করোনা আক্রান্ত রোগীকে প্লাজমা দিলেন করোনা জয়ী চিকিৎসক
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:০৫ পিএম, ৩১ মে ২০২০ রবিবার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের চিকিৎসক ইনজামামুল হক সিয়াম চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বয়সে তরুণ এই চিকিৎসক মাত্র সাতদিনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসকে জয় করে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। এবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মধ্যপাড়ার এক বৃদ্ধকে নিজের প্লাজমা দিয়েছেন তিনি।
গত শনিবার রাতে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউটে ৬৫ বছরের ওই বৃদ্ধের জন্য তিনি প্লাজমা দেন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পৌর এলাকার মধ্যপাড়ার ওই বৃদ্ধ তিনদিন ধরে ঢাকার গ্রীণলাইফ হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছেন। তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন বলে জানিয়েছেন তার পরিবারের লোকজন।
ওই বৃদ্ধের বড় ছেলে জানান, তার বাবা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের সুপার মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী। করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয়ায় গত ২৬ মে পারিবারের সবাই কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। পরীক্ষায় পাঁচ সদস্যের পরিবারের সবার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সবার শুধুমাত্র জ্বর থাকলেও তার বাবার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। পরবর্তীতে তাকে ঢাকায় নেয়া হয়। শ্বাসকষ্ট তীব্র হওয়ায় গ্রীনলাইফ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয় তার বাবাকে।
তিনি বলেন,অনেকেই প্লাজমা থেরাপির মাধ্যমে সুস্থ হয়েছেন বলে শুনেছি। বাবার অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় প্লাজমা দেয়ার কথা চিন্তা করি। সেজন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে যোগাযোগ করে বলি একজন প্লাজমা ডোনারের ব্যবস্থা করে দিতে। গত শুক্রবার সকালে সিভিল সার্জন অফিস থেকে ডাঃ সিয়ামের কথা বলা হয় আমাকে। এরপর তার সাথে যোগাযোগ করলে দুপুরেই তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকায় চলে আসেন প্লাজমা দিতে। তার কাছ থেকে ৫০ মিলি প্লাজমা নেয়া হয়েছে। রাতেই বাবাকে এই প্লাজমা দেয়া হয়েছে।
ডা. ইনজামামুল হক সিয়াম বলেন, গত ৩০ এপ্রিল কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য আমার নমুনা দিয়েছিলাম। রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর আমি নিজ বাসায় আইসোলেশনে ছিলাম। পরবর্তীতে ৭ মে আমার পরবর্তী রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
তিনি বলেন, আমার প্লাজমা দিয়ে যদি একজন আক্রান্ত রোগী সুস্থ হন তাহলে সেটি স্বার্থকতা। সেজন্য আমি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বৃদ্ধকে প্লাজমা দিয়েছি। জীবন বাঁচানোর মালিক মহান সৃষ্টিকর্তা। আমি শুধু নিজের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি।
কেআই/