প্রশাসনের অনুরোধে বাউফলে আশ্রয়কেন্দ্রমুখী চরবাসী
বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৪:১৮ পিএম, ২০ মে ২০২০ বুধবার
সুপার সাইক্লোন ‘আম্পান’র প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠছে পটুয়াখালীর বাউফলের তেঁতুলিয়া। বাড়ছে জোয়ারের পানির প্রবাহ। ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের কথা জানানো হয়েছে পায়রা বন্দরসহ স্থানীয়দের।
আর এতে করেই শুরুতে অনাগ্রহ দেখা গেলেও আবাহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কতা সংকেত আর প্রশাসনের অনুরোধে সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে চর ও নিম্নাঞ্চলের হাজারো মানুষ।
মূলভূখণ্ড বিচ্ছিন্ন চন্দ্রদ্বীপের বিভিন্ন চরের লোকজনকে সাইক্লোন শেল্টারে সরিয়ে নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে থাকা ইমাম হোসেন ইমন নামে একজন স্বেচ্ছাসেবক জানান, ‘শুরুতে অনাগ্রহ থাকলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশের সার্কেল এসপি ফারুক হোসেন ও ইউপি চেয়ারম্যাল এনামুল হক আলকাস মোল্লাসহ সিপিবির সদস্যদের অনুরোধে নিম্নাঞ্চল ও কাঁচা বসতঘরে থাকা চরবাসীরা আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছেন।’
ইতিমধ্যে চরওয়াডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টারে সাড়ে ৪৫০ থেকে ৫০০ লোক আশ্রয় নিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেখানে আশ্রয় নেওয়া লোকজনদের ইফতার ও পরবর্তী রোজার সেহেরির ব্যবস্থাও করেছেন।
অন্যদিকে তেঁতুলিয়ায় উত্তাল আবহাওয়ায় মাছ শিকারে থাকা জেলেদেরকে নৌকা-জাল নিয়ে ডাঙায় তুলে দেওয়া হয়েছে। চরভূমের অপর আশ্রয় কেন্দ্র্রগুলোতেও চেয়ারম্যান-মেম্বরদের সহোযোগিতায় লোকজনের আসার খবর জানা গেছে।
জরুরি প্রয়োজনে কন্ট্রোল রুমে ০১৭১০-০০৬২১৬, ০১৭৪৯-৪৯৬৯৫৫ নম্বরে যোগাযোগ রেখে সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি জানাতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তত রাখা হয়েছে ১০টি মেডিকেল, ৩টি স্বেচ্ছাসেবক টিম এবং ফায়ার সার্বিসের লোকজন।
এদিকে মেঘে ঢাকাসহ ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তন হচ্ছে আকাশ। ঝড়ো বাতাসে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায়। তেঁতুলিয়া নদীর জোয়ারের পানিতে ছয়লাব হয়ে সড়ক উপচে পড়ার উপক্রম হয়েছে কালাইয়া-ধুলিয়া আরসিসি সড়কের পূর্বপাশের অংশ। যেকোন সময় সড়ক ভেঙে পানি প্রবেশ করতে পারে লোকালয়ে।
বাউফলে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা মূলভূখণ্ড বিচ্ছিন্ন চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক আলকাস মোল্লা বলেন, ‘প্রচুর গবাদি পশুসহ ২০ হাজারের বেশি মানুষের আবাসস্থল চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে মোট ৫টি স্কুল কাম সাইক্লোন সেল্টার থাকলেও তিনটির অবস্থাই জরাজীর্ণ। ১৩ কিলোমিটারের বেড়িবাঁধের অধিকাংশ স্থানই জোয়ারে বিলীন হয়েছে। বিগত সিডর-আইলার মতো যেন এখানে প্রাণহানি না ঘটে, চরবাসীর নিরাপত্তার জন্য তাই সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
এআই//