প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে ছাত্রলীগের আনন্দ মিছিল
প্রকাশিত : ১৮:৩৩, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ | আপডেট: ১৮:৩৬, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা, স্বাধীন বাংলাদেশে ’৭৫ পরবর্তী সময়ে ইতিহাসের সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আনন্দ মিছিল করেছে ছাত্রলীগ।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। আনন্দ মিছিল সংসদ ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এসে শেষ হয়। এরপর তারা প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন ইউনিটের কয়েক হাজার নেতাকর্মী আনন্দ মিছিলে অংশ নেন।
এ সময় ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার শুভ জন্মদিনে তাঁর সুন্দর জীবন, সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। ’৭৫ পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতা বিরোধীদের পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার যে প্রক্রিয়া এদেশে শুরু হয়েছিল, তার বিপরীতে দেশরত্ন শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। শত বাধা-বিপত্তি, চড়াই-উতরাই এবং নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে বাঙালির ভাত ও ভোট এবং অধিকার আদায়ের জন্য অবিচল থেকে সংগ্রাম চালিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা অনার্জিত স্বপ্নপূরণ করে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছেন তাঁরই যোগ্য উত্তরসূরী বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা।’
তিনি আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা, দেশপ্রেম, সুদক্ষ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে আজ বাঙালি জাতি বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গতিশীল নেতৃত্ব, মানবিক মূল্যবোধ দিয়ে আজকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শুধু নিজেকেই নন, বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।’
সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘পচাত্তর পরবর্তী দেশকে ধ্বংসস্তূপ থেকে পুনরুদ্ধারে এবং গণতন্ত্র, মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বহু চড়াই-উতরাই, বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে বাঙালি জাতির আলোকবর্তিকা হয়ে দেশে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তিনি সেদিন এসেছিলেন বলেই আজ জাতির পিতার সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নে অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করে বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাঙালি জাতি। ভালোবাসায় ও সহমর্মিতায় তিনি বাংলার মানুষের প্রিয় এক ভগিনী, অতি আপনজন এবং একজন মমতাময়ী মা।’
তিনি আরো বলেন, ‘দেশের মানুষের কল্যাণ ও উন্নতিকে রাজনৈতিক ধ্যানে-জ্ঞানে রেখে তিনি দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন। জাতির পিতার আদর্শকে বুকে ধারণ করে তাঁর নেতৃত্বেই আজ বাঙালি জাতি এগিয়ে যাচ্ছে জাতির পিতার আজীবন লালিত স্বপ্ন সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে। আজ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার জন্মদিনে তাঁর সুস্বাস্থ্য, সুখ-সমৃদ্ধি, সুন্দর জীবন ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।’
উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আজকের জন্মদিনটি এমন সময়ে পালিত হচ্ছে যখন তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে। শেখ হাসিনার শৈশব-কৈশোর কেটেছে টুঙ্গিপাড়ায় দাদা-দাদির কোলে-পিঠে মধুমতি নদীর তীরে। পাঁচ ভাই-বোনের অপর চারজন হলেন- শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রেহানা ও শেখ রাসেল। এর মধ্যে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ছাড়া কেউই জীবিত নেই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বাবা-মাসহ সবাই ঘাতকের হাতে নিহত হন।
শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু টুঙ্গিপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৫৪ সালে বঙ্গবন্ধু প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর পরিবার নিয়ে পুরান ঢাকার রজনী বোস লেনের ভাড়া বাসায় ওঠেন। বঙ্গবন্ধু যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সদস্য হলে সপরিবারে ৩ নম্বর মিন্টো রোডের বাসায় বসবাস শুরু করেন। তিনি ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৬৭ সালে সরকারি ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা কলেজ) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ওই বছরই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সে ভর্তি হন এবং ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
শেখ হাসিনা ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজে পড়ার সময় ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য এবং রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলন ও ছয় দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
নিখাদ দেশপ্রেম, দূরদর্শিতা, দৃঢ়চেতা মানসিকতা ও মানবিক গুণাবলী তাঁকে আসীন করেছে বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে। তিনিই বাঙালির জাতীয় ঐক্যের প্রতীক এবং ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল। আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক দৈন্যে আকণ্ঠ নিমজ্জিত একটি জাতি তাঁর সফল নেতৃত্বেই উন্নয়ন-অগ্রগতি মহাসোপানে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, অতীত ও বর্তমান তুলনাতেই তা শুধু দেশের মানুষই নয়, বিশ্ব নেতাদের কাছেও বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। তাই সারাদেশে এখন শুধু একটাই স্লোগান- ‘শেখ হাসিনার হাতে থাকলে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ।’
এসি
আরও পড়ুন