ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর জন্মদিন আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩৬ এএম, ১ জুন ২০২০ সোমবার

জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর জন্মদিন আজ। ১৯৭৪ সালের ১ জুন তিনি জন্মগ্রহণ করেন। একুশে টেলিভিশনের পক্ষ থেকে প্রিয় তারকার জন্মদিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

চঞ্চল চৌধুরী মঞ্চ, টেলিভিশন, বড় পর্দা সব মাধ্যমেই নিজের অভিনয় দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, চঞ্চল তার কণ্ঠে গান তুলেও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন।

পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার কামারহাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন চঞ্চল। সেখানেই বেড়ে উঠেন তিনি। রাজবাড়ি সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলায় ভর্তি হন। ছোটবেলা থেকেই তার গানবাজনা, আবৃত্তি আর নাটকের প্রতি টান ছিল। পরে মঞ্চনাটকের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়।

১৯৯৬ সালে মামুনুর রশীদের আরণ্যক নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত হন চঞ্চল। এর মাধ্যমে অভিনয় জীবনের শুরু। তার অভিনীত প্রথম মঞ্চনাটক আরণ্যক নাট্যদলের ‘কালো দৈত্য’। পরবর্তীতে এই নাট্যদলের ‘সংক্রান্তি’, ‘রাঢ়াঙ’, ‘শত্রুগণ’সহ অনেক নাটকে কাজ করেন।

২০০০ সালে ফরিদুর রহমান পরিচালিত ‘গ্রাস’ নাটকের মাধ্যমে টেলিভিশন নাটকে পা রাখেন তিনি। অল্প সময়ের মধ্যে দক্ষ অভিনেতা হিসেবে সুনাম কুড়ান তিনি। মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর ‘তাল পাতার সেপাই’ নাটক দিয়ে দর্শকের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন চঞ্চল।

২০০৬ সালে তৌকির আহমেদ পরিচালিত ‘রূপকথার গল্প’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে চঞ্চলের। ২০০৯ সালে গিয়াস উদ্দিন সেলিম পরিচালিত ‘মনপুরা’ সিনেমায় সোনাই চরিত্রে অভিনয় করেন। এই সিনেমায় অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। পরের বছর গৌতম ঘোষ পরিচালিত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার ‘মনের মানুষ’ সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান তিনি। ২০১৬ সালে ‘আয়নাবাজি’ সিনেমায় শাফায়েত করিম আয়না চরিত্রে অভিনয়ে করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘরে তোলেন চঞ্চল। এ অভিনেতার অন্যতম সিনেমাগুলোর মধ্যে ‘টেলিভিশন’ ও ‘দেবী’ অন্যতম। হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘দেবী’তে অভিনয় করে বেশ সুনাম অর্জন করেন তিনি। এতে মিসির আলি চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল।

তবে সিনেমার পাশাপাশি ছোটপর্দায় দারুণ জনপ্রিয় তিনি। অসংখ্য জনপ্রিয় নাটকে অভিনয় করে চঞ্চল নিজের দখলে নিয়েছেন একটি বিশেষ শ্রেণীর দর্শককে। যারা প্রতিনিয়ত অভিনেতার নতুন নতুন নাটকের অপেক্ষায় থাকেন।

এদিকে জন্মদিনে চঞ্চল চৌধুরীকে তার ভক্ত ও বন্ধুমহল শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।

শুভেচ্ছা জানিয়েছেন চঞ্চল চৌধুরীর কাছের বন্ধু অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি। তিনি তার নিজের ফেসবুকে কিছু ছবি প্রকাশ করে বন্ধু চঞ্চলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

সেখানে অভিনেত্রী লিখেছেন- ‘শুভ জন্মদিন, প্রিয় বন্ধু/প্রিয় শত্রু আমার।
তোর মনে আছে, কতদিন আগে থেকে তোর জন্মদিনের প্রথম প্রহর আমার বাসায়/আমাদের সাথে হয়! অনেক অনেক বছর ধরে আমি, আমার পুরো পরিবার, তোর জন্মদিনের নানান সারপ্রাইজ দেই। আমার শুটিং থাকলে বাচ্চারা গুছিয়ে রাখে। আমি কত আগে থেকে সেসব কিনে রাখি! আর আজ! কি কঠিন অনিশ্চিত এক সময়! আমাদের সব নিয়ম/আনন্দ/উৎসব রুদ্ধ হয়ে গেছে। শ্বাস বন্ধ করে কেবল সংখ্যা কুড়ায়!

সেই কবে থেকে আমাদের সকাল, দুপুর, সন্ধ্যে, রাত, খাওয়া, ঘুম, উৎসব, প্রেম, ঝগড়া সব যখন তুই দখল করতে থাকলি, তখন নিজের অপরাধ বোধ থেকেই বলতি, বন্ধু, আমি শুধু তোদের নেই, দিতে পারি না। কিছুই করতে পারিনা। রোজ বলতে বলতে, একদিন তুই সে সুযোগ পেয়ে গেলি। ২০১০ এর নভেম্বরের এক রাতে হঠাৎ করে একটা ফোন। ফোনটা রিসিভ করি, ওপাশ থেকে যা শুনতে পাই, তা নেবার মত শক্তি ছিল না আমার! আমি ফোন ছুঁড়ে ফেলে কি কি করেছি এখন মনে করতে পারিনা। সে ছিল আমার পিতৃ বিয়োগের ফোন। রাত সাড়ে ১০টা, পরের দিন জ্বালাও পোড়াও পেট্রোল বোমার হরতাল। উত্তরবঙ্গে যাওয়া, উচিত হবে কি হবে না সে নিয়ে নানা তর্ক চলতে লাগলো! সে আলাপ তুই একাই দৃঢ় কন্ঠে বন্ধ করে বলে দিলি, আমরা যাচ্ছি দাদা, খুশী ওর বাবাকে শেষ দেখা দেখবে না, তাই কি হয়! ঢাকা থেকে বের হতেই ঘুটঘুটে অন্ধকার আর কুয়াশায় পথ ঢাকা। পথ হারিয়ে সেই শীতের রাতে অন্য রাস্তায় ৪ কিঃ মিঃ চলে যেয়ে, আবার ফিরে, হরতালের ভয়, আর শোকের পাথর মাথায় করে বসে আমি/আমরা।সে দুঃসহতা ঢেলে তুই সেদিন পৌঁছে দিলি আমার প্রাণহীন বাবার কাছে। 

আমাদের বন্ধুত্ব, চায়ের পেয়ালা থেকে কবরের মাটি পর্যন্ত লম্বা। আমৃত্যু থাকুক সেটা। তোকে অনেকদিন বন্ধু ডাকবো বলে, আজ করোনা গায়ে মেখে ছুটে গেলাম না আমরা কেউ, তোর জন্মদিনের কেক হাতে। সামনের জন্মদিনে যদি বেঁচে থাকি, তো বৃন্দাজ আড্ডা হবে বন্ধু। শুভ জন্মদিন আবারও। মংগল ঘিরে থাকুক তোকে ...।’
এসএ/