ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

যুবলীগের সম্মেলন: নেতৃত্বের আলোচনায় যারা (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৩৮, ২১ নভেম্বর ২০১৯

কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনের পর এবার আসছে আওয়ামী লীগের শীর্ষ অঙ্গসংগঠন যুবলীগের সম্মেলন। রাজনীতি প্রাঙ্গনে সবার দৃষ্টি এখন যুবলীগের সম্মেলনের দিকে।

সম্প্রতি ক্যাসিনো, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে আলোচনায় রয়েছে সংগঠনটি। সংগঠনটিকে নেতিবাচক ধারা থেকে বের করে ইতিবাচক ধারায় ফিরাতে চান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

বিষয়টিকে সামনে রেখে একদিকে চলছে শুদ্ধি অভিযান অন্যদিকে চলছে নতুন নেতৃত্বের খোঁজ। নিজ ঘর থেকেই দেশের রাজনীতিতে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আগামী ২৩ নভেম্বর (শনিবার) যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলনে কাউন্সিলর, ডেলিগেট, অতিথিসহ প্রায় ৩০ হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত থাকতে পারেন বলে জানা গেছে। যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০১২ সালের ১৪ জুলাই। তিন বছর মেয়াদি এই কমিটির মেয়াদ ​শেষ হয়েছে চার বছর আগে।

সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়ে সাংগঠনিক নেত্রীর কাছ থেকে নির্দিষ্ট করে কোনো নির্দেশনা আসেনি। সম্মেলনের মাধ্যমে এটি চূড়ান্ত করা হবে।

যুবলীগে আগামী দিনের নেতৃত্বে কারা আসছেন তা নিয়ে চলছে সব মহলে নানা আলোচনা। সংগঠনের ভেতরে অনেকেরই নাম আলোচনায় আছে। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন, কারা আসছেন সংগঠনটির এই ক্রান্তিকালের নেতৃত্বে?

একাধিক সূত্রে জানা যায়, যুবলীগের সভাপতি হিসেবে আলোচনায় আছেন- (১) শেখ ফজলে শামস পরশের (২) শেখ ফজলে নূর তাপস (৩)শেখ ফজলে ফাহিম  (৪) শেখ ফজলে নাঈম (৫) নজরুল ইসলাম বাবু (৬) বাহদুর বেপারী (৭) মহিউদ্দিন আহমেদ মহি (৮) সুভাষ হালদার (৯) আতাউর রহমান (১০) সুব্রত পাল (১১) সরদার মোহাম্মদ আলী মিন্টু (১২) এন আই আহমেদ সৈকত।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতা জানান, যুবলীগ ঢেলে সাজাতে এবার বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন দলটির হাইকমান্ড। মেধাবী প্রতিশ্রুতিশীল বিশ্বস্ত তরুণ নেতারাই এবারের সম্মেলনে নেতৃত্বেও আলোচনায় উঠে এসেছেন।

যুবলীগে বয়সের সীমারেখা আরোপের কারণে অনেকেই ছিটকে পড়বেন সম্মেলন থেকে। নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বয়সের এই সীমানা যুবলীগের অতীত ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে নতুন দিনের সূচনা করবে বলে জানান তরুণ নেতারা।

যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেস উপলক্ষে সংগঠনের নেতারা গণভবনে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি যুবলীগ করার ক্ষেত্রে বয়সের সীমারেখার কথা জানান। 

ওই বৈঠকের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, যুবলীগের যে জাতীয় কংগ্রেস আগামী ২৩ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে। এবারের যুবলীগ সম্মেলনে নেতৃত্ব বাছাইয়ে বয়সসীমা নির্ধারণ হয়েছে ৫৫ বছর। 

যুবলীগের শীর্ষ দুই পদের জন্য আলোচনায় থাকা সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির বড় ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশের বয়স ৫১ বছর, অপর ছেলে সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের বয়স ৪৯। এছাড়া শেখ সেলিমের ছেলে এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম ও আরেক ছেলে শেখ ফজলে নাঈমের বয়সও ৫৫ বছরের কম। 

এছাড়াও যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজমের বয়স ৫৫ বছর। অন্যদের মধ্যে যুবলীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ মহির বয়স ৫২, সুব্রত পালের ৫০, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলমের ৫০,  সভাপতি বাহাদুর বেপারির ৫৩, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবুর ৪৮, ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সৈয়দ আলাউল ইসলাম সৈকত ৪০, ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক এবং যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এন আই আহমেদ সৈকতের বয়স ৩৯ বছর। যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সরদার মোহাম্মদ আলী মিন্টুর বয়স ৪৩ বছর।

এদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনা আছেন-ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ মহির (৫২), সুব্রত পাল (৫০), সভাপতি বাহাদুর বেপারি (৫৩), ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক এবং যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এন আই আহমেদ সৈকত (৩৯)। যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সরদার মোহাম্মদ আলী মিন্টুও (৪৩) আছেন আলোচনায়।

এর মধ্যে সরদার আলী মিন্টুসহ বেশ কয়েকজন তরুণ নেতা দুর্নীতিবাজের তথ্য ফাঁস করে আলোচনায় আসেন। তিনি সদ্য সাবেক বহিষ্কৃত যুবলীগের চেয়্যারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর অত্যন্ত আস্থাভাজন হওয়া সত্ত্বেও তাকে দুর্নীতি স্পর্শ করতে পারেনি।

যুবলীগে আগামী দিনের নেতৃত্ব নিয়ে আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, আলোচনায় যেই থাক সাংগঠনিক নেত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই নতুন নেতৃত্ব চূড়ান্ত করবেন। তবে যুবলীগের বর্তমান কমিটি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে সমন্বয় করে দুজনকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে, এমন সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানান অনেকেই।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযানের শুরুতে গ্রেফতার হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। এরপর একই কমিটির সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী (সম্রাট) ও সহসভাপতি এনামুল হক (আরমান) গ্রেফতার হন। এরপর যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে সংগঠন থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়। একাধিক নেতা সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত হন। যুবলীগের বেশ কয়েকজন নেতার দুর্নীতির অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি