ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের প্রণোদনা দেবে সরকার: কৃষিমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১৩ এএম, ২২ মে ২০২০ শুক্রবার

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের সরকার বিনামূল্যে সার, বীজ ও নগদ সহায়তাসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দেবে। 

তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, ফল ও পান চাষিদেরকে মাত্র ৪ শতাংশ সুদে কৃষি ঋণের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। মন্ত্রী বৃহস্পতিবার তার সরকারি বাসভবন থেকে সাংবাদিকদের সাথে অনলাইনে মতবিনিময়ে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘গত ১৫ মে ঘূর্ণিঝড় আমফান আঘাত হানার পূর্বাভাস পাওয়ার সাথে সাথেই কৃষি মন্ত্রণালয় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই ছিলেন সতর্ক। ফসলের ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য কৃষককে দেয়া হয়েছিল প্রয়োজনীয় পরামর্শ। ফলে ঘূর্ণিঝড় আমফানে কৃষিতে ব্যাপকভিত্তিক ক্ষতি হয়নি।’

ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক প্রতিবেদন তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি না হলেও অল্প কিছু কৃষিজ ফসলের বিশেষ করে ফলের মধ্যে আম, লিচু, কলা, সবজি, তিল এবং অল্প কিছু বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির চুড়ান্ত হিসাব নিরূপণের কাজ চলছে।

তিনি জানান, ‘প্রাথমিকভাবে ঘুর্ণিঝড়ে আক্রান্ত মোট জমির পরিমাণ ১ লাখ ৭৬ হাজার ৭ হেক্টর। ইতোমধ্যে হাওড়ে শতভাগ, উপকূলীয় অঞ্চলে ১৭ জেলায় শতকরা ৯৬ ভাগসহ সারা দেশে গড়ে ইতোমধ্যে ৭২ শতাংশ বোরো ধান কাটা হয়েছে। ফলে ক্ষতির পরিমাণ সামান্য যা আমাদের খাদ্য উৎপাদনে তেমন প্রভাব পড়বে না।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শাকসবজি ও মসলা চাষিদের তালিকা প্রণয়ন করে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রণোদনা দেয়া হবে।

তিনি বলেন, ‘সাতক্ষীরা জেলায় প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ভাগ আম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন জেলায় ঝড়ে পড়া আমগুলো ত্রাণ হিসেবে দুস্থ জনগণের মাঝে বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছ্।ে এতে একদিকে যেমন আমচাষিরা কিছুটা আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে অন্যদিকে তেমনি দু:স্থ এবং অসহায় জনগণের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হবে।’

কৃষিমন্ত্রী জানান, প্রাথমিক প্রতিবেদনে বোরো ধান ৪৭ হাজার ২ হেক্টর শতকরা ১০ ভাগ, ভূট্টা ৩ হাজার ২৮৪ হেক্টর শতকরা ৫ ভাগ, পাট ৩৪ হাজার ১৩৯ হেক্টর শতকরা ৫ ভাগ, পান ২ হাজার ৩৩৩ হেক্টর শতকরা ১৫ ভাগ, সবজি ৪১ হাজার ৯৬৭ হেক্টর শতকরা২৫ ভাগ, চিনাবাদাম ১ হাজার ৫৭৫ হেক্টর শতকরা ২০ ভাগ, তিল ১১ হাজার ৫০২ হেক্টর ২০ ভাগ, আম ৭ হাজার ৩৮৪ হেক্টর শতকরা ১০ ভাগ, লিচু ৪৭৩ হেক্টর শতকরা ৫ ভাগ, কলা ৬ হাজার ৬০৪ হেক্টর শতকরা ১০ ভাগ, পেঁপে ১ হাজার ২৯৭ হেক্টর শতকরা ৫০ ভাগ, মরিচ ৩ হাজার ৩০৬ হেক্টর শতকরা ৩০ ভাগ, সয়াবিন ৬৪০ হেক্টর শতকরা ৫০ ভাগ, মুগডাল ৭ হাজার ৯৭৩ হেক্টর শতকরা ৫০ ভাগ এবং আউশ ৬ হাজার ৫২৮ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ব্রিফিংকালে কৃষিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ও সকলের সহযোগিতায় মহামারি করোনা এবং সুপার সাইক্লোন আম্পানের মতো দুর্যোগ মোকাবিলা করে দেশের খাদ্য উৎপাদনের বর্তমান ধারা শুধু অব্যাহত রাখা নয়, তা আরও বৃদ্ধি করে ২০৩০ সালের ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট’ (এসডিজি) অর্জন করার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এমবি//