ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

শোভন-রাব্বানীর সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১৩, ১৯ নভেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১০:২৭, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে মন্ত্রী, এমপি, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

এবার সংস্থাটির নজরে আনা হচ্ছে ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকে। যেখানে রয়েছেন সম্প্রতি ছাত্রলীগ থেকে অব্যহতি পাওয়া সংগঠনটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। আছেন সংগঠনটির আরেক সাবেক সাধারণ সম্পাদক যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিদ্দিকী নাজমুল আলম। তাদের সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, শুধু ছাত্রলীগের এই তিন নেতার বিরুদ্ধেই নয়; শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে তারা। এর মধ্যে জাতীয় সংসদের হুইপসহ ৪ জন সংসদ সদস্য, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ৫ কাউন্সিলরসহ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা রয়েছেন।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শুদ্ধি অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরই অংশ হিসেবে ৩০ সেপ্টেম্বর দুদকের মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) সাঈদ মাহবুব খানকে তদারক কর্মকর্তা ও পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে প্রধান করে ৭ সদস্যবিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়।

জানা গেছে, যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে তাদের মধ্যে কয়েকজন ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। অনেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপ্রদর্শিত ও অবৈধ সম্পদের তথ্য হাতে পেয়েছে দুদক। সে অনুযায়ী, এবার অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে সংস্থাটি।

যদিও দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি গণমাধ্যমে আসা নামগুলোও সংগ্রহ করে অনুসন্ধান দল কাজ করছে। তালিকা বড়-ছোট না, যাদের নামে অভিযোগ আসছে, তার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

তিনি বলেন, অভিযুক্তদের অবৈধ সম্পদ ও মুদ্রাপাচারের বিষয়টি দুদকের এখতিয়ারভুক্ত। অনুসন্ধানে তথ্যপ্রমাণ মিললে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হবে। তাদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে কমিশন মামলা করবে।

গত ৩০ অক্টোবর প্রভাবশালী ২৩ ব্যক্তি ও তাদের প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬শ’ ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয় দুদক। হিসাবগুলো আলোচিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, যুবলীগের সম্রাট, জি কে শামীম, খালেদসহ অন্যান্য ব্যক্তি ও তাদের প্রতিষ্ঠানের। এ তালিকায় আছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমও।

বিভিন্ন ব্যাংকে এদের আমানতের স্থিতির পরিমাণ ১ হাজার ২৭ কোটি টাকা। বর্তমানে অ্যাকাউন্টগুলোর লেনদেন স্থগিত ও কিছু জব্দ করা হয়েছে। তাদের সম্পদের খোঁজ করতেই বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য।

এ সংক্রান্ত সব তথ্য চেয়ে গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের মহাব্যবস্থাপকের কাছে চিঠি দেয়া হয়। আরও শতাধিক ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবের লেনদেনের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে আলাদাভাবে চিঠি দিতে যাচ্ছে দুদক।

এদিকে, দুদকের অনুসন্ধান দলের তালিকায় চারজন বর্তমান ও একজন সাবেকসহ পাঁচজন সংসদ সদস্যের নাম রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ আসনের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী, ভোলা-৩ আসনের নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও তার স্ত্রী ফারজানা চৌধুরী, বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু ও তার স্ত্রী সায়মা আফরোজ এবং সাতক্ষীরার সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মুজিবুর রহমান।

বাকিদের মধ্যে পাঁচজন ঢাকার কমিশনার ছাড়া বেশিরভাগই ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সরকারি দলের সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতা। এসব নেতাদের স্ত্রী ও পিতা-মাতাও এ তালিকায় রয়েছেন বলে জানা গেছে। 

এআই/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি