জয়নুল-খোকন প্যানেল মেনে নিলেন বিদ্রোহীরা
প্রকাশিত : ১১:৩৫, ১০ মার্চ ২০১৮
অবশেষে ঐক্যেমত্য পৌছেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে জয়নুল-খোকনের প্যানেলকে সমর্থন জানিয়ে প্যানেল প্রত্যাহার করেছে বিদ্রোহীরা। গতকাল শুক্রবার রাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মধ্যস্ততায় এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
প্রায় নয় বছর ধরে বন্ধ থাকা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নতুন কমিটি গঠনের শর্তে ছাড় পেয়েছেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবদীন ও ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন। আগামী ২১-২২ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে প্রথম জন সভাপতি ও দ্বিতীয় জন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রার্থী চূড়ান্ত হয়েছেন। শুক্রবার প্রায় তিন ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বিএনপির নেতারা দলীয় আইনজীবীদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেন।
এদিন সন্ধ্যা ছয়টায় বৈঠক শুরু হয়ে রাত নয়টার দিকে শেষ হয়। শুক্রবার রাতেই বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দফতরের দায়িত্বে থাকা রুহুল কবির রিজভী আহমেদকে এ নির্দেশনা দেন। বিএনপির দলীয় সূত্রের ভাষ্য, শুক্রবারের বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মধ্যস্ততায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, বন্ধ থাকা ফোরাম পুনর্গঠিত হবে। দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির পরই নতুন কমিটি গঠনের তৎপরতা শুরু হবে। আর এই বিষয়ে একমত হয়েছেন সিনিয়র নেতারা ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা।
আইনজীবীদের একাধিক সূত্র জানায়, আগামী ২১ ও ২২ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবীদের সমিতির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য জয়নুল আবদীন ও মাহবুব উদ্দিন খোকনদের চূড়ান্ত করেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার। এরপর বিদ্রোহী একটি গ্রুপ গত মঙ্গলবার রাত থেকে এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে পাল্টা প্যানেল ঘোষণা করে। ওই প্যানেলে তৈমুর আলম খন্দকারকে সভাপতি ও এ বি এম রফিকুল হক তালুকদারকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। বিষয়টি নিয়ে দলীয় আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হলে বিএনপির সিনিয়র নেতারা হস্তক্ষেপ করেন।
বিএনপির দফতরের সহ সম্পাদক বেলাল আহমদ জানান, বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ২০১৮-১৯ উপলক্ষে নীল প্যানেলের নমিনেশন বোর্ড-এ অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন এবং ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের নেতৃত্বে প্যানেল অনুমোদিত হয়েছে। এই প্যানেলই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। বৈঠকে অনুমোদিত প্যানেলের প্রতি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী নেতাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্রোহী অংশটির নেতা অ্যাডভোকেট তৈমুর খন্দকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ম্যাডাম এখন কারাগারে, তার প্রতি সম্মান রেখে আমরা একমত হয়েছি। সবকিছু মিটমাট হয়ে গেছে। কোনও সমস্যা নেই।
শুক্রবার বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, যারা বিদ্রোহ করেছিল, তারা বলেছে যে, এটা ছিল প্রপাগান্ডা। জয়নুল আবদীন ও মাহবুব উদ্দিনকে প্রার্থী করায় যে প্রশ্ন উঠেছিল, তা এখন নেই। সবাই তাদেরকে প্রার্থী করার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন।
শুক্রবার রাত নয়টার দিকে বৈঠক শেষ হয়। এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে গুলশানের কার্যালয়ে বিএনপির সিনিয়র কয়েকজন নেতার সঙ্গে আইনজীবীদের বৈঠক শুরু হয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বৈঠকে স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য ছিলেন।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক আইনজীবী জানান, প্রায় নয় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। এই ফোরামের সভাপতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিঞা, সাধারণ সম্পাদক বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন ও যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া। মির্জা ফখরুল ছাড়াও শুক্রবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, আগামী ২১ ও ২২ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
/ এআর /
আরও পড়ুন