পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানতে যাচ্ছে ‘আম্পান’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৪৩ পিএম, ২০ মে ২০২০ বুধবার | আপডেট: ১২:৪৫ পিএম, ২০ মে ২০২০ বুধবার
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানতে যাচ্ছে। ভারতের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আজ বিকেল বা সন্ধ্যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দিঘায় আঘাত হানবে। ইতিমধ্যে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যজুড়ে আবহাওয়ার রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
সকাল ৯টার দিকে কলকাতা থেকে আম্পানের অবস্থান ছিল দক্ষিণ-পশ্চিমে ৩১৫ কিলোমিটার দূরে। এরইমধ্যে কলকাতাসহ অন্যান্য এলাকায় ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আম্পান মোকাবেলায় রাজ্য সরকার সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এরইমধ্যে উপকূলবর্তী তিন লাখ বাসিন্দাকে সাইক্লোন সেন্টারসহ নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কলকাতা বিমানবন্দরের সব ধরনের ফ্লাইট উঠানামা বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে হাওড়া-দিল্লি এসি ট্রেন চলাচল। পরিস্থিতি মোকাবেলায় মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী (এনডিআরএ)। রাজ্য সচিবালয় নবান্নে চালু করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে থেকে পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এনডিটিভির।
ভারতীয় আবহওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল ৯টার দিকে কলকাতা থেকে আম্পানের অবস্থান ছিল ৩১৫ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে। ঘূর্ণিঝড়টি দিঘার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। সকালে দিঘার দক্ষিণ থেকে ঘূর্ণিঝড়টির দূরত্ব ছিল ২০০ কিলোমিটার। ‘সুপার সাইক্লোনিক স্টর্ম’ থেকে আম্পান কিছুটা শক্তি হারিয়ে এখন ‘এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম’-এ পরিণত হয়েছে। কিছুটা শক্তি হারালেও ‘অতি মারাত্মক’ চেহারা নিয়েই বিকেল অথবা সন্ধ্যার মধ্যে দিঘায় আছড়ে পড়তে যাচ্ছে আম্পান। আম্পান আছড়ে পড়ার সময় ঝড়ের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার। এই গতিবেগ বেড়ে ১৮৫ কিলোমিটাওে পৌঁছতে পারে।
আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের অনুমান, সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে আছড়ে পড়তে যাচ্ছে আম্পান। পূর্ব মেদিনীপুর এবং দুই ২৪ পরগনাতেও ঝড়ের প্রবল প্রভাব পড়বে। সেই সঙ্গে হবে জলোচ্ছ্বাসও। এই তিন জেলার উপকূলে চার থেকে ছয়মিটার পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের আশংকা রয়েছে। আম্পানের দাপট দেখা যাবে কলকাতা, হুগলি, হাওড়া ও নদিয়ায়। প্রবল বৃষ্টিপাতের সঙ্গে কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ হতে পারে প্রতি ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার।
এদিকে শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েছে ভারতের ওড়িশ্যা রাজ্যেও। এরইমধ্যে আম্পানের প্রভাবে উড়িশ্যার পারাদ্বীপ এলাকায় ঝড়ের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। পারাদ্বীপে ঘণ্টায় ৯৬ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইছে। ওড়িশ্যার বিভিন্ন জেলা থেকে এরইমধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে।
এক বিবৃতিতে ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর সতর্ক করেছে, আম্পানের ফলে উপড়ে যেতে পারে বিদ্যুতের খুঁটি এবং বড় বড় গাছ। পাশাপাশি বিভিন্ন ধাতব বস্ত প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের তোড়ে উড়ে এসে অন্য জায়গায় আঘাত করতে পারে। ফলে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সমুদ্র প্রবল উত্তাল ও জলোচ্ছ্বাস হবে। তাই এসময় সাগরে মাছধরা নৌকাসহ অন্য নৌযান না ভাসাতে সতর্ক করা হয়েছে।
এমবি//