ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও উড়িয়ে দিল দুরন্ত ঝড়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৪৪ পিএম, ২৯ মে ২০২০ শুক্রবার

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে আকস্মিক ঘূর্ণিঝড় গাছে তুলে দিয়েছে একটি বসতঘর। ঝড়ের তাণ্ডবে ঘরটি দুমড়ে মুচড়ে একাকার হয়েছে। ঘর চাপা পড়ে বিধবা শিখা রানী (৫২) ও তার ছেলে বিশ্বজিত বিশ্বাস (২৩) ও নয়ন বিশ্বাস (১৫) আহত হয়েছেন। শিখা রানীর সম্পত্তি বলতে আছে ৬ শতক জমি। ওই জমিতেই ছিল মাথা গোঁজার ঠাঁই টিন-কাঠের একখানা ঘর।

গত বুধবার (২৭ মে) রাত ৯টার দিকে ডুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দাএই শিখা রানীর ঘরখানা তছনছ হয়ে যায় ঝড়ের আঘাতে। আংশিক উড়ে বেধে যায় গাছের ডগায়। 

শিখা রানীর বড় ছেলে বিশ্বজিত খুলনা বিএল কলেজে উচ্চতর গণিত নিয়ে এমএসসি পড়ছেন। ছোট ছেলে নয়ন বিশ্বাস স্থানীয় হাজী রাজা উল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণির ছাত্র। ঘরে থাকা দু-চার দিনের চাল, দুই ভাইয়ের বইপত্র সবই মাটিতে মিশে গেছে ঝড়ে।  

শিখা রানী বলেন, ‘সন্তানদের ঠিক রাখতে আমি লুকিয়ে কাঁদি। ঘরে খাবার নেই। কোন আয় নেই। বড় ছেলে প্রাইভেট পড়াতো তাও বন্ধ। ছোট ছেলেকে মেয়ের বাড়ি পাঠিয়েছি। প্রতিবেশীরা আমাদেরকে ডেকে খাওয়ায়। রাস্তায় কাজ করে ও ছেলের প্রাইভেটের টাকা জমিয়ে ঘর তুলেছিলাম। ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়ে সে ঘর এখন বোঝায় পরিণত হয়েছে।’

হতদরিদ্র শিখা রানী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (আরএমপি) একজন সড়ক শ্রমিক। বড় ছেলেকে নিয়ে এখন তিনি আছেন প্রতিবেশী নগেন পাইক-এর আশ্রয়ে। এমএসসির ছাত্র বিশ্বজিত বলেন, প্রাইভেট পড়িয়ে কিছু আয় হতো। করোনার কারণে এখন তা-ও বন্ধ। এলাকায় দিনমজুরী করারও কোন কাজ পাচ্ছিনা। 

ঝড়ে বিধ্বস্ত হতদরিদ্র এ পরিবারটি সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, শিখা রানীর দুর্দশার কথা কেউ জানায় নি। এখন জানলাম। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এনএস/