আম্পানের আঘাতে বরিশালে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:০৯ পিএম, ২১ মে ২০২০ বৃহস্পতিবার
বরিশাল জেলায় ঘুর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও এর প্রাথমিক পরিমাণ সরেজমিনে পরিদর্শন করে বৃহস্পতিবার (২১ মে) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক কতৃক উপস্থাপন করা হয়। পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রস্তুতের কাজ চলছে।
জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমানের স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ১০৭১টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণকারীর সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৬৩ হাজার ৩ জন। বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাত আশ্রয়কেন্দ্র থেকে আশ্রিতরা নিজেদের বাড়ি-ঘরে ফিরছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ও শুকনো খাবারের সরবরাহ করা হয়েছে। আশ্রয়গ্রহণকারী মানুষের অবস্থান আনন্দমুখর করার জন্য খিচুড়িসহ বিভিন্ন খাবার পরিবেশন করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তবে জেলায় কোন প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেনি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলমান রয়েছে।
জেলায় ৪২০৯ হেক্টর জমির ফসল ও ১৮৮৪ হেক্টর জমির সবজি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের কাজ চলছে। একইসাথে ১৬ হাজার ৩২০টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতি হয়েছে এবং সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে ৮ হাজার ১৬০টি ঘর। অন্যদিকে, বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৫০ মিটার।
বিভিন্ন বেড়িবাধ সার্বক্ষণিক নজরদারীর মধ্যে রাখা হয়েছে। কাঁচা রাস্তাঘাটের ক্ষতি হয়েছে ১২৮০ কিলোমিটার। এ সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চূড়ান্তভাবে নির্ধারণের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
১০ লক্ষ ছোট বড় গাছের আংশিক ও সর্ম্পূণ ক্ষতি হয়েছে। এ সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চূড়ান্তভাবে নির্ধারণের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় এর ফলে মৎস্য ঘের ও পুকুরও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। চিংড়ির ঘের ৫ লক্ষ ২০ হাজার টাকার, মাছের খামার ২ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার এবং অন্যান্য ৪৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চূড়ান্তভাবে নির্ধারণের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
প্রাণী সম্পদের মধ্যে হাঁস-মুরগী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৯১৫টি। এ সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চূড়ান্তভাবে নির্ধারণের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জেলায় স্কুল ১৫টি, কলেজ ৪টি, মাদ্রাসা ১টি ও প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৭৫টি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মসজিদ ৫৮টি, মন্দির ২৭টি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চুড়ান্তভাবে নির্ধারণের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার, ঘর নির্মাণের জন্য ঢেউটিন, ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে। জরুরি ভিত্তিতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহের কাজ অব্যাহত রয়েছে। হালনাগাদ তথ্য প্রাপ্তি সাপেক্ষে সকলের মাঝে তুলে ধরা হবে।
এনএস/