বাউফলে খেঁকশিয়ালের শাবক উদ্ধার
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৪২ পিএম, ৩০ মে ২০২০ শনিবার
পটুয়াখালীর বাউফলের ধানদী গ্রামের জালাল মৃধা বাড়ির পাশের একটি পরিত্যাক্ত ভিটা থেকে খেঁকশিয়ালের এক শাবক উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় সাঈদুল ইসলাম জানান, সুপার সাইক্লোন আম্ফানের দিন থেকে কমবেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছিল প্রায় প্রতিদিন। এছাড়া শুক্রবার রাত থেকে আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত ভারি বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে রিয়াদুল, সিয়াম, নায়িম, আব্দুল্লাহ, মাহিনসহ স্থানীয় কয়েক শিশু-কিশোর খেঁকশিয়ালের শাবকটি ধরে ফেলে। এরপর বাড়ির পাশের রাস্তায় নিয়ে এলে স্থানীয় আরো উৎসুক শিশু-কিশোর ভিড় করে দেখতে।
এ সময় অবুঝ শিশুদের কৌতুহল আর গলায় রশি পড়িয়ে খেলার সামগ্রি হয়ে শাবকটি আরো দুর্বল হয়ে পড়ছিল। খবর পেয়ে প্রাণ-প্রকৃতি-প্রতিবেশ রক্ষা বিষয়ক স্থানীয় ‘সেভ দি বার্ড এ্যান্ড বি'নামে পরিবেশ আন্দোলনের কয়েকজন খেঁকশিয়ালের শাবকটি উদ্ধার করে সাধ্যমতো শুশ্রূষা দিয়ে ওই এলাকারই রাস্তার পাশের বাগানে অবমুক্ত করেন।
‘সেভ দি বার্ড এ্যান্ড বি' পরিবেশ আন্দোলনের পরিচালক মন্ডলীর একজন প্রবাসী কামরুজ্জামান শিমুল জানান, মহামারি করোনা কালে মানুষের ঘরবন্দি দশায় উপকুলীয় প্রাণ-বৈচিত্রে পরিবর্তণের ভিন্ন সারা মিলেছে। শব্দ,বায়ূ ও পানি দুষণসহ বিভিন্ন ধরণের রেডিয়েশন কমে এই পরিবর্তন জলে-স্থলে সর্বত্র।
এ সময় বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনে উপকুলীয় অঞ্চলে বিরুপ প্রভাবের শিক্ষা নেওয়া উচিত। মাত্র ক’দিন আগে উপকুলীয় টেংরাগিরি বনভূমি বুক চিতিয়ে দিয়ে সুপার সাইক্লোন আম্পানের গতিরোধ করে আমাদের উপকূল বাঁচায়। কিন্তু মানুষ নির্বিচারে গ্রামাঞ্চলের পারিবারিক বাগানসহ এসব বনভূমি উজাড় করে বন্যপ্রাণীসহ প্রাণ-বৈচিত্র ধ্বংস করে চলছে। বাদ-বিচার না করে প্রাণীকুলের ওপর হামলে পড়ছে। একই সঙ্গে প্রাণীকুলও হচ্ছে বিপর্যস্ত। প্রাণীকুলের বিরুপ প্রতিক্রিয়ায় কখনো আবার সমুখিন হচ্ছে বসন্ত, প্লেগ, কলেরা, করোনারমতো ভয়াবহ মহামারির।
এ ব্যাপারে কালিশুরী ডিগ্রি কলেজের জীব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক তাসলিমা বেগম জানান, জলবায়ূ পরিবর্তণের বিরুপ প্রতিক্রিয়ায় আমাদের উপকুলীয় চরাঞ্চলে বিভিন্ন ধরণের প্রাণী হুমকীর মুখে রয়েছে। তবে করোনা কালে লকডাউনে মানুষের বন্দি দশায় পাখ-পাখালি ও বন্যপ্রাণীদের খাদ্যাভ্যাস, চলাচল, প্রজননসহ জীবন আচরণে পরিবর্তণ লক্ষ্য করা গেছে। হয়েছে। তেঁতুলিয়ার পানিতে শুশুকের ভেসে ওঠা, পাখ-পাখালির যত্রতত্র বাস তৈরী, দিনের আলোয় খেঁকশিয়ালের ঘোরাঘুরির মতো স্বাচ্ছন্দ জীবন-আচরণ স্পস্ট হয়েছে। মহামারির এ সময় থেকে শিক্ষা নিয়ে খেঁকশিয়ালের মতো সব বন্যপ্রাণীদের প্রতি সকলের সহানুভূতি থাকা উচিত।’
কেআই/