ভারতে আক্রান্ত ২ লাখ ছুঁই ছুঁই, আরও ২শ ট্রেন চালু
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৫২ পিএম, ২ জুন ২০২০ মঙ্গলবার
দক্ষিণ এশিয়ায় করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত ভারতে প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। যেখানে ইতিমধ্যে জার্মানি ও ফ্রান্সকেও ছাপিয়ে গেছে দেশটি। প্রতিদিনের রেকর্ড সংক্রমণে যার সংখ্যা দুই লাখ ছুঁই ছুঁই। সর্বোচ্চ আক্রান্তের তালিকায় সাত নাম্বারে এখন মোদির দেশ।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আনন্দবাজা জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ১৭১ জন। এতে করে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৯৮ হাজার ৭০৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্তের নিরিখে রাজ্যগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি ও গুজরাট।
আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে দেশে। মোট মৃত্যুর নিরিখে চীন ও রাশিয়াকে আগেই টপকে গিয়েছিল ভারত। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার থাবায় দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২০৪ জনের। এ নিয়ে করোনায় ৫ হাজার ৫৯৮ ভারতীয়র প্রাণ কাড়ল করোনা।
এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে দু’হাজার ৩৬২ জনের। গুজরাটে এক হাজার ৬৩ জনের। এরপর রয়েছে রাজধানী দিল্লি। সেখানে মোট ৫২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৩৫৮), পশ্চিমবঙ্গ (৩২৫), উত্তরপ্রদেশ (২১৭), রাজস্থান (১৯৮), তামিলনাড়ু (১৮৪)।
দেশে আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি মহারাষ্ট্রে। সেখানে করোনার শিকার ৭০ হাজার ছাডড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দু’হাজার ৩৫৮ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। এ নিয়ে সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৭০ হাজার ১৩ জন। এর পরই তামিলনাড়ু। সেখানে মোট আক্রান্ত ২৩ হাজার ৪৯৫ জন। রাজধানী দিল্লিতে সংক্রমণ ছড়িয়েছে ২০ হাজার ৮৩৪ জনের দেহে। গুজরাটে আক্রান্ত ১৭ হাজার ২০০ জন।
এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে রাজস্থান (৮ হাজার ৯৮০), মধ্যপ্রদেশ (৮ হাজার ২৮৩), উত্তরপ্রদেশ (৮ হাজার ৭৫), পশ্চিমবঙ্গ (৫ হাজার ৭৭২), বিহার (৩ হাজার ৯২৬), অন্ধ্রপ্রদেশ (৩ হাজার ৭৮৩), কর্নাটক (৩ হাজার ৪০৮), তেলঙ্গানা (২ হাজার ৭৯২), জম্মু ও কাশ্মীর (২ হাজার ৬০১), হরিয়ানা (২ হাজার ৩৫৬), পঞ্জাব (২ হাজার ৩০১), ওড়িশা (২ হাজার ১০৪), আসাম (১ হাজার ৩৯০), হাজার (১ হাজার ৩২৬), উত্তরাখণ্ড (৯৫৮)।
এছাড়া, গত একদিনে পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭১ জন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে পাঁচ হাজার ৭৭২ জনে দাঁড়িয়েছে। এ রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ৩২৫ জনের। যদিও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হিসাব অনুসারে, সরাসরি করোনার কারণে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৫৩ জনের। ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে কোমর্বিটিডিতে। করোনার কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় আট জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে।
আক্রান্তের উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও, সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটাও কম না। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এটাই কিছুটা আশার আলো। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর এখনও অবধি ৯৫ হাজার ৫২৭ জন সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন তিন হাজার ৭০৮ জন।
এদিকে করোনা ভাইরাস রুখতে লাগাতার লকডাউন চালিয়ে যাওয়া থেকে এবার ধীরে ধীরে অন্য সমীকরণে হাঁটতে চায় কেন্দ্রিয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর তাই সোমবার থেকেই দেশে আরও ২০০টি ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে। এতে করে স্টেশনে স্টেশনে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
পরিসংখ্যান অনুসারে, ওই ২০০টি ট্রেনের সফর শুরুর প্রথম দিনেই যাত্রী সংখ্যা হল ১ লাখ ৪৫ হাজারেরও বেশি। ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হলেও এরিই মধ্যে ধীরে ধীরে শুরু হচ্ছে স্বাভাবিক জনজীবনের পথচলা।
ওদিকে গত মাস থেকেই কিছু বিশেষ যাত্রীবাহী ট্রেন চালাচ্ছে ভারতীয় রেল, এবার সেই বিশেষ ট্রেনের সংখ্যা আরও ১৫টি বাড়ানো হল। এর আগে রোববারই এক টুইট বার্তায় ভারতীয় রেল জানিয়েছে, প্রায় ২৬ লাখ যাত্রী চলতি মাসে রেল সফরের জন্যে টিকিট বুক করেছেন।
পাশাপাশি ট্রেনে ওঠা সমস্ত যাত্রীকে অবশ্যই নিজেদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং পুরো ট্রেন সফরেই মাস্ক পরে থাকতে হবে। সমস্ত যাত্রীদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
ট্রেনের ভিতরে কোনও বিছানা, কম্বল বা পর্দা রেলের তরফ থেকে সরবরাহ করা হবে না। যাত্রীদের যদি প্রয়োজন হয় তাহলে তারা নিজেরা সেসব বহন করতে পারেন। সেইসঙ্গে সমস্ত এসি কোচের অভ্যন্তরের তাপমাত্রাও যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে জানা গেছে।
এআই//