প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ৭ প্রতিশ্রুতির আশা বিএনপির
প্রকাশিত : ১৫:৪৮, ৭ মার্চ ২০১৮
৭ মার্চ উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে সাতটি প্রতিশ্রুতি আশা করছে বিএনপি। আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত এক যুব সমাবেশে এ কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই যুব সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ৭ মার্চের জনসভা থেকে আমি আশা করি, দেশের মানুষের যে প্রত্যাশা, তা পূরণ কল্পে প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি কথা বলবেন। আমরা আশা করি উনি বলবেন, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা উনি করছেন, উনি নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করছেন, মানবাধিকার যে লঙ্ঘিত হচ্ছে, সেদিকে উনি মনোযোগী হবেন, দেশে আইনের শাসন ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে উনারা মনোযোগী হবেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি মনোযোগী হবেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে দেশে একটি গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন এবং দেশে একটি নিরপেক্ষ সংসদ ও সরকার গঠনের জন্য তার বক্তব্যে প্রতিশ্রুতি থাকবে।
সভা-সমাবেশ করার অধিকারকে বিএনপির নাগরিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ৭ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই পরিপ্রেক্ষিতে ৭ মার্চের আজকের জনসভা। আমরা জনসভাকে স্বাগত জানাই। কারণ, প্রতিটি দল তাদের আদর্শ ও চিন্তা-চেতনা নিয়ে অনুষ্ঠান করবে। আর সেখানে কারো দ্বিমত থাকার কারণ নেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে জনসভা করে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। আর জনগণকে জনসভায় ডেকে শপথ গ্রহণ করাচ্ছেন। তাই আমরা চাই, আমাদের সাংবিধানিক, নাগরিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার, সভা-সমাবেশ করার যে অধিকার, সেই অধিকারটুকু আমাদের পালন করতে দেবেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা কাউকে শপথ গ্রহণ করাব না। কারণ শপথ গ্রহণ করানো সংবিধান, স্বাধীনতার পরিপন্থী ও অনৈতিক।
আমীর খসরু আরও বলেন, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা, সরকারি কর্মকর্তা ও সরকারের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত, তারাও জনসভায় আসছেন। এতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। কারণ, আমরা স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশ চাই। সুতরাং আজকে যারা ক্ষমতাসীন দল, তারা জনসভা করবে, এখানে কোনো ভিন্ন মত থাকার কারণ নেই।
১২ মার্চ বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার অনুমতি চেয়েছে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, এক সপ্তাহ হলেও এখনো অনুমতি মেলেনি। অথচ আজকে যারা জনসভা করছে, তারা গত ১০ দিন ধরে ঢাকায় মাইকিং করছে। রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই ব্যানার-ফেস্টুন। দুঃখ হয়, কারণ আমরা তো এগুলো কিছু চাচ্ছি না! আমরা শুধু চাচ্ছি সভার অনুমতি। যেটা আমার সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকার। সেই অধিকার থেকে আজকে বিএনপি বঞ্চিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ তাদের নাগরিক ও গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা পরিপূর্ণভাবে পালন করছে মন্তব্য করে খসরু বলেন, আওয়ামী লীগ তাদের সব স্বাধীনতা ভোগ করছে। কোনো অবহেলা করছে না। কিন্তু আজকে বিরোধী দলের রাজনৈতিক, সাংবিধানিক স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রশ্নবিদ্ধ। যে কারণে দেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারছে না, সমতলভূমিতে রাজনীতি হচ্ছে না, বাক-স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত এবং গণমাধ্যম ও আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে যুব সমাবেশে কথা বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, এলডিপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব শাহাদত হোসেন সেলিম প্রমুখ।
এসএইচ/
আরও পড়ুন