রাজশাহীতে নৌকার বিজয় অব্যাহত রাখতে গুরুদায়িত্ব লিটনের ওপর
প্রকাশিত : ১৭:১৫, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে রাজশাহীর ছয়টি আসনে জয় পায় আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থীরা। এক সময়ের বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত রাজশাহীর ছয়টি আসনে আওয়ামী লীগের সেই বড় জয়ের পিছনে বিশাল ভূমিকা পালন করেছিলেন সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও নৌকার বিজয় অব্যাহত রাখতে গুরু দায়িত্ব নিতে হবে তাকে।
ইতোমধ্যেই তিনি দলটি হাই-কমান্ড থেকে সবুজ সংকেত পেয়েছেন। সেই সাথে লিটন রাজশাহীর ছয়টি আসনে আওয়ামী লীগের অবস্থান, দ্ব›দ্ব, কোন্দল নিয়ে বাড়তি খোঁজ খবর রাখছেন এমনটায় জানিয়েছেন দলটির সূত্রগুলো।
রাজশাহী আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রমতে, ২০০৮ সালের ১৫ জুন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সন্তান এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।এর ছয় মাস পর ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহী ছয়টি আসনের দায়িত্ব দেন খায়রুজ্জামান লিটনকে।
সূত্র মতে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে রাজশাহী-২ (সদর) আসনে মনোনয়ন পান ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। জোটের সীদ্ধান্তে তিনি মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তবে অপর পাঁচ আসনের মনোনয়নে ছিল মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের তদবির। ওই নির্বাচনে মনোনয়ন পান রাজশাহী-১ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-৩ আসনে মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, রাজশাহী-৪ আসনে ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, রাজশাহী-৫ আসনে আব্দুল ওয়াদুদ দারা ও রাজশাহী-৬ আসনে শাহরিয়ার আলম। এদের মধ্যে ওমর ফারুক চৌধুরী ও মেরাজ উদ্দিন মোল্লা আওয়ামী লীগের পুরাতন মুখ হলেও বাকি তিনজন ছিলেন নতুন। ফলে তাদের জন্য বিশেষভাবে তদবির করে মনোনয়ন পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন খায়রুজ্জামান লিটন। এরপর রাজশাহীর ছয়টি আসনের নির্বাচনী এলাকায় ছুটি বেড়িয়ে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।
রাজশাহী আওয়ামী লীগের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের ভাষ্য, চলতি মাসেই আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দু’দফা সাক্ষাৎ হয়েছে খায়রুজ্জামান লিটনের। এরই মধ্যে একবার মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার সময় আর দ্বিতীয় বার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায়।
দলের হাই-কমান্ড থেকে খায়রুজ্জামান লিটনকে বলা হয়, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনী রাজশাহীর ছয়টি আসনে আমরা ভালো করেছি।একাদশেও আমরা ছয়টি আসনেই জয় চায়।এবার সেটি নিয়ে ভাবতে হবে।
সূত্রমতে, অন্তঃকলহ মেটাতে ২২ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে নগর ও জেলার যৌথ সমঝোতা সভা করার কথা ছিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের। কিন্তু পরবর্তিতে সে সভা বাতিল করা হয়। তা এখনও দিন ঠিক না হলেও শীঘ্রই রাজশাহীতে এ সভার আয়োজন করা হবে। ওই সভার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহীর ছয়টি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থীদের জিতাতে মাঠে নামবেন মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন।
সূত্রগুলোর ভাষ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও রাজশাহীর ছয়টি মধ্যে সদর আসনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার মনোনয়ন অনেকটা নিশ্চিত বলে মনে করা হয়। তবে অপর পাঁচটি আসনে এবার বর্তমান সংসদ সদস্যরা ছাড়াও মনোনয়ন চাইছেন একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা। যাদের অনেকেই মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্য। আর এই মনোনয়ন চাওয়া নিয়ে প্রতিটি আসনে রয়েছে দলীয় কোন্দল। সে ক্ষেত্রে মনোনয়ন বঞ্চিতদের ঐক্যবদ্ধ করে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করা বড় চ্যালেঞ্জ দেখা হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ডিসেম্বরের শেষের দিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।আর তফসিল হওয়ার কথা রয়েছে অক্টোবরের শেষে।
কেআই/ এমজে
আরও পড়ুন