আমরা শতভাগ সফল: ছাত্রলীগ সভাপতি
প্রকাশিত : ১৬:০৭, ৫ এপ্রিল ২০১৮
নিজেদের মেয়াদে ছাত্রলীগকে শতভাগ সফল বলে দাবি করেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ। তবে তাদের মেয়াদেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছাত্রলীগের নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হওয়ার বিষয়ে বলেছেন, সংবাদের শিরোনাম করেন সাংবাদিকরা। এর দায় তাদের নয়। তিনি বলেন, নেতিবাচক সংবাদের শিরোনামের দায়িত্ব আপনাদের (সাংবাদিক)। সংবাদের শিরোনাম কোনটা করবেন, সেটা সম্পূর্ণ আপনাদেরই বিষয়। শিরোনাম ইতিবাচক না নেতিবাচক, তা নিয়ে আমরা ভাবি না।
বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২৯তম সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ সভাপতি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি তার নেতৃত্বাধীন বর্তমান ছাত্রলীগকে শতভাগ সফল বলে দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে আগামী ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের পরবর্তী সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেন সোহাগ।
নিজের মেয়াদে ছাত্রলীগকে সফল দাবি করলেও বিভিন্ন সময়ে এই মেয়াদেই ছাত্রলীগের নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, কোনও মানুষের শুধু একটি পরিচয়ই থাকে না। কোনও বিভাগের দুই বন্ধুর মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির কারণে মারামারি হয়েছে, তারা দুজনই ছাত্রলীগের কর্মী। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গেও তারা সংশ্লিষ্ট। এখন এই ঘটনার শিরোনাম কোনটা হবে, তার সিদ্ধান্ত আপনারাই (সাংবাদিকরা) নেন। আপনারা লিখবেন—ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, বিষয়টি কিন্তু তা নয়। শিরোনামের নেগেটিভ-পজিটিভ বিষয় নিয়ে আমরা ভাবি না।
ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি কতটুকু সফল হয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে সোহাগ বলেন, আমি তো মনে করি শতভাগ সফল। এরপরেও কিন্তু ব্যর্থতা থাকে না। ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে আমি নিজেকে ব্যর্থ মনে করছি না। আমরা যদি কোনও ভুল করে থাকি, তা আপনারা (সাংবাদিক) দেখবেন। তা ধরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব আপনাদের।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেন সাইফুর রহমান সোহাগ। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আগামী ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে, আগামী ২৪, ২৬ ও ২৯ এপ্রিল যথাক্রমে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, উত্তর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
সামনে জাতীয় নির্বাচন। এ সময় ছাত্রলীগের সম্মেলন আয়োজন করার জন্য কোনও ধরনের চাপ ছিল কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, এ সময়ে সম্মেলন আয়োজন করাকে অবশ্যই ভালো চোখে দেখছি। কিসের চাপ? আমাদের একমাত্র অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন নাকি মনোনয়নের মাধ্যমে আসবে—এর জবাবে সোহাগ বলেন, আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই নতুন নেতৃত্ব আসবে। গঠনতন্ত্রের পরেও আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে বলবেন, সেভাবেই হবে।
নির্দেশ থাকার পরও গত মার্চ মাসে সম্মেলন না করার বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে সোহাগ বলেন, আপনারা এখনকারটা বিচার করবেন। আমরা আমাদের একমাত্র অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই যা করার করেছি। তখন তো বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আনুষ্ঠানিক কিছু ঘোষণা করেনি। এখন সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করছি। এরপর যদি সম্মেলন না হয়, তার দায়ভার আমাদের।
নতুন নেতৃত্বে যারা আসবে, সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের বয়স ২৭ বছরের নিচে থাকতে হবে বলে উল্লেখ করেন সাইফুর রহমান সোহাগ। এ বিষয়ে গঠনতন্ত্রে থাকা বিধান এবং শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমাদের সব প্রস্তুতি থাকবে। তারপরও আমাদের একমাত্র অভিভাবক শেখ হাসিনা যে নির্দেশ দেবেন, সেই অনুযায়ীই সম্মেলন ও সবকিছু হবে।
নিজেদের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে জাকির বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি সব কর্মকাণ্ডে আমাদের সহযোগিতা করেছে। আমরা দুই ভাই (ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক) মনে করি, ছাত্রলীগের যত অর্জন আছে তা কেন্দ্রীয় কমিটি সব নেতা ও ছাত্রলীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীর। অন্যদিকে সব ব্যর্থতার দায়ভার আমাদের দুজনের। তারপরও আমাদের সাফল্য ও ব্যর্থতা নির্ধারণ করবে দেশের ছাত্রসমাজ ও জনগণ।
এদিকে, সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এবং ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও উপস্থিত ছিলেন না ছাত্রলীগের এই তিন শাখার শীর্ষ নেতৃত্ব। ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স, ছাত্রলীগ ঢাকা উত্তর শাখার সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি বায়েজিদ আহমেদ খান ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ কেউই এই সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেননি।
এসএইচ/
আরও পড়ুন