হাজার মিথ্যা মামলা বলবত রয়েছে।”

নেতৃবৃন্দ হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের ৮ মাস অতিক্রান্ত হলেও আন্দোলনে অগ্রভাগে থাকা অংশিজনদের মিথ্যা মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। এটি জাতির জন্য লজ্জাজনক। আমরা অবিলম্বে পল্টন, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যাসহ সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত সম্পাদনের জোর দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে জুলাই গণহত্যার বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি, এটিএম আজহারের মুক্তি এবং ছাত্রশিবিরসহ সকল রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করা না হলে আমরা ছাত্রজনতাকে সাথে নিয়ে রাজপথে নেমে দাবি আদায় করতে বাধ্য হবো।”

এসএস//