ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

বরিশালে ভুল চিকিৎসায় গর্ভের সন্তানসহ নারীর মৃত্যু 

বরিশাল প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ০১:০৫ পিএম, ২২ মে ২০২০ শুক্রবার

বরিশালে ভুল চিকিৎসার বলি হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন গর্ভবতী নারী ও তার পেটে থাকা সন্তান। বৃহস্পতিবার (২১ মে) দুপুরে জেলার গৌরনদী উপজেলার আনোয়ারা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগণস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। 

ওই ক্লিনিকের অপরেশন থিয়েটারে সিজারকালে যান আফরোজা আক্তার মুন্নী ও তার পেটে থাকা সন্তান। মৃত ওই গৃহবধূ পার্শ্ববতী উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের দত্তেশ্বর গ্রামের মো. কুদ্দুস তালুকদারের স্ত্রী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে তার পরিবার। 

মৃতের স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে প্রসব বেদনা উঠলে ওই গৃহবধূকে গৌরনদী উপজেলার আনোয়ারা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগণস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এ সময় ওই ক্লিনিকের মালিক হেদায়েত উল্লাহ নিজেকে একজন এমবিবিএস ডাক্তার দাবি করে সিজার করানোর কথা বলেন। রোগীর স্বজনেরা তাতে রাজি হলে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাঈদ মো. আমরুল্লাহকে সার্জন হিসেবে ডেকে আনেন ক্লিনিকের মালিক হেদায়েত উল্লাহকে। 

পরে দুপুরে ওই গৃহবধূকে সিজারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে ইনজেকশন পুশ করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই গর্ভের সন্তানসহ মারা যান ওই গৃহবধূ। তাৎক্ষণিক বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে রোগীর অবস্থা খারাপ বলে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলে পাঠানোর জন্য এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি রোগীর স্বজনরা একাধিক নার্সের মাধ্যমে জানতে পেরে পুরো ক্লিনিক অবরুদ্ধ করে পুলিশকে জানায়। 

তবে, ঘটনাস্থলে পুলিশ আসার আগেই পালিয়ে যায় ক্লিনিকের মালিক হেদায়েত উল্লাহ ও সার্জন ডা. সাঈদ মো. আমরুল্লাহ। পরে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এ ঘটনায় মৃত গৃহবধূর স্বামী মো. কুদ্দুস তালুকদার বাদী হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, ক্লিনিকের মালিক হেদায়েত উল্লাহ পার্শ্ববর্তী বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর আগেও এক রোগীর অপারেশন করাকে কেন্দ্র করে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি।

মৃত গৃহবধূর স্বজনরা জানান, রোগী মারা যাওয়ার পর বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে রোগীর অবস্থা খারাপ বলে রোগীকে শেবাচিমে পাঠানোর নাটক করে হেদায়েত উল্লাহ। আমরা আমাদের পরিচিত নার্সের মাধ্যমে মৃত্যুর সংবাদ জানতে পেরে ক্লিনিক আবরুদ্ধ করে পুলিকে জানাই। হত্যার দায়ে তার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান তারা। 

এআই//