ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

আজ থেকে চলবে ট্রেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:২৫ এএম, ৩১ মে ২০২০ রবিবার

আজ থেকে চলাচল করবে আন্তঃনগর ট্রেন। প্রথম দিনে চলবে আটটি ট্রেন। স্বাস্থ্যবিধি মানতে ফাঁকা রাখা হবে অর্ধেক আসন। স্টেশনে ভিড় এড়াতে সব টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে।

গত ৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর পরিস্থিতির ক্রমাবণতি ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে দফায় দফায় বাড়ানো হয় ছুটি। করোনার বিস্তার রোধে গত ২৫ মার্চ থেকে বাস, লঞ্চ, ট্রেনসহ সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। আজ রবিবার থেকে ট্রেন ও লঞ্চ চালু হচ্ছে। পরদিন থেকে চলবে বাস। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কারিগরি কমিটি গণপরিবহন ও ট্রেনে যাত্রী পরিবহনে ১৪ শর্ত দিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছিল। তা সমন্বয় করে ১১ শর্তে বাস চালানোর অনুমতি দিয়েছে বিআরটিএ। আর স্বাস্থ্যবিধি মানতে অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখা হবে ট্রেনে। স্টেশনে ভিড় এড়াতে সব টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে। কাউন্টার থেকে টিকিট দেওয়া হবে না।

এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তিনি জানিয়েছেন, রবিবার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের ‘সুবর্ণ এক্সপ্রেস’ এবং ‘সোনার বাংলা এক্সপ্রেস’, ঢাকা-সিলেট রুটের ‘কালনী এক্সপ্রেস’, ঢাকা-পঞ্চগড় রুটের ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’, ঢাকা-রাজশাহী রুটের ‘বনলতা এক্সপ্রেস’, ঢাকা-লালমনিরহাট রুটের ‘লালমনি এক্সপ্রেস’, ঢাকা-সিলেট রুটের ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ এবং ঢাকা-খুলনা ‘চিত্রা এক্সপ্রেস’ চলবে।

রবিবার এই ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী, ‘বেস স্টেশন’ থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবে। ভিড় এড়াতে এখন থেকে বিমানবন্দর ও জয়দেবপুর স্টেশনে কোনো ট্রেন যাত্রাবিরতি করবে না। ঢাকার যাত্রীদের কমলাপুর স্টেশন থেকে ওঠানামা করতে হবে। টিকিট ছাড়া কোনো যাত্রী স্টেশনে প্রবেশ করতে পারবেন না।

আগামী ৩ জুন থেকে আরও ১১টি আন্তঃনগর ট্রেন চালু হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। এগুলো হলো, ঢাকা-ময়মনসিংহ-দেওয়ানগঞ্জ রুটের ‘তিস্তা এক্সপ্রেস’, ‘ঢাকা-বেনাপোল রুটের ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’, ঢাকা-চিলাহাটি রুটের ‘নীলসাগর এক্সপ্রেস’, খুলনা-চিলাহাটি রুটের ‘রূপসা এক্সপ্রেস’, রাজশাহী-খুলনা রুটের ‘কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস’, রাজশাহী-গোয়ালন্দ রুটের ‘মধুমতি এক্সপ্রেস’, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটের ‘মেঘনা এক্সপ্রেস’, ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটের ‘কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস’, ঢাকা-নোয়াখালী রুটের ‘উপকূল এক্সপ্রেস’, ঢাকা-ময়মনসিংহ-জামালপুর রুটের ‘ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস’ এবং ঢাকা-কুড়িগ্রাম রুটের ‘কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস’।

অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখার শর্ত পালনে বাস মালিকরা ভাড়া বাড়ালেও ট্রেনে ভাড়া বাড়বে না বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। তবে কিছু সুযোগ সুবিধা কমবে। নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ট্রেনে খাবার সুবিধা থাকবে না।

সেই সঙ্গে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় বালিশ কম্বল দেওয়া হবে না।

নুরুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন ১০০টি আন্তঃনগর ট্রেন চলে। সীমিত পরিসরে সেবা চালু করায় ১৫ জুন পর্যন্ত মাত্র ১৯টি ট্রেন চলবে। করোনা পরিস্থিতি দেখে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে ট্রেনের সংখ্যা বাড়াবে না কমবে।

অর্ধেক আসন খালি রাখার নির্দেশনা আদৌ মানা সম্ভব কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ ট্রেনে কর্তব্যরত কর্মচারীরা অবৈধভাবে যাত্রী তোলেন। এর জবাবে রেলমন্ত্রী বলেছেন, অবৈধভাবে লোক তুললে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অনলাইনে শতভাগ টিকিট ছাড়ার কারণে যাদের ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নেই, দরিদ্র, অশিক্ষিত টিকিট পাবেন না বলে মনে করা হচ্ছে। এর জবাবে রেলের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্টেশনে ভিড় এড়াতেই এ ব্যবস্থা। সব টিকিট অনলাইনে দেওয়ায় ঈদের মতো চাপ হতে পারে। এতে টিকিট কাটতে কিছুটা ভোগান্তি হতে পারে বলেও স্বীকার করেন মহাপরিচালক।
এসএ/