ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

সৌদি প্রবাসীদের কাছে এখন বাঁচার সংগ্রামই মুখ্য

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:২৩ পিএম, ২৩ মে ২০২০ শনিবার | আপডেট: ০৯:৩১ পিএম, ২৩ মে ২০২০ শনিবার

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশকিছু দেশে আগামীকাল রোববার পবিত্র ঈদ উল ফিতর পালিত হবে। তবে করোনা মহামারীর কারনে ভিন্ন এক ঈদ উযাপনের মুখোমুখি হচ্ছে মুসলিম বিশ্ব। লকডাউন আর কারফিউ'র মধ্যে কোন প্রকার জমায়েত ছাড়াই ঈদ উদযাপন করবেন প্রবাসীরা। কোলাহল নেই, নেই কোন ব্যস্ততা। এক মাস সিয়াম সাধনার পর কারফিউ আর লকডাউনের মধ্যেই ঘরেই ঈদের নামাজ পড়তে হবে তাদের। 

করোনা মহামারী কেড়ে নিয়েছে মানব মনের সকল খুশি-আনন্দ। প্রতি বছর ঈদ এলে মুসলিম বিশ্ব মেতে উঠে এক অনাবিল স্বর্গীয় আনন্দে আর বিলিয়ে দেয় পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা। স্বজনদের ছেড়ে দূর দেশে প্রবাসীদের ঈদ এবার বন্দি জীবনে কাটছে। ঈদ উদযাপন হবে ঘরের চার দেওয়ালের ভিতরে। সৌদি আরবেসহ মধ্যপ্রাচ্যের বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের এইবারে ঈদ ভিন্নভাবে পালন করতে যাচ্ছেন। এবার অনেকেই ঈদকে উপলক্ষ্য করে দেশে অবস্থারত স্বজনদের টাকা পাঠাতে পারেননি। যতই মহামারি থাকুক না কেন প্রিয়জনদের প্রয়োজনীয় টাকা পাঠাতে না পারায় ঈদটা অনেক মলিন হবে। 

মধ্যপ্রাচ্যের সবচাইতে বড় দেশ সৌদিআরবে প্রায় ২২ লাখ বাংলাদেশী অভিবাসী রয়েছে যাদের পাঠানো অর্থ দেশের অর্থনীতির একটি বড় যোগান। করোনা মহামারীর কারনে এই প্রবাসীদের অবস্থা বর্তমানে খুবই নাজুক। যদিও মে মাসের শুরু থেকে সীমিত আকারে লকডাউন শিথিল করায় বেশির ভাগ কোম্পানী কাজ শুরু করেছে কিন্তু এরই মধ্যেই ঘটে গেছে অনেক কিছু। চাকরি হারিয়েছে হাজার হাজার প্রবাসী।

একদিকে নিজেরা বেঁচে থাকার সংগ্রাম অন্যদিকে দেশে পরিবার-পরিজনদের ভরণপোষণ, তাদের নিরাপত্তা এসব মিলে প্রবাসী বাংলাদেশীরা মানসিক ভাবে খুবই বিপর্যস্ত। 

জেদ্দায় বসবাসরত প্রবাসী ইলিয়াস ইলু বলেন, ‘গত ২ মার্চ থেকে শুরু হওয়া করোনা ভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে ঘরে বন্দি হয়ে ঘরে পড়ে আছি। অনেক কষ্টে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি। কিন্তু আমি আমার চিন্তা করছি না। আমার পরিবারের কথা চিন্তা করছি। আজ কতদিন হলো একটা টাকাও পাঠাতে পারিনি। ছেলে মেয়েদের মুখের দিকে থাকাতে পারছি না।’ আরেক প্রবাসী সোহেল, জেদ্দার হারেজ মার্কেটে কাজ করতেন তিনি। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মার্কেট বন্ধ থাকার কারণে চাকরি হারিয়েছেণ তিনি। শুধু সোহেল আর ইলিয়াস নয় হাজার হাজার প্রবাসী এখন কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে আছে আর আস্তে আস্তে মৃত্যুর দিকে ঝুঁকে পড়ছে। প্রতিনিয়ত হ্নদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

সৌদি আরবে এই মহামারী করোনায় বহু সংখ্যক বাংলাদেশী আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আছে এবং প্রতিনিয়ত মৃত্যুর সংবাদ সকল প্রবাসীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এমতাবস্থায় প্রবাসীদের কাছে এবারের ঈদ যেন জীবনের সবচাইতে সংকটাপন্ন ও বেধনাক্লিষ্ট ঈদ। ঈদের কোন জামায়াত হবে না, ঈদের পাঁচদিন ছুটিতে চব্বিশ ঘন্টা কারফিউ।

এমএস/