বুধবার আঘাত হানবে ‘আম্ফান’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:০৩ পিএম, ১৯ মে ২০২০ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৮:০৯ পিএম, ১৯ মে ২০২০ মঙ্গলবার
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’। বুধবার (২০ মে) সকাল ৬টায় মহাবিপদ সংকেত জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
তিনি আজ মঙ্গলবার অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাতের মধ্যে উপকূলীয় এলাকায় ঝুঁকিতে থাকা ২০ থেকে ২২ লাখ লোককে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি আগামীকাল (বুধবার) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানবে। বাংলাদেশের ভূখণ্ডের উপর দিয়ে এটা অতিক্রম করবে।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ১২ হাজার ৭৮টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এতে ৫১ লাখ ৯০ হাজার ১৪৪ জন লোক থাকতে পারবে। তবে আমরা যেহেতু কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ে চিন্তিত, সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, সেজন্য সেখানে আমরা ২০ থেকে ২২ লাখ লোককে সরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র সময় আমরা ১৮ লাখ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে এনেছিলাম এবং ‘বুলবুল’- এর সময় ২২ লাখ লোককে আমরা আনতে পেরেছিলাম।
এদিকে আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়, সুপার ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ আগামীকাল বিকেল বা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আজ বিকেলে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পশ্চিম মধ্যবঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুপার ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
ঘূর্ণিঝড়টি আজ বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অফিস জানায়, এটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে আগামীকাল বুধবার বিকেলে বা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুপার ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুপার ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তি দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা বয়েছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তি দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবশ্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বগুড়া, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তি দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম জেলাসমূহ এবং তাদের অদূরবর্তি দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারীবর্ষণসহ ঘন্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব ধরনের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্ত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
এসি