ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

করোনা চিকিৎসায় আশার আলো ইন্টারলিউকিন-৭

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪৫ এএম, ২৪ মে ২০২০ রবিবার

ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসের নতুন একটি চিকিৎসা পদ্ধতির ওপর পরীক্ষা শুরু করছেন। করোনায় গুরুতরভাবে যারা আক্রান্ত হয়, তাদের শরীরে টি-সেল নামে রোগ প্রতিরোধী একটি কোষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। তাই নতুন আবিষ্কৃত ইন্টারলিউকিন-৭ নামের ওষুধটি ব্যবহার করলে টি-সেলের সংখ্যা বাড়াবে এবং রোগীকে দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করবে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। খবর বিবিসি’র

লন্ডনের বিজ্ঞানীরা করোনায় আক্রান্ত ৬০ জন রোগীর রক্তের টি-কোষ পরীক্ষা করে দেখেছেন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হবার পর তাদের টি-কোষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে গেছে।

কিংস কলেজের ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী অধ্যাপক এড্রিয়ান হেডে বলেছেন, কোভিড-১৯ আক্রমণে শরীরের টি-সেলের কী দশা হয় সেটা দেখে তারা ‘দারুণ অবাক’ হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘এই কোষগুলো আমাদেরকে রক্ষার চেষ্টা করে। কিন্তু এই ভাইরাস এমনভাবে তাদের আক্রমণ করছে, যাতে তাদের সব শক্তি কেড়ে নেয়া হচ্ছে। ফলে টি-কোষের সংখ্যা এমন নাটকীয়ভাবে কমে যাচ্ছে যাতে বেঁচে থাকাটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’

একজন সুস্থ মানুষের এক মাইক্রো লিটার (০.০০১ মিলিলিটার) রক্তবিন্দুতে দুই থেকে চার হাজার 'টি-কোষ' থাকে। এই কোষ বা টি-সেলের আরেকটা নাম হল 'টি লিম্ফোসাইট'। যেসব কোভিড রোগীর রক্ত বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করেছেন তাদের রক্তে সংক্রমণের পর টি-কোষের সংখ্যা নেমে গেছে ২০০ থেকে ১২০০তে।

গবেষকরা বলছেন, এই ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে তারা রক্তে টি-কোষের আচরণ ও মাত্রা সম্পর্কে একটা ধারণা গড়ে তুলতে পারবেন এবং তারা আশা করছেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে নতুন আবিষ্কৃত ইন্টারলিউকিন-৭ ওষুধ রোগীর শরীরে ব্যবহার করে প্রতিরোধী টি-কোষের সংখ্যার হ্রাস বন্ধ করতে পারবেন।

ইন্টারলিউকিন-৭ ওষুধ ইতোমধ্যেই পরীক্ষা করা হয়েছে সেপসিস রোগীদের ছোট একটি দলের ওপর। দেখা গেছে, ওষুধটি দেবার পর তাদের শরীরে নির্দিষ্ট এই কোষগুলো নিরাপদভাবে আবার তৈরি হচ্ছে।

লন্ডনের গাইস অ্যান্ড সেন্ট টমাস হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা বিষয়ক চিকিৎসক মনু শঙ্কর-হরি বলছেন, চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে যেসব রোগীর লিম্ফোসাইট বা টি-কোষের সংখ্যা খুব কমে গেছে এবং যারা তিনদিনের বেশি নিবিড় পরিচর্যা তত্ত্বাবধানে রয়েছে তাদের এই ওষুধ পরীক্ষামূলকভাবে দেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি এসব রোগীর ক্ষেত্রে কোষের সংখ্যা ওষুধ দিয়ে বাড়াতে পারলে তারা সংক্রমণ থেকে সেরে উঠবেন।’

এএইচ/