রংপুর-দিনাজপুরে বিষাক্ত মদপানে ১৬ জনের মৃত্যু
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:৫৮ পিএম, ২৭ মে ২০২০ বুধবার | আপডেট: ০৪:৫৭ পিএম, ২৭ মে ২০২০ বুধবার
উত্তরের দুই বৃহত্তর জেলা রংপুর ও দিনাজপুরে বিষাক্ত মদপানে আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত বিগত ৪৮ ঘণ্টায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রংপুরে ১০ ও দিনাজপুরে ৬ জন।
পুলিশ ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ জানান, সোমবার, মঙ্গলবার এবং আজ বুধবার রংপুরের সদর ও পীরগঞ্জে এবং দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিষাক্ত মদ এবং রেকটিফাইড স্পিরিট পান করার ফলে তাদের মৃত্যু হয়।
রংপুর প্রতিনিধির পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, ‘ঈদ উদযাপন করতে গিয়ে মঙ্গলবার (২৬ মে) সকালে জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার উপজেলার শানেরহাট বাজারে বিষাক্ত মদপানে ৭ জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হন আরও ১০ জন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদেরকে রংপুর মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নিহত এই সাতজন হলেন- রংপুরের ওই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৪৫), জাহিদুল হক (৩৫), সেলিম মিয়া (৫০), দুলা মিয়া (৫৫), সিরাজুল ইসলাম (৩৫) ও নওশাদ মিয়া (৫৫)। অপরজন মিঠাপুকুর উপজেলার চন্দন কুমার (৩০)।
এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই রংপুর সদর উপজেলার সদর কোতয়ালী থানাধীন চন্দনপাট ইউনিয়নের শ্যামপুরে মদপানে আরও ৩ জনের মৃত্যু ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার ও আজ বুধবার বিষাক্ত মদ এবং রেকটিফাইড স্পিরিট পান করায় নুর ইসলাম (৩০), সরোয়ার হোসেন (৩১) ও মোস্তফা কামাল (৩০) নামে তিননের মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে রংপুরের পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, ‘বেআইনীভাবে বিষাক্ত মদ ও রেকটিফাইড স্পিরিট ব্যবসায়ের সাথে জড়িত এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এসবের উৎসস্থল খুঁজে পেতে ঘটনার জোরদার তদন্ত চলছে।’
হিলি প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরের বিরামপুরের চোলাইমদ পানে স্বামী-স্ত্রীসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও তিনজন। তাদের অবস্থাও আশংকাজনক। আজ বুধবার ভোররাতে বিরামপুর উপজেলার মাহমুদপুরে এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আব্দুল মান্নান নামের এক হোমিও ওষুধ ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃতরা হলেন, বিরামপুর পৌর শহরের হঠাৎপাড়া মহল্লার শফিকুল ইসলাম (৪০) ও তার স্ত্রী মঞ্জুয়ারা বেগম (৩২), শান্তিনগর গ্রামের আনো মন্ডলের ছেলে আব্দুল মতিন (২৭), মাহমুদপুর গ্রামের সুলতান আলীর ছেলে মহসিন আলী (৩৮), একই গ্রামের তোজাম আলীর ছেলে আজিজুল ইসলাম (৩৩), ইসলামপাড়া গ্রামের তাপস রায়ের ছেলে অমৃত রায় (৩০)।
স্থানীয়রা জানান, ‘বিরামপুর উপজেলার মাহমুদপুরে মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত চোলাই মদের আসরে বসেছিল তারা। সেখানেই চোলাই মদ খেয়ে অনেকেই গুরুতর অসুস্থ পয়ে পড়েন। স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে একজনের মৃত্যু হয়। দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর আরও একজনের মৃত্য হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে নিয়ে যাওয়ার পথে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়। এদিকে পৌর শহরের হঠাৎ পাড়া মহল্লায় নিজ বাড়িতে চোলাই মদ খেয়ে অসুস্থ হয়ে বিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মারা যান শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মঞ্জুয়ারা।
বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সোলাইমান হোসেন মেহেদি জানান, ‘মারা যাওয়া ব্যক্তিরা অ্যালকোহল জাতীয় কোন পানীয় পান করে অসুস্থ হবার পর তাদের মৃত্যু হয়।’
এআই/এনএস