ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

ঈদের রাতের ইবাদত কিয়ামতের পেরেশানী থেকে মুক্তি দেয়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫৮ এএম, ২৪ মে ২০২০ রবিবার

গতকাল চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এ বছরের রমজান মাস ৩০ দিনে পূর্ণ হল। অর্থাৎ আগামীকাল সোমবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। ঈদের রাতের অনেক ফজিলত। ঈদ রাত বলতে আজকের দিন শেষের রাত। কেননা আরবী মাসের দিন গণনা শুরু হয় সূর্য ডোবার পর থেকেই। তাই এই রাতটির ইবাদত মুসলিমদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঈদের রাতে ইবাদতকারীর অন্তর কিয়ামতের দিন ঘাবড়াবে না, ওই দিনের সকল পেরেশানী থেকে মুক্ত থাকবে।

হাদীছে আসছে, যে ব্যক্তি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার রাতে জাগরিত থেকে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগীতে মশগুল থাকবে, তাহলে তার দিল কেয়ামতের দিন মরবে না। কেয়ামতের আতঙ্কের কারণে অন্যান্য লোকের অন্তর ঘাবড়ে গিয়ে মৃতপ্রায় হয়ে যাবে। কিন্তু দুই ঈদের রাতে ইবাদতকারীর অন্তর তখন ঠিক থাকবে, ঘাবড়াবে না।

কোরআনে বলা হয়েছে : ‘কিয়ামতের ভয়াবহতা এমন হবে যে, যদি কোন মহিলার গর্ভ থাকে, তাহলে তার গর্ভপাত হয়ে যাবে, মানুষকে দেখাবে সবাই যেন মাতাল অবস্থায় আছে, বেহুঁশ অবস্থায় আছে। কিন্তু আসলে তারা মাতাল নয়। হয়রানি, পেরেশানী, ভয়াবহতা, বিভীষিকার এমন অবস্থা হবে যে, সকলকে তখন অস্বাভাবিক মনে হবে।’

ঈদের রাত খুশির রাত, আনন্দের রাত। ৩০টি রোজা রাখার পর ঈদ উদযাপন হবে এই খুশিতে মন আনন্দিত থাকে। এ সময়ে যদি আমরা আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করি, তাহলে আল্লাহ পাক সবচেয়ে বেশি পেরেশানির দিন অর্থাৎ কেয়ামতের দিন আমাদের পেরেশানী থেকে মুক্ত রাখবেন এবং আনন্দিত রাখবেন।

অন্য এক হাদীছে আসছে, এ রাতে আমলের মাধ্যমে বান্দা জান্নাত লাভ করতে পারেন। হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) হতে বর্ণিত- নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি পাঁচটি রাত ইবাদতের মাধ্যমে অতিবাহিত করে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। ৮ জিলহজের রাত, আরাফাতের রাত, ঈদুল আজহার রাত, ঈদুল ফিতরের রাত এবং ১৫ শাবানের রাত।’ (তারগিব ও তারহিব) 

হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত- রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের আশায় দুই ঈদের রাতে জাগরণ (ইবাদত-বন্দেগি) করবে; তার কলব ওই (কিয়ামতের) দিনেও মরবে না, যে দিন (ভয়ঙ্কর ও বিভীষিকাময় পরিস্থিতির কারণে) মানুষের অন্তরসমূহ মারা যাবে।’ (ইবনে মাযাহ)

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত- নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘পাঁচটি রাতের দোয়া কখনও ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। রাতগুলো হলো- জুমার রাত, রজব মাসের প্রথম রাত, শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাত, ঈদুল ফিতরের রাত ও ঈদুল আজহার রাত।’ 

এ ছাড়াও আরও অসংখ্য হাদিস দ্বারা ঈদের রাতের ফজিলত ও তাৎপর্য অকাট্যভাবে প্রমাণিত। সঙ্গত কারণেই মুমিনের জীবনে ঈদের রাতের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য হলো, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা তথা উভয় ঈদের রাতে জাগ্রত থেকে নফল নামাজ, জিকির, তেলাওয়াত ও দোয়ার মাধ্যমে মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি, সান্নিধ্য ও মাগফিরাত কামনা করা। 

তাই ঈদের রাতে আমরা ইবাদত করবো এই নিয়তে- যেন আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের ময়দানের ভয়াবহতা থেকে আমাদের মুক্তি দেন, জান্নাতবাসী করেন।

এএইচ/