ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

তোরণ নির্মাণ নিয়ে এমপি ও মেয়র গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১০

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:২৬ পিএম, ২৪ মে ২০২০ রবিবার

সংঘর্ষের চিত্র -ছবি একুশে টিভি।

সংঘর্ষের চিত্র -ছবি একুশে টিভি।

পটুয়াখালীর বাউফলে তোরণ নির্মাণ নিয়ে এমপি ও মেয়র গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। রোববার (২৪ মে) দুপুরে পৌর সদরের জেলা পরিষদ ডাকবাংলোর সামনে ঘটে এ ঘটনা। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনে।

আহতদের মধ্যে তাপস (২৫) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) পাঠানো হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে পঙ্কজ (৩৫) নামে অপর একজনকে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে অন্যদেরকে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে ডাক বাংলোর সামনে করোনা সচেতনতার ব্যানার সম্বলিত একটি তোরণ নির্মাণ করা হচ্ছিল পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউল হক জুয়েলের পক্ষে। এ সময় জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির সভাপতি স্থানীয় এমপি আ. স. ম ফিরোজ গ্রুপের উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম ফারুকের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকর্মী তাতে বাধা দেয়। খবর পেয়ে মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল ঘটনাস্থলে আসলে ইব্রাহিম ফারুকের সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়। মারমুখি হয়ে পড়ে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা। দফায় দফায় চলে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া। 

গুরুতর আহত তাপস (২৫) ও পঙ্কজ (৩৫। ছবি একুশে টিভি

এদিকে, থানা কমপ্লেক্স ভবনের ওসির কক্ষে মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল ও ইব্রাহিম ফারুককে নিয়ে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা জাকির হোসেন ও বাউফল সার্কেলের সিনিয়র পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেনের মধ্যস্থতায় সমঝোতার চেষ্টাকালে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কালাইয়া ইউপির চেয়ারম্যান মো. ফয়সাল আহম্মেদ মনির হোসেন মোল্লার নেতৃত্বে কালাইয়া বন্দর এলাকা থেকে ২০-৩০ জন মোটরসাইকেলযোগে ডাকবাংলোর সামনে এসে জয়বাংলা শ্লোগান দিয়ে ভেঙ্গে দেয় তোরণের বাঁশের খুঁটি। এ সময় মেয়র গ্রুপের উত্তেজিত লোকজন তাদেরকে ধাওয়া করলে ডাকবাংলোর ভেতর আশ্রয় নেন তারা। এ সময়ই আহত হন এমপি আ. স. ম ফিরোজ গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মী তাপস ও পঙ্কজ।

পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এর আগে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় একই গ্রুপের নাজিরপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম (৩৪), ছাত্রলীগ কর্মী শামীম (২৫), পৌর যুবলীগ সভাপতি মামুন খান (৪৭) ও ইয়ার খান (৪৩) এবং মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল গ্রুপের যুবলীগ কর্মী ইব্রাহিম (৩৫) ও বাউফল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইউসুফ (২৫) আহত হন। 

এ বিষয়ে পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউল হক জুয়েল বলেন, ‘শহরের পরিবেশ অশান্ত করতেই ইব্রাহিম ফারুকের নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সম্ববলিত করোনা সতার্কতায় তোরণ নির্মাণকালে বাধা দেয় ও তোরণের মালামাল ভাংচুর করে।

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নাজিরপুরের ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম ফারুককে মোবাইল ফোনে কয়েকবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে তিনি স্থানীয় অপর এক সাংবাদিককে বলেন, ‘পুরাতন তোরণ ভেঙ্গে যাওয়ায় এটা অপসরণ করে ডাকবাংলোর সামনে সেতুর মুখে করোনা সতর্কীকরণে সরকারের নির্দেশনা সম্বলিত তোরণ আমরাই নির্মাণ করব। প্রতিবার পৌর মেয়রের তোরণ থানার পশ্চিম পাশে করে আসছে। কিন্তু কেন, কি কারণে তোরণ করা হচ্ছে তা জিজ্ঞাসা করতেই মেয়রের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। এতে আমাদের প্রায় ১০-১৫ জন আহত হয়।’

বাউফল সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘পৌর মেয়র ও চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুককে নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে দু’পক্ষ তোরণ করবে, তবে দূরত্ব করে। এরই মধ্যে ফের দু’পক্ষের সংঘর্ষের খবরে লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

এনএস/