পাপিয়ার ঘনিষ্ঠজনেরা আতঙ্কে
প্রকাশিত : ১৯:১৭, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০
আতঙ্কে ভুগছেন পাপিয়ার ঘনিষ্ঠজনেরা
আতঙ্কে ভুগছেন যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার ঘনিষ্ঠজনেরা। কারণ তাদের খুঁজছেন গোয়েন্দারা। পাপিয়া ও তার স্বামী মতি সুমনসহ গ্রেফতার চারজনের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের যাচাই-বাছাই চলছে। তবে এরইমধ্যে অন্তত ১৫ জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে রাখা হয়েছে নজরদারিতে।
তারা কোথায় যাতায়াত করেন, কাদের সঙ্গে সময় কাটান এসব বিষয়ের ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছেন গোয়েন্দারা। পরবর্তী সময়ে তাদের প্রত্যেকের আমলনামা পাঠানো হবে শীর্ষ মহলে।
অন্যদিকে, তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পাপিয়ার ইন্দিরা রোডের ফ্ল্যাটে প্রায় রাতেই বসত ককটেল পার্টি। সেখানেও আনাগোনা ছিল বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তির। পরে সেখান থেকে পছন্দ মতো সুন্দরী যুবতীদের নিয়ে যেতেন তারা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. আবদুল বাতেন জানান, তারা প্রতিটি বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছেন। এমনকি পাপিয়া অনেক কিছুই এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও তারা বুঝতে পারছেন। তবে, কার কার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল, ইন্ধনদাতার তালিকায় কারা, তার অর্থের উৎস কী, একইসঙ্গে তার অপরাধ কর্মকাণ্ডের তালিকাও ডিবি খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে।
জানা গেছে, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মনোরঞ্জনের জন্য পাপিয়ার কাছে সুন্দরী নারী চাইতেন ক্যাসিনো অভিযানের সময় গ্রেফতার হওয়া টেন্ডার মাফিয়া জি কে শামীমসহ আরও কয়েকজন। তাদের চাহিদা অনুযায়ী সুন্দরীদের পাঠিয়ে দেয়া হতো সরকারি-বেসরকারি প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে। আর ওই সুন্দরীদের মাধ্যমে টেন্ডারবাজরা হাসিল করে নিতেন বড় বড় টেন্ডার। পাপিয়া ওই সুন্দরীদের টোপ হিসেবে ব্যবহার করতেন। তাদের ব্যবহৃত ভ্যানেটি ব্যাগ কিংবা অন্যান্য সামগ্রীতে পাপিয়া কৌশলে লাগিয়ে দিতেন অত্যাধুনিক ডিভাইস। সেই সব ডিভাইসে ধারণকৃত মনোরঞ্জনের দৃশ্যগুলো পরবর্তী সময়ে কাজে লাগাতেন লেডি মাফিয়া পাপিয়া।
এছাড়া হাই সোসাইটির খদ্দেরদের চাহিদা অনুযায়ী পাপিয়া তার সংগ্রহে রাখতেন রুশ ও থাই সুন্দরীদেরও। চাহিদা ও রেট মিলে গেলে পাপিয়া তাদের নিয়ে আসতেন বাংলাদেশে।
এদিকে, পাপিয়া ও তার সহযোগীদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধ জগতের বেশ কিছু চমকপ্রদ তথ্যে বেরিয়ে আসছে মদদদাতাদের নাম। এদের মধ্যে যুব মহিলা লীগের তিন নারীনেত্রীর বিষয়ে এরই মধ্যে নিশ্চিত হয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। যারা তাকে রাজনীনিতে প্রবেশ ও বড় পদ পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেছেন। যাদের মাধ্যমে অনেক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠেছিল পাপিয়ার।
এছাড়া পাপিয়ার কললিস্টে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, শিল্পপতি, অভিনেতা, অভিনেত্রী ও প্রশাসনের বিভিন্ন শ্রেণির কর্মকর্তার নামও পাওয়া গেছে। যাতে অনেকটাই বিব্রত বোধ করছেন তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, পাপিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-১-এর অধিনায়ক শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেন, ‘আমরা তাকে (পাপিয়া) গ্রেফতার করেছি। কিন্তু আদালতে হাজির করার কারণে অনেক বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রাথমিকভাবে সম্ভব হয়নি। বিস্তারিত জানতে আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাই।’
এনএস/
আরও পড়ুন