শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগ
প্রকাশিত : ১৮:০৮, ১৬ জুলাই ২০২১
সারাদেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবি অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজ সমূহের আবাসিক-অনাবাসিক সকল শিক্ষার্থীর করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগ। একই সাথে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আবাসিক ও অনাবাসিক উভয় শিক্ষার্থীদের তালিকা দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করে কোভিড-১৯ টিকার নিবন্ধনের আওতায় আনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান।
শুক্রবার (১৬ জুলাই) বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য গণমাধ্যমের সাথে এক সাক্ষাৎকারে এ দাবি জানান।
ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় জানান, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মহামারির প্রাদুর্ভাবের পর সরকারি সিদ্ধান্তে গত বছরের মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ইতোমধ্যে সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমাদের প্রাণপ্রিয় শিক্ষাবান্ধব নেত্রী, আমাদের অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা করোনা মহামারি কাটিয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পড়াশোনা কার্যক্রমে নিয়ে আসার জন্য দ্রুত টিকা আনার ব্যবস্থা করেছেন। দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ সমূহের আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের তালিকা ও রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করে টিকা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানাই। কেননা শিক্ষার্থীরা দ্রুত টিকা না পেলে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ সহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহ খোলা কঠিন হবে এবং শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হবে।
এ সময় তিনি আরো বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর সশরীরে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হলে শিক্ষার্থীরা একই শ্রেণিকক্ষে বসে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। এজন্য আবাসিক শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অনাবাসিকদেরও দ্রুত টিকার আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দেশের ছাত্রসমাজের পক্ষে সারাদেশের এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সকল আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের দ্রুত নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানাচ্ছে।
সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য জানান, করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ এখনো বিদ্যমান থাকায় যেকোন জরুরি চাহিদা মোকাবিলায় আমাদের অভিভাবক বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এবারের বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ রেখেছেন। এছাড়া দ্রুত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১০ হাজার চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিতকরণে জরুরি ভিত্তিতে টিকার ব্যবস্থা করছেন। করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহে সরাসরি একাডেমিক কার্যক্রম না থাকায় বিভিন্ন সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এজন্য জরুরি বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করতে টিকার ব্যবস্থা করতে হবে। টিকা যত দ্রুত পাওয়া যাবে, বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তত দ্রুত খোলা যাবে এবং শিক্ষা কার্যক্রমে গতিশীলতা আসবে। আমরা চাই, টিকা দ্রুত নিয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক লেখাপড়া আবারো শুরু হোক।
এ সময় তিনি আরো বলেন, সারাদেশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই নিজের জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও সম্মুখ সারীর যোদ্ধা হিসেবে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে করোনা প্রতিরোধে ও জনসাধারণকে সচেতন করতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যেকোন সংকটে, যেকোন দুর্যোগে, মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছে, ছাত্র সমাজের ন্যায্য দাবি আদায়ে জোরালো ভূমিকা রেখেছে। সারাদেশে ছাত্রসমাজের পক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সকল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজ সমূহের আবাসিক শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অনাবাসিক শিক্ষার্থীদেরকেও নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে টিকার ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছে এবং সবাই যাতে ভ্যাকসিনের আওতায় আসে সেজন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের শিক্ষার্থীদেরকেও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকার আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় তারা সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজ সমূহের আবাসিক ও অনাবাসিক উভয় শিক্ষার্থীদের তালিকা দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করে দ্রুততম সময়ে কোভিড-১৯ টিকার নিবন্ধনের আওতায় আনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান। এছাড়া টিকা নিবন্ধনের ক্ষেত্রে যেসব শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তাদের বিশ্ববিদ্যালয়, সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধনের সনদপত্র দিয়ে ভ্যাকসিন নিবন্ধনের আওতায় আনার বিষয়েও তারা গুরুত্বারোপ করেন।
এসি
আরও পড়ুন