১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ছিল সদ্য স্বাধীন দেশকে মেরে ফেলার দেশি-বিদেশি চক্রান্ত: পরশ
প্রকাশিত : ২০:৫০, ১১ আগস্ট ২০২৩ | আপডেট: ২০:৫৭, ১১ আগস্ট ২০২৩
আজ ১১ আগস্ট, বিকাল ৩টায়, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ অফিস ভবন অডিটোরিয়াম, তেজগাঁও, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা যুবলীগের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।
প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এমপি। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন। সভাপতিত্ব করনে, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের সহ-সভাপতি জাফর ইকবাল ও সঞ্চালনা করেন, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তাসবিরুল হক অনু।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড সাধারণ কোনও হত্যাকাণ্ড না। এই হত্যাকাণ্ড ছিল সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে জন্মের পরেই মেরে ফেলার দেশি-বিদেশি চক্রান্ত। সে কারণেই ১৫ আগস্টের হাতে গোনা কিছু খুনিদের, জুনিয়র অফিসারদের বিচার সম্পন্ন হলেও এ ঘটনার নেপথ্যের ষড়যন্ত্র উন্মোচনের বিকল্প নেই। কারণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্র এবং তারপরের পদক্ষেপগুলো সম্পূর্ণ পর্যালোচনা ও নিরীক্ষার লক্ষ্যে একটি স্বাধীন জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠন এখন একান্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
তিনি আর বলেন, আমি আগেও বলেছি, এই হত্যাকাণ্ড ছিল অত্যন্ত সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সুতরাং স্বাধীন জাতীয় তদন্ত কমিশনের কাজও অনেক কঠিন। তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত জরুরি একটা কাজ; এই কঠিন কাজটি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। কঠিন একারণে বলছি যে, ১৯৭৫ সালের পর থেকে লম্বা সময় খুনিরাই দেশ শাসন করেছে, এই জিয়াউর রহমানরা দেশ শাসন করেছে। তারা বঙ্গবন্ধু হত্যার অনেক তথ্য গায়েব করে দিয়েছে। এই গায়েব করে দেওয়াও সেই সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের নীলনক্সার অংশ। অতএব, আমাদের এমন তদন্ত কমিশন দরকার, যারা যে কোন কঠিন মুহূর্তে পিছপা হবেন না। যে কোন চাপ মোকাবিলা করতে পারবে। এই তদন্ত কমিশন কাউকে শাস্তি দেওয়ার জন্য না; রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত না, বরঞ্চ জাতিকে সম্পূর্ণরূপে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য এই তদন্ত কমিশন। আমাদের প্রজন্মের সত্য জানার অধিকার আছে, যাতে আমরা সাদাকে সাদা বলতে পারি এবং কালোকে কালো। খুনি জিয়াউর রহমানদের পেছনে দেশে-বিদেশে কে বা কারা কাজ করছে, তা উন্মোচিত হওয়া দরকার।
তিনি আরও বলেন, ইতিহাস যতই গৌরবময় বা কলঙ্কময় হোক, তা নতুন করে লেখা যায় না। অতএব, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যে ক্ষতি হয়েছে, তার পূরণ কোনদিন সম্ভব নয়। তবে ইতিহাসের সত্য উদঘাটন ও নির্মোহ উপলব্ধি জাতিকে উপকৃত করবে। সে কারণেই জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কুশীলবদের খুঁজে বের করা জরুরি জাতীয় কর্তব্য। ইতিহাসের সত্য উন্মোচন করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের এই জরুরি কর্তব্য পালন করতে হবে। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রকৃত অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করার জন্যই অতীতের ক্ষতগুলো পরীক্ষা করে দেখা দরকার। তা সম্ভব হলেই কেবল একদিকে যেমন সেই প্রেক্ষাপটে সদ্য স্বাধীন দেশের মূল চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকগুলো অনুধাবন করা সম্ভব হবে, অন্যদিকে ভবিষ্যৎ নাগরিকের জন্য জাতীয় ইতিহাসের নির্ভেজাল সত্য উন্মোচিত হবে। তাই আমি আবারো বলি, আগস্ট হত্যাকাণ্ড কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না। যারা মারণাস্ত্র হাতে সেদিনের নারকীয় হত্যাযজ্ঞে অংশ নিয়েছিল, তাদের পেছনে খুনি জিয়াউর রহমানসহ আরও দেশি ও বিদেশি কুচক্রী মহল ছিল। তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের শোচনীয় পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল। সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বাভাবিক যাত্রাপথ কণ্ঠকাকীর্ণ করতে চেয়েছিল। অতএব, এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কুশীলবদের চিহ্নিত করার আর কোন বিকল্প নেই।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এমপি বলেন, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনা। নৌকার বিকল্প নৌকা। বঙ্গবন্ধু’র রূপরেখা অনুযায়ী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন বিধায় দেশ আজ উন্নত-সমৃদ্ধ, অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে চলেছে। তিনি আরও বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে যুবলীগের নেতা-কর্মীদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে, সুশৃঙ্খলভাবে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার জন্য কাজ করতে হবে।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, রাজনীতির মাঠে বিএনটি-জামাতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হলে, যুদ্ধে জয়লাভ করতে হলে অনুপ্রবেশকারী নয়, খাঁটি কর্মী দরকার। সামনে আমাদের কঠিন দিন, ১৫ই আগস্টের হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে, ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী তারেক রহমানের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলাকারী বিএনপি-জামাতের দোসর জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়তে হবে। তারা খুনি তারেক রহমানের সন্ত্রাসী বাহিনী, তারা অস্ত্র চালাতে জানে, সারা বাংলাদেশে তারা অস্ত্রের মহড়া চালাচ্ছে। সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার সার্থে তাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করেই আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে আবারও জয়ী করতে হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ আনোয়ার হোসেন, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, কার্যনির্বাহী সদস্য রাজু আহমেদ ভিপি মিরান, ইঞ্জিনিয়ার মুক্তার হোসেন চৌধুরী কামাল, কেন্দ্রীয় সদস্য মোঃ সাইদুর রহমান জুয়েল, শেখ মোঃ রবিউল ইসলামসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগে
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ আনোয়ার হোসেন, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, কার্যনির্বাহী সদস্য রাজু আহমেদ ভিপি মিরান, ইঞ্জিনিয়ার মুক্তার হোসেন চৌধুরী কামাল, কেন্দ্রীয় সদস্য মোঃ সাইদুর রহমান জুয়েল, শেখ মোঃ রবিউল ইসলামসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।
কেআই//
আরও পড়ুন