‘বঙ্গমাতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক সহযোদ্ধা’
প্রকাশিত : ১২:২০, ৮ আগস্ট ২০২০ | আপডেট: ১৪:৩১, ৮ আগস্ট ২০২০
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব শুধু বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণীই ছিলেন না, ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক সহযোদ্ধা।’
আজ শনিবার বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংসদ ভবনের নিজ বাসভবনে আয়োজিত আনলাইন সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
বঙ্গমাতার কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত করে আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির দীর্ঘ মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে শুধু বাঙালি জাতির পিতা হননি, তিনি হয়ে উঠেছিলেন একজন বিশ্ববরেণ্য রাজনীতিবিদ ও রাষ্ট্রনায়ক। আর এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তারই সহধর্মিণী ও বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের সহযোদ্ধা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বঙ্গমাতা বেগম মুজিবের সঙ্গে বিশ্বের খ্যাতিমান নারী এলিনর রুজেভেল্টের অনেক সাদৃশ্য রয়েছে, এলিনর রুজেভেল্ট যুক্তরাষ্ট্রের চার বার নির্বাচিত ও দীর্ঘকালীন সময়ের প্রেসিডেন্ট ফ্রাল্কলিন ডি রুজেভেল্টের স্ত্রী। বেগম মুজিব আর এলিনর রুজেভেল্ট দুজনই শৈশবে তাদের বাবা-মাকে হারিয়েছিলেন, দুজনই তাদের চাচাতো ভাইকে বিয়ে করেছিলেন আর দুজনই তাদের স্বামীর রাজনীতিতে অসামান্য ভূমিকা রেখেছিলেন। তবে তাদের দুজনের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে- শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিরের সৌভাগ্য হয়েছিল একটা রাষ্ট্রের স্বাধীনতা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ অবদান রাখার, আর সেই সৌভাগ্য এলিনর রুজেভেল্টের হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাক অর্থাৎ ৭ই মার্চের ভাষণের আগ মূহুর্তে বঙ্গমাতাই জাতির পিতাকে চুড়ান্ত অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন। জাতির পিতার আমৃত্যু সঙ্গী মহীয়সী নারী, দেশের স্বাধীনতাসহ সকল গৌরব অর্জনের নেপথ্য প্রেরণাদাত্রী বঙ্গমাতা মুজিব।’
পরে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির আয়োজিত বঙ্গমাতা বেগম মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এসময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে করোনার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ কর্মীরা বন্যা দুর্গত মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছানোসহ রান্না করা খাবার বিতরণে প্রশাসনকে সহায়তা করে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকে আর্তমানবতার সেবায় নিবেদিত প্রাণ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যেখানে দুর্যোগ সেখানে আওয়ামী লীগ, দুর্যোগ দুর্বিপাকে দলের নেতাকর্মীদের মানুষের পাশে থাকা ৭ দশকের ঐতিহ্য।
এ সময়ে বঙ্গমাতার জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন জেলা হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, ৮ টি কোভিড হাসপাতাল এবং কোভিড চিকিৎসার সাথে যুক্ত ৫০০জন সম্মুখসারির যোদ্ধা-চিকিৎসকের মাঝে চিকিৎসা ও সুরক্ষা সামগ্রী উপহার হিসেবে বিতরণ করা হয়।
এসময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক ও মির্জা আজম, ত্রান ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে সিনিয়র নেতারা বনানী কবরস্থানে বঙ্গমাতা কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে যুব লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা জানান।
এরপর দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালের এদিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে তিনি জাতির পিতার হত্যাকারীদের হাতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে নির্মমভাবে নিহত হন।
এসএ/
আরও পড়ুন