আওয়ামী লীগ-বিএনপি যেভাবে প্রার্থী বাছাই করে
প্রকাশিত : ১৭:৪৩, ১৩ নভেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ২৩:৩৩, ১৩ নভেম্বর ২০১৮
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ একাদশ জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে কয়েকদিন আগে। আওয়ামী লীগের ফরম বিক্রির সময় ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। অন্য দুটি দল বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির ফরম বিক্রি চলছে। এবছর আওয়ামী লীগের চার দিনে ফরম বিক্রি হয়েছে ৪ হাজারেরও বেশি।
দলগুলো থেকে যে বিপুল সংখ্যক মানুষ মনোনয়ন ফরম কিনেছেন তাদের মধ্যে যেমন দলের নেতাকর্মীরা রয়েছেন তেমন রয়েছেন অভিনেতা, ক্রিকেটার। এখন প্রশ্ন হল দলগুলো মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয় বিবেচনা করবে?
আওয়ামী লীগ কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করবে
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলছিলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা গত দুই বছর ধরে মাঠ পর্যায়ে জরিপ করছেন।
অক্টোবরে সর্বশেষ জরিপের প্রতিবেদন এসেছে। ৩/৪ মাস পর পর সার্ভে রিপোর্ট এসেছে। বিভিন্ন সোর্স থেকে এই তথ্যগুলো নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এই জরিপের জন্য এনজিও, শিক্ষকদের নিয়ে একটা দল আছে। দলের এরকম ৫/৬টি সোর্স রয়েছে।
হানিফ বলেন, "এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যে এলাকায় একজন প্রার্থীর সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা সবচেয়ে বেশি এবং ক্লিন ইমেজ আছে তাকে প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হবে।"
মনোনয়নের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কে নেবেন?
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দুটি মনোনয়ন বোর্ড আছে। একটা সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড এবং অন্যটি স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড। সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড ১১ সদস্য বিশিষ্ট। এই দুই বোর্ডের প্রধান দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
আওয়ামী লীগের সাথে জোটবদ্ধ আরো দল রয়েছে, তার মধ্যে জাতীয় পার্টি অন্যতম।
মাহবুবুল আলম হানিফ জানান "আমাদের যে জরিপ দল রয়েছে তারা একটা নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের বাইরে ঐ এলাকায় সম্ভাব্য অন্য সব রাজনৈতিক দলের প্রার্থী সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে।"
সেই সব দলের প্রার্থীদের ব্যাপারে এলাকায় একই ভাবে জরিপ চালিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বিএনপি কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করবে
বিএনপি গতকাল সোমবার থেকে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে।
বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদ বলেছেন, তাদের কাছে ৫ বছরের জরিপের রির্পোট রয়েছে।
"প্রার্থী নির্বাচনে আমাদের অনেকগুলো মানদণ্ড আছে। প্রধান বিষয় হল দলের জন্য তার অবদানটা কি সেটা আমরা দেখবো, আর গত ১০ বছরে যে সংগ্রাম হল, আন্দোলন হল সেই আন্দোলন তার ভূমিকা কি ছিল সেটা আমরা দেখবো। তার আর্থিক সচ্ছলতা আমরা বিবেচনা করবো। তৃনমূল পর্যায়ের আমাদের সংগঠনের ব্যক্তিদের মতামত নেব।"
মওদুদ বলেন, "অনেক এলাকা আছে যেখানে মানুষ বিএনপি করেন না কিন্তু বিজ্ঞ, শিক্ষিত যারা তাদের মতামত নেয়ার চেষ্টা করি। তারপর দেখি প্রার্থী জিতবে কিনা। এটা একটা বড় মাপকাঠি। হয়ত একটা প্রার্থীর সবকিছু আছে কিন্তু সে হয়ত ভোট পাবে না অথবা নির্বাচনে জিতবে না। সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হতে পারে। তবে ৯৫% জায়গায় যেসব মাপকাঠির কথা বললাম সেগুলো বিবেচনায় আনা হবে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে। যখন আমরা প্রার্থীদেরকে ডাকবো তখন ৫ বছরের জরিপের এই সব তথ্যগুলো আমাদের সামনে থাকবে।"
তবে তিনি উল্লেখ করেন, সবাই যে নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য মনোনয়ন পত্র কেনেন তা নয়, অনেকে আছেন যারা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য কেনেন।
বিএনপির মনোনয়নের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কে নেবেন?
মওদুদ আহমদ বলেন, "মোটামুটি নির্ভরযোগ্য সোর্স থেকে তারা তথ্য সংগ্রহ করেন। সেগুলো আবার `ক্রস-চেক` করেন। সংসদীয় পার্লামেন্টারি বোর্ড এই প্রার্থী নির্বাচন করবেন।"
তবে বোর্ডের প্রধান খালেদা জিয়া এখন দুর্নীতির দায়ে কারাগারে রয়েছেন। মওদুদ আহমেদ বলেন, সেক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
তিনি বলেন, "ওনার অনুমোদন নিয়ে আমরা ঘোষণা দেব। আমরা নিজেরা কোন চূড়ান্ত ঘোষণা দেব না।"
মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ২৮শে নভেম্বর। সূত্র:বিবিসি বাংলা
এসি
আরও পড়ুন