শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নের কান্ডারি : সেতুমন্ত্রী
প্রকাশিত : ১৫:৪২, ১৭ মে ২০২১
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আপন কর্ম মহিমায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের নতুন ইতিহাসের নির্মাতা, হিমাদ্রি শিখর সফলতার মূর্ত-স্মারক, উন্নয়নের কান্ডারি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি আলোচনা সভায় যুক্ত হন।
এক অন্ধকার সময়ে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছিলেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছেন বলে আমরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম। তার কারণেই মুক্তিযুদ্ধের কথা, বঙ্গবন্ধুর কথা জানতে পেরেছে আমাদের নতুন প্রজন্ম। সাম্প্রদায়িক ধারা থেকে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ধারা ফিরিয়ে আনতে শেখ হাসিনা নিরলস সংগ্রাম করে আসছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়। বিশ্বে বাংলাদেশ এক মডেল রাষ্ট্র।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো অন্ধকারের বিরুদ্ধে, দুর্যোগের বিরুদ্ধে, ঝড়ের মধ্যে, সংকটে অপ্রতিরোধ্যভাবে অকুতোভয় এগিয়ে যাওয়ার এক বিরল রাজনৈতিক নেতৃত্ব শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সময়কালে ঘটনা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধুর রক্ত ভেজা মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন তার সুকন্যা শেখ হাসিনা। সেদিন সব রাস্তা মিছিলে মিশেছিল রাজধানী ঢাকার সাথে। মিছিলে মিছিলে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছিল ঢাকা শহর। ঝড়-ঝঞ্ঝা পূর্ণ পরিবেশে লক্ষ লক্ষ মানুষের মিছিল সেদিন প্রতিরোধ করতে পারেনি সামরিক স্বৈরশাসক। দেশে ফিরেই তিনি দেশের অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে শৃংখলমুক্ত করতে ছুটে বেড়ালেন সারাদেশ। কোন্দল আর কলহপূর্ণ আওয়ামী লীগকে তিনি ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে শৃংখল মুক্ত করতে তিনি লড়েছেন আপোষহীনভাবে।
শেখ হাসিনার সংগ্রামী জীবনের কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, চার দশকে তিনি অতিক্রম করেছেন দীর্ঘ পথ। মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে জীবনের জয়গান গেয়েছেন। ধ্বংস্তুপের ওপর দাঁড়িয়ে বারবার সৃষ্টির পতাকা উড়িয়েছেন। তিনি দল ও নিজেকে অতিক্রম করে গেছেন।পঁচাত্তর পরবর্তী বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়কের নাম শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু উত্তর বাংলাদেশের সবচেয়ে সৎ রাজনীতিকের নাম শেখ হাসিনা। সবচেয়ে সাহসী ও মানবিক রাষ্ট্রনায়কদের নাম শেখ হাসিনা। ৭৫ পরবর্তী রাজনীতির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতার নাম শেখ হাসিনা।
সাত দশক বয়সী আওয়ামী লীগের চার দশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন শেখ হাসিনা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে শেখ হাসিনা আজও নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।
সংগ্রামী নেতা থেকে শেখ হাসিনা এক কালজয়ী রাষ্ট্রনায়ক উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে ভাবেন না। তার মাথা কাজ করে পরবর্তী জেনারেশন নিয়ে। সে কারণে তিনি রাজনীতিকের সীমানা পেরিয়ে রাষ্ট্রনায়কে রূপান্তরিত হয়েছেন। তিনি সারা বিশ্বে আজ উন্নয়নের নেতা হিসেবে পরিচিত।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এসেছিলেন বলে খাদ্য ঘাটতির বাংলাদেশ আজ খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশকে তিনি উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে নিয়ে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার অভিমুখে। তিনি ক্ষমতায় আসার পর জাতির পিতার হত্যা এবং যুদ্ধাপরাধের বিচার করে বাংলাদেশ পাপমুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে।
করোনার মধ্যেও সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত থাকার কথা উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, আজকে করোনা অনেক কিছুই থামিয়ে দিয়েছে। জীবনের চাকাকে অচল করে দিয়েছে। কিন্তু পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, কর্ণফুলী টানেলের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম নদীর নিচে টানেল এটাও শেখ হাসিনার অবদান। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ।
বিএনপি’র কঠোর সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য শুনে আজ দুঃখ লাগে। ১২ বছর ধরে আপনারা আইনি লড়াইয়ে রাজপথের লড়াইয়ে, নির্বাচনের লড়াইসহ সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছেন। নেত্রীর মুক্তির জন্য এই ঢাকা সিটিতে আপনারা কার্যকর একটি বিক্ষোভ করতে পারেননি। সেই অবস্থায় মানবিকতা আছে বলেই শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা স্থগিত করে মুক্তি দিয়েছেন। এই মানবিকতার প্রশংসা আপনারা করেন নি।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাদেক খানের সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু এভিনিউও প্রান্তে আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সূত্র : বাসস
এসএ/
আরও পড়ুন