ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

ভারতে চার রাজ্যেই আক্রান্ত লক্ষাধিক, মৃত্যু সাড়ে ৪ হাজার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:১৩ পিএম, ২৮ মে ২০২০ বৃহস্পতিবার

ভারতে আশঙ্কাজনকহারে বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ। আক্রান্তের সংখ্যা বুধবার দেড় লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। যার সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী চার রাজ্য। যেখানে করোনার শিকার লক্ষাধিক মানুষ। 

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬ হাজার ৫৬৬ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এতে করে আক্রান্ত বেড়ে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৩৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থার মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি ও গুজরাটে। দেশটিতে গত সাতদিনে গড়ে ছ’হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। 

অপরদিকে, একইসময়ে প্রাণ গেছে আরও ১৯৪ জনের। এই নিয়ে ভারতে ৪ হাজার ৫৩১ জনের প্রাণ কাড়ল করোনা। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৮৯৭ জনের। ৯৩৮ জন মারা গিয়েছেন গুজরাটে। মধ্যপ্রদেশে মৃতের সংখ্যা ৩১৩, দিল্লিতে ৩০৩, পশ্চিমবঙ্গে ২৮৯। শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে উত্তরপ্রদেশ (১৮২), রাজস্থান (১৭৩), ও তামিলনাড়ু (১৩৩)।

ভারতে প্রথম করোনার সন্ধান মিলেছিল কেরলে। যদিও তারপর সেখানে সংক্রমণের হার বেশ কমে গিয়েছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১ জন আক্রান্ত হওয়ায় কেরলে সংক্রমণের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪ জনে। দেশটির করোনাক্রান্তের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি মহারাষ্ট্রে। সে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৭ হাজার ছুঁই ছুঁই। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন দু’হাজার ১৯০ জন। এ নিয়ে সেখানে আক্রান্ত বেড়ে ৫৬ হাজার ৯৪৮ জনে পৌঁছেছে।

আক্রান্তের হিসাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তামিলনাড়ু। রাজ্যটিতে করোনার শিকার ১৮ হাজার ৫৪৫ জন। এরপরেই রাজধানী দিল্লি। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ২৫৭ জন। গুজরাটে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ১৯৫ জনে ঠেকেছে। 

এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে রাজস্থান (৭ হাজার ৭০৩), মধ্যপ্রদেশ (৭ হাজার ২৬১), উত্তরপ্রদেশ (৬ হাজার ৯৯১), পশ্চিমবঙ্গ (৪ হাজার ১৯২), অন্ধ্রপ্রদেশ (৩ হাজার ১৭১), বিহার (৩ হাজার ৬১), কর্নাটক (২ হাজার ৪১৮), পঞ্জাব (২ হাজার ১৩৯), তেলঙ্গানা (২ হাজার ৯৮), জম্মু-কাশ্মীর (১ হাজার ৯২১), ওড়িশা (১ হাজার ৫৯৩) ও হরিয়ানা (১ হাজার ৩৮১)।

পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ১৯২ জন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেবে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে  আক্রান্ত হয়েছেন ১৮৩ জন। রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৮৯ জনের। যদিও রাজ্য সরকারের হিসেবে, করোনার জেরে মৃতের সংখ্যা ২১৯। বাকি ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে কোমর্বিডিটির কারণে।

এদিকে, আগামী ৩১ মে শেষ হতে চলেছে লকডাউন চতুর্থ। এর আগে গত ৬৪ দিনের লকডাউনের একটি সম্পূর্ণ পর্যালোচনায় ব্যস্ত প্রধানমন্ত্রীর দফতর। স্বরাষ্ট্র ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১ জুন থেকে যে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সেগুলোতে প্রাধান্য দেয়া হবে বলে জানা গেছে। 

দেশটির কেন্দ্রিয় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, গত বেশ কয়েকদিন ধরে এখানে টানা পর্যালোচনা চলছে। তবে শেষ পর্যন্ত এটা একটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হতে চলেছে যে, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন চালিয়ে যাওয়া হবে নাকি রাজ্যগুলোকে চূড়ান্ত করতে হবে ১ জুন থেকে তারা কিভাবে এগিয়ে যেতে চায়।

ওই কর্মকর্তার মতে, ‘সিদ্ধান্তটি নেওয়া হবে রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে পিএমওর প্রাপ্ত তথ্য এবং প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে। এছাড়াও কেন্দ্র পৃথকভাবে যে তথ্য পেয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

গত ১২ দিনের তথ্য দেখে চিহ্নিত করছে কেন্দ্রিয় সরকার। কেননা এই ক’দিনে আক্রান্ত ও কোয়ারান্টাইন-উভয় ক্ষেত্রেই সংখ্যাটা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্র এটাও বুঝতে পারছে যে, লকডাউন চিরকালের জন্য চালু রাখা সম্ভব নয়।

আর একটা বিষয়েও উদ্বিগ্ন কেন্দ্রিয় সরকার। কোভিড-১৯ মোকাবিলা তাদের কাছে আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। কারণ বহু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা কেবল সমালোচনা করছেন। পাশাপাশি তাদের চাপে কেন্দ্রকে কয়েকবার তাদের অবস্থান বদলাতে হয়েছে। বহুবার প্রকাশ্যে কেন্দ্রিয় নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে রাজ্যগুলো।

এআই//